রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৩ অপরাহ্ন
ক্রীড়া ডেস্কঃ প্রসঙ্গটি তুলতেই একচোট রসিকতা করে নিলেন স্টিভ রোডস, ‘চলুন, নিউজিল্যান্ডারদের কাছ থেকে এটি চেপে যাওয়া যাক যে আমরা কেমন উইকেটে খেলছি!’
কিছুতেই যে চেপে যাওয়া সম্ভব নয়, সেই বাস্তবতাও ভালো করেই জানা বাংলাদেশ দলের হেড কোচের। বিপিএল টেলিভিশনে সম্প্রচারিত না হলে তবু কথা ছিল। এই আসরে ধীরগতির উইকেটেই খেলা হচ্ছে। অথচ এটি শেষ হওয়া মাত্রই জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ছুটতে হবে নিউজিল্যান্ড সফরে। যেখানে গিয়ে আবার খেলতে হবে দ্রুতগতির উইকেটে।
বিপিএল আর নিউজিল্যান্ড সফরের মাঝখানে বিরতিও এত সামান্য যে সেখানকার উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সময়ও নেই। নিউজিল্যান্ডে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ১৩ ফেব্রুয়ারি। আর ৮ ফেব্রুয়ারি বিপিএলের ফাইনাল। ফাইনালের দুই দলে থাকা জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা পরদিনই রওনা হয়ে যাবেন নিউজিল্যান্ডে। ফাইনালের আগের দিন যাওয়ার কথা আছে অন্যান্য দলে থাকা ওয়ানডে ক্রিকেটারদের। দুদিন আগে-পরে যাওয়ার সূচি নির্ধারিত থাকলেও সবার জন্যই নিউজিল্যান্ড সফরের প্রস্তুতি বলতে এই বিপিএলই।
তা কতটা আদর্শ প্রস্তুতি হলো, সে প্রশ্নেই প্রথমে রসিকতা করে নিলেন রোডস। বিপিএলের খেলা দেখতে গত বুধবার থেকেই তিনি সিলেটে। গতকাল সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নিউজিল্যান্ড সফরের প্রস্তুতি নিয়ে মোটেও সন্তুষ্ট মনে হলো না তাঁকে। আবার বিকল্প কোনো পথও দেখলেন না এই ইংলিশ, ‘আসলে বিপিএল খেলেই সরাসরি নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে খেলতে চলে যাওয়াটা আদর্শ প্রস্তুতির ধারেকাছেও নয়। কিন্তু অন্য কোনো উপায়ও নেই আমাদের। বিপিএল দারুণ একটি টুর্নামেন্ট। কোনো না কোনো সময়ে এটি আয়োজন করতেই হতো। এবং তা করার জন্য একমাত্র ফাঁকা সময় ছিল এখনই।’
বিকল্প কোনো পথও দেখলেন না এই ইংলিশ, ‘আসলে বিপিএল খেলেই সরাসরি নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে খেলতে চলে যাওয়াটা আদর্শ প্রস্তুতির ধারেকাছেও নয়। কিন্তু অন্য কোনো উপায়ও নেই আমাদের। বিপিএল দারুণ একটি টুর্নামেন্ট। কোনো না কোনো সময়ে এটি আয়োজন করতেই হতো। এবং তা করার জন্য একমাত্র ফাঁকা সময় ছিল এখনই।’
এবার নিউজিল্যান্ড সফরে টি-টোয়েন্টিও নেই কোনো। তবে আছে তিন টেস্টের সিরিজ। হ্যামিল্টনে সিরিজের প্রথম টেস্ট শুরু হবে ২৮ ফেব্রুয়ারি। বিরুদ্ধ কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জে তাই টেস্ট ক্রিকেটাররা উতরে যাবেন বলেই বিশ্বাস রোডসের। কিন্তু ওয়ানডেতে কী হবে? বাস্তবতা মেনেই তিনি বললেন, ‘আমরা যারা জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত, তারা বিষয়টি বুঝতেও পারছি। এর মধ্যেই ওয়ানডে দলের ক্রিকেটারদের মানিয়ে নিতে হবে। আমরা জানি খুব তাড়াহুড়ার মধ্যে ওয়ানডে সিরিজের প্রস্তুতি সারতে হবে। তবু আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যেতে হবে। চেষ্টা করতে হবে জেতারও। টেস্ট যারা খেলবে, ওরা একটু সময় পাবে মানিয়ে নেওয়ার। আশা করি ওদের কোনো সমস্যা হবে না।’
নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে জেতা যে খুব কঠিন হবে, রোডসও তা মেনে নিচ্ছেন আগাম, ‘নিউজিল্যান্ডে জেতা কঠিন হবে অবশ্যই। তবে আমরা যদি ভালো ফল বের করতে পারি, তাহলে ওয়ানডেতে আমরা সঠিক পথেই থাকব।’ নিউজিল্যান্ড সফরের আগে প্রস্তুতির যে সংকট, বিশ্বকাপ আসতে আসতে তা কেটে যাবে বলেও মনে করেন তিনি, ‘আয়ারল্যান্ড সফরে আমাদের ভালো প্রস্তুতি হবে। দেশ ছাড়ার আগে মিরপুরে কয়েক দিনের একটি অনুশীলন শিবির হবে। এরপর আয়ারল্যান্ডে গিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং স্বাগতিকদের সঙ্গে খেলে ভালো অভিজ্ঞতাও হবে। ওখানকার ঠাণ্ডা ও ভেজা আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। বিশ্বকাপের জন্য ইংল্যান্ডে যেতে যেতে সেখানকার উইকেটগুলোও শুষ্ক হতে শুরু করবে। আশা করি, দল তখন জয়ের ধারাবাহিকতায় থাকবে।’
বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করে দিতে হবে আয়ারল্যান্ডে যাওয়ার আগেই। ৩০ এপ্রিল রাতে দেশ ছাড়বে বাংলাদেশ দল। আর বিশ্বকাপের জন্য ১৫ জনের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণার শেষ সময় ২৩ এপ্রিল। সেই দলের জন্য বিপিএলের পারফরম্যান্স বিবেচিত হবে না বলেও কাল সাফ জানিয়ে দিলেন রোডস। কেন? ব্যাখ্যা দিলেন তারও, ‘বিপিএলে কারো ভালো বা খারাপ পারফরম্যান্সকে আমাদের খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত হবে বলে মনে করছি না। কারণ বিশ্বকাপ তো আলাদা ফরম্যাটের খেলা। আর ওয়ানডেতে আমরা বেশ ভালোই করছি। তাই বিপিএলের পারফরম্যান্সে আমি ভেসে যাওয়ার কিছু দেখছি না।’
তবে চেপে যাওয়ার একটি ব্যাপার দেখেছিলেন রোডস। তবে ধীরগতির উইকেটে বিপিএলের খেলা হওয়ার ব্যাপারটি তো চাইলেও চেপে যাওয়া সম্ভব নয়!