সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সংগীত ওষুধের কাজ করে, মস্তিষ্ক বিজ্ঞানীদের দাবি এবার থেকে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম নির্ধারণ করবে সরকার: হাইকোর্ট দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জরুরী চিঠি শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের এনআইডি সংশোধন কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে রাঙামাটিতে নারী ও মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টাসহ ১০ লাখ টাকা চাঁদা চাওয়ার অভিযোগে ছাত্রদল–যুবদলের দুই নেতা গ্রেপ্তার ভূমিকম্পের আতঙ্ক কাটাতে নরসিংদী জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা নিজে মানুষ হবার শিক্ষা নেই কিন্তু স্বপ্ন দেখে এমপি হওয়ার, হাদিকে নীলা ইসরাফিল কুষ্টিয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের সাইনবোর্ডে আগুন বড় জয়ে আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ নরসিংদীতে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে জালিয়াতি: ভূমি অধিগ্রহণে কোটি টাকার অনিয়ম, দুদুকে অভিযোগ

সংগীত ওষুধের কাজ করে, মস্তিষ্ক বিজ্ঞানীদের দাবি

ডেস্ক রিপোর্ট:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫

সংগীত মানুষের মনকে শান্ত করে—এ কথা বহুদিনের জানা। তবে অনেকের ক্ষেত্রে সংগীত শুধু মন নয়, শরীরেও তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন—প্রিয় গান শুনতে গিয়ে হঠাৎ গায়ে কাঁটা দেওয়া, অজানা উচ্ছ্বাসে ভরে ওঠা বা সাময়িকভাবে দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যাওয়া—এসব অনুভূতির পেছনে বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে। ফিনল্যান্ডের ট্যুরকু পিইটি সেন্টার ও ট্যুরকু বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন গবেষণা জানাচ্ছে, সংগীত আক্ষরিক অর্থেই শরীরে ওষুধের মতো কাজ করে।

বিজ্ঞানীরা আগে মনে করতেন—বেঁচে থাকার জন্য সংগীতের কোনো সরাসরি উপকার নেই। এটি খাদ্য জোগাড়ে সাহায্য করে না, শিকারি থেকে রক্ষণও দেয় না। তারপরও কেন পৃথিবীর প্রতিটি সংস্কৃতিতে সংগীত এত গুরুত্বপূর্ণ?

নতুন ব্রেন ইমেজিং দেখাচ্ছে, সংগীত মস্তিষ্কের সেই ‘ন্যাচারাল ওপিওয়েড সিস্টেম’ সক্রিয় করে, যা সুস্বাদু খাবার খাওয়া বা ঘনিষ্ঠ মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠার সময় সক্রিয় হয়। অর্থাৎ, সংগীতও শরীরে ‘ভালো লাগা’ অনুভূতি সৃষ্টি করা রাসায়নিক বাড়িয়ে দিতে পারে।

গুড ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় ১৫ জন নারী অংশ নেন। তাঁদের দেহে একটি বিশেষ ট্রেসার প্রয়োগ করা হয়। এরপর তাঁরা নিজেদের পছন্দের বিভিন্ন ঘরানার গান দিয়ে একটি প্লেলিস্ট তৈরি করেন। প্রথমে তাঁদের ব্রেন স্ক্যান করা হয় এলোমেলো শব্দ শোনানোর সময়, এবং পরে স্ক্যান করা হয় প্রিয় গান শোনানোর সময়। তুলনায় দেখা যায়—প্রিয় গান শোনার সময় আবেগ বিশ্লেষণ ও মূল্যায়নের সঙ্গে যুক্ত মস্তিষ্কের অংশগুলো অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে।

আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো—যখন অংশগ্রহণকারীরা ‘গুজবাম্প’ বা গায়ে কাঁটা দেওয়ার অভিজ্ঞতার কথা জানান, তখন ঠিক সেই মুহূর্তেই তাঁদের মস্তিষ্কে এন্ডোজেনাস ওপিওয়েড নিঃসরণ বেড়ে যায়। এই রাসায়নিক স্বাভাবিকভাবে শরীরে উৎপন্ন হয় এবং আনন্দ অনুভূতি সৃষ্টি করে। এফএমআরআই স্ক্যানে দেখা গেছে—একই সঙ্গে আবেগ, শারীরিক অনুভূতি ও উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণকারী নেটওয়ার্কগুলোও সক্রিয় হয়ে ওঠে। অংশগ্রহণকারীদের হৃদস্পন্দন ও চোখের মণির আকার বদলে যাওয়াও শারীরিক উত্তেজনার ইঙ্গিত দেয়।

গবেষকেরা জানিয়েছেন—এই বিষয়টি আরও গভীরভাবে জানতে আরও পরীক্ষা প্রয়োজন। তবে তাঁরা মনে করছেন, এই আবিষ্কার ভবিষ্যতে ব্যথানাশক বা ওপিওয়েড ওষুধের ব্যবহার কমাতে সহায়ক হতে পারে। এর আগের গবেষণাও দেখিয়েছে—সংগীত ব্যথা কমাতে পারে। পাশাপাশি মুড ডিসঅর্ডার, বিষণ্নতা কিংবা আনন্দ অনুভূতির ঘাটতির মতো সমস্যার থেরাপিতেও সংগীত নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।

মানবজাতির পূর্বপুরুষেরা কীভাবে সংগীতকে শরীর ও মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত করেছিল—তা জানতে এখনও গবেষণা চলছে। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—আপনি যখন প্রিয় গান শুনে ভালো লাগে অনুভব করেন, তার পেছনে রয়েছে মস্তিষ্কের প্রকৃত রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া—একটি প্রাকৃতিক, নিরাপদ ‘ওষুধ’।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2011-2025 VisionBangla24.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com