মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৯ অপরাহ্ন
ইন্দোনেশিয়ার সান্দা স্ট্রেইট উপকূলে ভয়াবহ সুনামিতে ৪৩ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৫৮৪ জন। সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা বলছে, এ ঘটনায় এখনো দুজন ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। এ ছাড়া ডজনখানেক বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সংস্থাটির মতে, এ সুনামি কোনো ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্টি হয়নি। সম্ভবত লামপাংয়ের মাউন্ট ক্রাকাতোয়া দ্বীপের আগ্নেয়গিরির প্রভাব থেকে এ সুনামির উৎপত্তি হয়েছে।
জাভা ও সুমাত্রা দ্বীপের মাঝখানে এই সান্দা প্রণালীই জাভা সাগরকে ভারত মহাসাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে। অধিকাংশ মৃত্যুর খবর এসেছে ইন্দোনেশিয়ার পান্দেগলাং, দক্ষিণ লামপাং ও সেরাং এলাকা থেকে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, সুনামিতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। উদ্ধারকর্মীরা দুর্গত এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিচ্ছে।দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের একজন মুখপাত্র সুনামির আঘাতের একটি ভিডিও টুইটারে দিয়েছেন। রাস্তায় পানির তোড়ে যানবাহন ভেসে যেতে দেখা যাচ্ছে সেখানে।শনিবার রাতের সুনামির প্রত্যক্ষদর্শী নরওয়ের আলোকচিত্রী ওইস্তেইন লুন্ড অ্যান্ডারসন বিবিসি জানান, বিপুল জলরাশি যখন উঠে আসতে শুরু করে, তিনি তখন পশ্চিম জাভার আনিয়ার সৈকতে ছিলেন। ক্রাকাতোয়ার উদগীরণের ছবি তোলার চেষ্টায় ছিলেন তিনি। আর তার পরিবারের সদস্যরা হোটেলে ঘুমাচ্ছিলেন। সন্ধ্যায় ওই আগ্নেয়গিরি লাভা উগরে দিলেও রাতে সবই ছিল বেশ শান্ত। এর মধ্যেই হঠাৎ সাগর থেকে বিশাল এক ঢেউ সৈকতে উঠে আসতে দেখে উল্টো ঘুরে দৌড়াতে শুরু করেন অ্যান্ডারসন।
আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ জেস ফিনিক্সকে উদ্ধৃত করে বিবিসি লিখেছে, আগ্নেয়গিরি থেকে যখন অগ্ন্যুৎপাত হয়, ফুটন্ত লাভার কারণে ভূগর্ভের তুলনামূলকভাবে শীতল শীলাস্তর ভেঙে ভূমিধসের সৃষ্টি হতে পারে। আর ক্রাকাতোয়ার একটি অংশ যেহেতু সাগরে নিমজ্জিত, সেখানে ভূমিধসের ফলে সুনামি সৃষ্টি হতে পারে।আগ্নেয়দ্বীপ ক্রাকাতোয়ায় ১৮৮৩ সালে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাতে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। ওই সময়ও ১৩৫ ফুট উঁচু ঢেউ নিয়ে সৈকতে আঘাত হানে সুনামি, প্রায় ৩০ হাজার মানুষ সে সময় সাগরে ভেসে যায়।
এর আগে সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বরে ভূমিকম্প ও সুনামিতে ইন্দোনেশিয়ার পালু শহরের বালারোয়া ও পেতোবো এলাকায় অন্তত দুই হাজার মানুষের মৃত্য হয়।২০০৪ সালে সুমাত্রা দ্বীপে শক্তিশালী ভূমিকম্প ও সুনামিতে ভারত মহাসাগরের উপকূলজুড়ে ১৪টি দেশের ২ লাখ ২৬ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে।