রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ অপরাহ্ন
ভিশন বাংলা ডেস্কঃ সংসদে সদ্য পাস হওয়া পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ আট দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট পালন করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।শ্রমিকদের ধর্মঘটের ফলে আজ সোমবার রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার কোনো গাড়ি। সকাল থেকে ঢাকার সড়ক গণপরিবহনশূন্য। ফলে সাধারণ মানুষ পড়েছে বিপাকে। তবে রাজধানীতে ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল, রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা চলছে।
রাজধানীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, যানবাহনের জন্য অফিসগামী যাত্রীরা অপেক্ষা করছেন। কেউ কেউ হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন। ঢাকায় শুধু বিআরটিসি ছাড়া আর কোনো গণপরিবহন চোখে পড়েনি। যখনই এ পরিবহনের কোনো গাড়ি আসছে সবাই যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। অনেকে বাধ্য হয়ে বিকশা, অটোরিকশা বা রাইড শেয়ারিং নিচ্ছেন। তবে তাতেও মুক্তি নেই যাত্রীদের। এখানেও তাদের গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ বাড়তি ভাড়া।শ্যামলী থেকে মতিঝিল অফিসগামী মানিক মিয়া বলেন, এত দূরের রাস্তা হেঁটে যাওয়া তো সম্ভব নয়। বাসও আসছে না। রিকশা ভাড়া ৩০০ টাকা চায়। সিএনজি তো চায় ৫০০ টাকার বেশি। এখন বাধ্য হয়ে রিকশা করে যাচ্ছি।
সড়ক দুর্ঘটনায় সাজা কমিয়ে আইন সংশোধনসহ আট দফা দাবিতে রবিবার থেকে সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার এ পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়। শ্রমিকরা রবিবার ভোর থেকে রাজধানীসহ সারা দেশে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেয়।গতকাল সড়কে গাড়ি নামানোয় রাজধানীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার, নারায়ণগঞ্জ, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন শ্রমিকরা প্রকাশ্যে চালকের মুখে পোড়া মবিল মাখিয়ে দেয়। তাদের এ তাণ্ডবের হাত থেকে রক্ষা পায়নি যাত্রীরাও। সারা দেশে নিরাপদ সড়কের দাবিতে করা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর সংসদে সড়ক আইন পাস করে সরকার।এদিকে পরিবহন ধর্মঘট এ মুহূর্তে প্রত্যাহার করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী। তিনি জানান, ৩০ অক্টোবর পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া দেশব্যাপী ধর্মঘট শান্তিপূর্ণভাবে চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, যাত্রাবাড়ীতে একটি প্রাইভেট কারের চালকের মুখে কালো পোড়া মবিল দেয়ার ঘটনায় দুই পরিবহন কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।অপরদিকে শ্রমিকরা যে ৮ দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন, সেই দাবি এখনই পূরণ করা সম্ভব নয় বলে গতকাল রবিবার জানিয়ে দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, শ্রমিক নেতারা আইনটি ভালোভাবে না পড়েই আন্দোলনে নেমেছেন। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও আইনটি সংশোধন করা বা শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়া সম্ভব নয় বলে জানান।পরিবহন শ্রমিকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- সড়ক দুর্ঘটনার সব অপরাধ জামিনযোগ্য করা, পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান বাতিল করা, সড়ক দুর্ঘটনায় গঠিত যেকোনো তদন্ত কমিটিতে ফেডারেশনের প্রতিনিধি রাখা, ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য সর্বনিম্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি নির্ধারণ এবং সড়কে পুলিশের হয়রানি বন্ধ করা।