ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে উপজেলা শিক্ষক ও কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড (কালব) অফিসের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী মাস্টার মোঃ খাইরুল ইসলাম জানান, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে তিনি কালব অফিস থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। ঋণ চুক্তির ৫ নম্বর শর্ত অনুযায়ী তিনি সোনালী ব্যাংক কোটচাঁদপুর শাখার নিজের নামে থাকা একটি চেক বইয়ের ১০টি পাতা বন্ধক রাখেন। পরবর্তীতে নয়টি চেক পাতা ব্যবহারের পর বাকি একটি পাতা ফেরত চাইলে কালব কর্তৃপক্ষ তা না দিয়ে নানা অজুহাত দেখায়।
উপায়ন্তর না দেখে খাইরুল ইসলাম ঝিনাইদহের বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চেক উদ্ধারের মামলা দায়ের করেন। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে কোটচাঁদপুর মডেল থানাকে চেক উদ্ধারের নির্দেশ দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী থানার এএসআই মফিজ উদ্দিন সঙ্গীয় ফোর্সসহ কালব অফিসে অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযান চলাকালে অফিস কর্তৃপক্ষ দাবি করে, খাইরুল ইসলামের জমা দেওয়া চেক বই তাদের কাছে নেই। কিন্তু তার লোন ফাইল তল্লাশি করে দেখা যায়, উক্ত চেক বইটি সত্যিই সেখানে বন্ধক রাখা হয়েছিল।
এদিকে মামলা চলমান অবস্থায় সেই চেক বইয়ের একটি পাতায় ৩০ লাখ ২০ হাজার টাকার লেনদেন উল্লেখ করে ঢাকার জজ কোর্ট থেকে এডভোকেট এ এইচ এম রাশেদ নামে এক আইনজীবী খাইরুল ইসলামের নামে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। নোটিশের প্রেরক হিসেবে উল্লেখ করা হয়—
মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, পিতা আহম্মদ আলী, সাং- কোটচাঁদপুর বাজারপাড়া (মেইন বাসস্ট্যান্ড), কোটচাঁদপুর, ঝিনাইদহ।
বিষয়টি নিয়ে কালব অফিসের সহকারী রাইসুল ইসলামকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে সভাপতি সাহেবই ভালো বলতে পারবেন।”
পরে সভাপতি মোশারফ হোসেনকে ফোনে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, “নাসির উদ্দিনের হাতে আমাদের অফিসের চেক কীভাবে গেল— আমি নিজেও বুঝতে পারছি না। তবে আমরা প্রশাসনের কাছে এক সপ্তাহ সময় চেয়েছি চেকটি ফেরত দেওয়ার জন্য।”
অন্যদিকে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ছেলের অসুস্থতার কথা বলে ফোনটি কেটে দেন।
চেকের বিষয়ে ভুক্তভোগী খাইরুল ইসলাম বলেন, “নাসির উদ্দিনদের সঙ্গে আমার বাড়ির জমি নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ রয়েছে। তারা বিভিন্নভাবে আমাকে হয়রানি করছে। এখন কালব অফিসের সহযোগিতায় আমার নামে ৩০ লাখ টাকার অবৈধ মামলা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।”
এএসআই মফিজ উদ্দিন বলেন, “চেক উদ্ধারের জন্য আমরা অফিসে গিয়েছিলাম। তদন্তে দেখা গেছে, চেকটি তাদের কাছেই ছিল। অফিস এক সপ্তাহ সময় নিয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চেক ফেরত না পেলে আমি আদালতে যথাযথ রিপোর্ট দাখিল করব।”
স্থানীয় সচেতন মহল বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।