রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৬ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মোহাম্মদপুরে সন্ত্রাসী রহিম ও তার ছেলের অত্যাচার নির্যাতনে অসহায় এলাকাবাসী উত্তরা ব্যাংকের এমডি রবিউল হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অপসারনের দাবিতে রাজপথে বিল্পবী ছাত্র জনতা ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে দেখে কেঁদে ফেললেন মির্জা ফখরুল সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ওসমানী জাতীয় স্মৃতি পরিষদ-এর বিশেষ বাণী জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খ. ম. আমীর আলী ছাত্র বৈষম্য আন্দোলনে আহতদের জন্য আর্থিক সহায়তা নিয়ে পাশে বিএনপি নেতা মোঃ সাইফুল ইসলাম নরসিংদীর মনোহরদীতে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানক্লাব ‘নেবুলাস’-এর যাত্রা শুরু প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস গার্মেন্টস ব্যবসায়িদের নিঃস্ব করে কোটি টাকা প্রতারণা করে লাপাত্তা কৃষক লীগ নেতা হান্নান শেখ!
মংলায় পুলিশ পরিচয় ৩ ছিনতাইকারী আটক, গতিরোধ করতে গিয়ে মটরসাইকেলের আঘাতে এক যুবকের মৃত্যু

মংলায় পুলিশ পরিচয় ৩ ছিনতাইকারী আটক, গতিরোধ করতে গিয়ে মটরসাইকেলের আঘাতে এক যুবকের মৃত্যু

মংলা প্রতিনিধি : মংলায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে ছিনতাইয়ের সময় ছিনতাইকারীদের গতিরোধ করতে গিয়ে মটরসাইকেলের আঘাতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।  ছিনতাইকারীদের ধরতে আহত যুবকের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এনিয়ে দ্বিগরাজ এলাকায় জনগনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত শুক্রবার (ইদের চানঁ রাত) আড়াইটার দিকে মংলা-খুলনা মহা সড়কের দ্বিগরাজ সংলগ্ন আপাবাড়ী এলাকায় থেকে আহত যুবককে খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে নিলে উন্নত চিকিৎসার ঢাকায় রওয়ানা হলে রোববার সকালে তার মৃত্যু হয়। এদিকে ওইদিন জনতার হাতে আটক ৩ ছিনতাইকারীকে শনিবার ৫৪ ধারায় আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। তবে পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় আটককৃতদের ৫৪ ধারায় চালান দেয়ার বিষয়ে শহর জুড়ে চলছে নানা গুঞ্জন ।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগের দিন শনিবার রাত আড়াইটার দিকে তিন যুবক সবুর (২৮), আসলাম (২৭) ও মাসুম (২২) মংলা-খুলনা মহাসড়কের দিগরাজ বাজার সংলগ্ন আপা বাড়ী এলাকায় তরিকুল ইসলাম নামের এক যুবকের গতিরোধ করে। এসময় তারা কারা যানতে চাইলে তারা পুলিশের লোক বলে পরিচয় দেয়। ছিনাতাইকারী সবুর নিজেকে পুলিশ অফিসার সেজে ব্যাবসায়ী তরিকুলকে সার্চ করতে নির্দেশ করে (ভুয়া কনেস্ট্রবল) মাছুমকে। এসময় তার সঙ্গে থাকা নগদ সাড়ে ৬ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার সময় তরিকুলের সন্দেহ হয়। এরপর ছিনতাইকারীরা তাদের মোটরসাইকেল নিয়ে মংলা বাসষ্ট্যান্ডের দিকে রওনা হলে ছিনতাইয়ের শিকার তরিকুল দিগরাজ বাজারে কাছে থাকা তার পরিচিত লোকজনকে ছিনতাইকারীদের বিবরণ দিলে এলাকার লোকজন একত্রিত হয়ে ছিনকারীদের ধরতে মহা-সড়ক বেড়ীগেট দেয় এবং তাদের মোটরসাইকেল থামাতে বলে। ছিনতাইকারীরা মোটরসাইকেল না থামিয়ে সজোড়ে চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আজিজুল হাওলাদার নামের এক যুবক ছিনতাইকারীদের গতিরোধক করে। এসময় ছিনতাইকারীদের মোটরসাইকেলের আঘাতে আজিজুর (২৭) রক্তাক্ত জখম হয়। উপস্থিত জনতা ছিনতাইকারীদের ধরে গণপিটুনি দিয়ে রাতেই পুলিশে দেয়। মংলা থানার এ এস আই সুভাষ চন্দ্র সিকাদার ও এস আই বিশ্বজিৎ মুখার্জীসহ একদল পুলিশ একটি ডিসকভার মটর সাইকেল ও ওই তিন ছিনতাইকারীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর ঈদের দিন শনিবার দুপুরে পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইকারী তিন যুবককে ছিনতাই মামলা না দেখিয়ে ফিফটিফোরে (৫৪ ধারায়) বাগেরহাট আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ। এদিকে ছিনতাইকারীদের গতিরোধের চেষ্টাকালে শনিবার রাতে আহত আজিজুল (২৭) সোমবার সকালে মারা যায়। তবে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ছিনতাই করার অভিযোগে আটক তিন যুবককে ৫৪ ধারায় কোর্টে চালান করার ঘটনায় স্থানীয় জনমনে নানা প্রশ্ন ও গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দিগরাজ বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, পুলিশ পরিচয় দিয়ে ছিনতাই করা তিন যুবককে ধরে পুলিশে দেয়ার পরও তাদের বিরুদ্ধে ছিনতাই মামলা না হয়ে ৫৪ ধারায় চালান হলো কিভাবে এতো আমাদের প্রশ্ন?। তবে আমাদের ধারনা ছিনতাইকারী এ ৩ যুবক প্রভাবশালী দু’দলের নেতাদের কাছের লোক হওয়ার কারনেই তাদের ৫৪ ধারায় চালান করা হয়েছে। মংলা থানার এসআই বিশ্বজিৎ মুখার্জী বলেন, শনিবার রাতে আটককৃতদের বিরুদ্ধে কেউ কোন অভিযোগ না দেয়ায় তাদেরকে ৫৪ ধারায় চালান করা হয়েছে। যেহেতু ওই ঘটনায়ই আহত আজিজুলের মৃত্যু হয়েছে এবং তার লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে এখন নিহতের পরিবার কিংবা যে কেউ অভিযোগ দিলেই মামলা রেকর্ড করা হবে। স্থানীয় উপজেলা আওয়ামীলীগের কোষাধক্ষ্য মোঃ নাসির উদ্দিন জানায়, এলাকায় এর আগেও অনেক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। কিন্ত এখানে প্রতিনিয়ত পুলিশ টহলরত অবস্থায় থাকে তার মধ্যে এ ছিনতায়ের ঘটনা ঘটছে। যার ফলে একটি নিস্পাপ যুবকের মৃত্যু হলো। শুক্রবার রাতে আজিজুলকে গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশের সামনে খুলনায় নেয়া হয়েছে কিন্ত ২৮ ঘন্টা পর ওই যুবকের মৃত্যু হলে এর মধ্যে পুলিশ একবারও খোজ নিলোনা আহত ব্যাক্তি কেমন আছে বা কিরকম আছে। বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দ্বিগরাজ বাজার বনিক সমিতির প্রচার সম্পাদক মোঃ মনির ইজারাদার বলেন, মংলা থানা থেকে উপজেলার প্রতিটি এলাকায় রাতে ডিউটি করার জন্য পুলিশ অফিসারদের দেয়া হয়। দ্বিগরাজ এলাকায় এ এস আই সুভাষ চন্দ্র সিকদারকে গভীর রাতে প্রায়ই এ এলাকায় দেখা যায়। কিন্ত তার পরেও অহরহ হচ্ছে চাঁদাবাজী ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। ১০/১২ দির আগেও এখানে পুলিশ পরিচয়ে আরেকটি ছিনতায়ের ঘটনা ঘটেছে,পুলিশকেও জানানো হয়েছে। পুনরায় শুক্রবার রাতে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ছিনতাই হলো, যার ফলে একটি নিস্পাপ যুবকের প্রান গেলো। এছাড়াও যেখানে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ছিনতাই হলো, স্থানীয় জনতা তাদের মটরসাইকেলসহ ধরে পুলিশে সোপর্দ করার পর পুলিশ কি ভাবে তাদের ৫৪ ধারায় চালান করে এটা আমাদের বোধগম্য নয়। এব্যাপারে এ এস পি সার্কেল (মংলা-রামপাল) মোঃ খায়রুল আলম ও বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় বলেন, ৩ যুবককে ৫৪ ধারায় কোর্টে প্রেরণ করা হলেও এখন যুবকের মৃত্যুর এ ঘটনায় মামলা হবে এবং এই মামলায় তাদেরকে শোন অ্যারেস্ট দেখানো হবে।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com