সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:০৮ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
গাজীপুরে দুর্বৃত্তদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন দৈনিক প্রতিদিন পত্রিকার সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৮)। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড শুধু সাংবাদিক সমাজ নয়, মুক্ত গণমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপরও এক ভয়াবহ আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ও হত্যাকারীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রবিবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার নীতিনির্ধারক পরিষদের সভাপতি মোঃ জামাল হোসেন এর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মোঃ আবুল বাসার মজুমদারের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার নির্বাহী পরিষদের মহাসচিব মোঃ আলমগীর গনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নীতিনির্ধারক পরিষদের সদস্য মুহাম্মদ মনজুর হোসেন, সহ-সভাপতি আলী আজগর ইমন, যুগ্ম-মহাসচিব লায়ন সিকদার মোহাম্মদ আরিফুল আলম টিটো, এম এ আকাশ, ছাব্বির আহমেদ সেন্টু, সহকারী মহাসচিব মোহাম্মদ নাজমুল হুদা, সরকার জামাল, প্রিয়াঙ্কা ইসলাম, সাংগঠনিক সচিব মোঃ রাসেল সরকার, আঃ ছবুর, অর্থ সচিব মোঃ সানবির হোসেন, দপ্তর সচিব মোঃ রাব্বি মোল্লা, প্রচার সচিব এ কে নান্নু খান, প্রশিক্ষণ সচিব শাহবুদ্দিন গোলদার, মহিলা বিষয়ক সচিব আমেনা আক্তার, রাবেয়া আক্তার সুইটি, আইন সচিব অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ ওয়াহিদুন্নবী বিপ্লব, জনকল্যাণ সচিব রাসেল ইসলাম জীবন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোঃ আতিকুল ইসলাম, লিটন মিয়া, মোঃ রাসেল মিয়া প্রমুখ।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় সভাপতি আনিছুর রহমান প্রধান, রাজশাহী বিভাগীয় সভাপতি নূরে ইসলাম মিলন, ঢাকা জেলার সভাপতি মহসিন উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাপ্পি আহমেদ শ্রাবণ, ঢাকা মহানগর সভাপতি মোঃ শাহআলম স্বপন, সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আলী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য আমিনুল ইসলাম, রোকসানা আক্তার মজুমদার, এরশাদউল্লা, জিএস মামুনসহ আরও অনেকে। সাংবাদিক সমাজের ব্যাপক অংশগ্রহণে কর্মসূচি সফল হয়।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, সময়ের সাহসী কলম যোদ্ধার জীবনাবসান ঘটল রক্তস্রোতে ভেসে। গত ৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার রাত ৮টার সময় গাজীপুরের চান্দিনা চৌরাস্তায় মসজিদ মার্কেটের সামনে দৈনিক প্রতিদিন এর সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে অস্ত্রধারী চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে। শতশত মানুষের সামনে রক্তাক্ত দেহ ফেলে রেখে বীরদর্পে চলে যায় খুনিরা।
কি নৃশংস হত্যাকাণ্ড! রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের এক কলম যোদ্ধা রাজপথে রক্তে রঞ্জিত হয়ে পড়ে থাকে। বক্তারা হুঁশিয়ারি দেন, যদি দ্রুত হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত না হয়, তবে তারা কঠোর আন্দোলনে নামবেন। এই মর্মান্তিক ঘটনায় পেশাদার সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। তাদের মতে, এ ধরনের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হলে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ আরও সংকটাপন্ন হয়ে পড়বে।
প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনে এই নৃশংস ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ খুনিদের পাশাপাশি তাদের পেছনে ইন্ধন দাতাদেরও দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
গাজীপুর মহানগরীর চন্দনা চৌরাস্তা এলাকায় সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যার ঘটনায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন—মো. মিজান ওরফে কেটু মিজান, তার স্ত্রী গোলাপি, আল আমিন, মো. স্বাধীন, শাহজালাল, ফয়সাল হাসান, মো. সুমন ও শহিদুল। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার রবিউল হাসান জানান, রাতেই পুলিশের তিনটি ইউনিট পৃথক পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। আসামিরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে এবং আদালতের মাধ্যমে তাদের দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পাওয়া যায়নি; আসামিরা পেশাদার অপরাধী।