রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এশার পর তারাবির নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয় পবিত্র এই মাসের আনুষ্ঠানিকতা। আর আজ শুক্রবার ভোরে সাহরি খেয়ে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা তাঁদের প্রথম রোজার রাখার নিয়ত করেছেন।
রাজধানীজুড়ে সাধ্যমতো আয়োজনে সাহরি খাওয়ার আয়োজন করেছেন নগরবাসী। তবে মধ্যরাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সংকটে সাহরি তৈরিতে দুর্ভোগের কথা বলেছেন গৃহিণীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা জুড়ে গত দুই-তিনদিন যাবত গ্যাসের কিছুটা সঙ্কট থাকলেও বৃহস্পতিবার রাত থেকে তা চরম আকার ধারণ করেছে। ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর উভয় সিটি করপোরেশন এলাকার মধ্যে লালবাগ, আজিমপুর, সূত্রাপুর, খিঁলগাও, গেন্ডারিয়া, শান্তিনগর, মিরপুর ১-২-১০-১৩-১৪, আগারগাঁও, তালতলা, শেওড়াপাড়া, ফার্মগেইট, পান্থপথ, গ্রীনরোড, হাতিরপুলসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের তীব্র সঙ্কট চলছে।
রাজধানীর আবাসিক এলাকা আজিমপুরে গ্যাসের তীব্র সঙ্কট। এই সমস্যা আগে ছিল দুপুরে। বর্তমানে সকাল, দুপুর ও রাতে সাংঘাতিক অবস্থা।’
আজিমপুরের বাসিন্দা সোহেল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ স্ট্যাটাস দেন।
রাজধানীতে ভুক্তভোগী সোহেল একা নন, তার মতো হাজার হাজার মানুষ রমজানের প্রথম দিনে তীব্র গ্যাস সঙ্কটের কারণে রান্না করা নিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়েন। গ্যাস সঙ্কটের কারণে রান্না করতে না পেরে কেউ কেউ বাইরের রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার কিনে খেতে বাধ্য হয়েছেন।
লালবাগ এলাকার বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই লাইনে গ্যাস নেই। সন্ধ্যা পর্য়ন্ত অপেক্ষা করেও যখন গ্যাস আসেনি তখন কেন্দ্রে অভিযোগ করেন। তারা আপাতত কোনো সমাধান নেই বলার পর নিরুপায় হয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দা এক নিকটাত্মীয়ের বাসা থেকে খাবার রান্না করিয়ে এনেছেন বলে জানান।
প্রথম রোজায় রাজধানীজুড়ে কর্মজীবী মানুষও সাহরি খেয়েছেন হোটেল-রেস্তোরাঁ ও ফুটপাতে। বরকত ও রহমতের এই মাসে অধিক নেকি হাসিলের সুযোগে কর্মজীবী মানুষরা ভুলেছেন পরিবার-পরিজন ছাড়া সাহরির খাওয়ার কষ্ট।
কেউ কেউ রান্না করতে না পেরে হোটেল থেকে খাবার কিনে এনে খেয়েছেন বলেও ফেসবুকে লিখেছেন।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এর জরুরি গ্যাস নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র- উত্তর ও জরুরি গ্যাস নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র- দক্ষিণ এর দুই রেডিও অপারেটর মো. আলমগীর ও মোশাররফ হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে তারা বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্যাস সঙ্কট সম্পর্কে শত শত অভিযোগ পেয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে তারা ধারনা করছেন, চাহিদার তুলনায় গ্যাসের চাহিদা বেশি হওয়ায় সঙ্কট দেখা দিয়েছে। মেইন লাইনে প্রেসার কম থাকায় গ্যাসের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বিগত বহু বছর যাবতই এ সঙ্কট চলছে। এছাড়া পুরোনো লাইন থাকার কারণে গ্যাস লিক হয়ে চাপ কমতে পারে বলে জানান তারা।
গ্রাহকদের এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় কী জানতে চাইলে- মেইন লাইনে প্রেসার কম থাকার তথ্যটি জানিয়ে এ থেকে পরিত্রাণ পেতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করছেন বলে মন্তব্য করেন তিতাসের এই দুই অপারেটর।