শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৭ অপরাহ্ন
অন্তর রায় প্রিন্স, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :
চলতি বছরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) বীজের গম ক্রয়ের মূল্য গত বছরের তুলনায় কেজিতে ৩ টাকা কম নির্ধারণ হওয়ায় চুক্তিবদ্ধ গম চাষিরা হতাশায় মূল্য বৃদ্ধির দাবিতে বিভিন্ন মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দরখাস্ত দিয়েছেন।
বুধবার দুপুরে বিএডিসি কৃষক ফোরাম ঠাকুরগাঁও জোনের আয়োজনে পুন:রায় মূল্য বৃদ্ধির দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দরখাস্ত দেওয়া হয়। দরখাস্তটি গ্রহণ করেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিনুল ইসলাম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাব সভাপতি মনসুর আলী, বিএডিসি কৃষক ফোরামের সভাপতি কুতুব উদ্দীন, চাষি আল মামুন খান, ইনুস আলী, আব্দুল লতিফ, শামসুজ্জুহা, বেলাল হোসেন, ইসলাম হক, বুলবুল আম্মেদ প্রমুখ।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাযায়, জেলায় এবার ৫০ হাজার ২শ ৩০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছিল। আর উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২ লাখ ১ হাজার মেট্রিকটন আর ঠাকুরগাঁও জেলায় ৩ টি বীজ উৎপাদন জোনে ১৮শ গম বীজ চাষির মাধ্যমে এবার বিএডিসি ৮ হাজার ১শ মেট্রিকটন গম বীজ ক্রয় করেছে। সারাদেশে ১২ হাজার মেট্রিকটন গম বীজ ক্রয় করেছে বিএডিসি।
সরকার গমের যে দর দিবে বিএডিসি তার চেয়ে ৩০ ভাগ বাড়িয়ে দিবে চাষিদের এমনটাই চুক্তি রয়েছে তাদের। খাদ্য অধিদপ্তর এবার ২৮ টাকা দরে জেলায় ১৭ হাজার ৯শ ১৫ মেট্রিকটন গম ক্রয় করেছে। সে অনুযায়ি ৩৬ টাকা ৪০ পয়সা হওয়ার কথা বিএডিসি‘র গম বীজের।
চাষিদের দাবি গত বছরের চেয়ে বাজারে এবার গমের দাম বেশি তার পরেও এবার প্রতি কেজিতে ৩ টাকা কম নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর প্রতি কেজি প্রত্যায়িত ও মানঘোষিত বীজের গম ৩৫ টাকা এ বছর ৩২ নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর বাজারে কাঁচা গমের বাজার ছিল প্রতি কেজি ১৯ টাকা। আর এবার বাজারে কাঁচা গম ২৩ টাকা থাকলেও বিএডিসি বীজের গম কেজিতে ৩ টাকা কমিয়ে ৩২ টাকা নির্ধারণ করেছে। এতে চাষিরা লোকশানের মুখে পরছেন।
বিএডিসি‘র চুক্তিবদ্ধ চাষিরা বলেন, আমরা ভেবে ছিলাম বাজারে গত বছরের চেয়ে এবার গমের দাম বেশি তাই বিএডিসিও গম বীজের দাম বেশি দিবে। কিন্তু শেষে তারা গত বছরে চেছে কেজিতে ৩ টাকা কমিয়ে দিয়েছে। মানসম্মত বীজ প্রক্রিয়াজাত করে ১০ থেকে সাড়ে ১০% আদ্রতায় নেয় বিএডিসি। এতে কমপক্ষে প্রতি কেজি ৩৪ টাকার উপরে পরে যায়। ৩ মাস পরে বীজের টাকা পায় চাষিরা এতে ২ টাকা লাভ না পেয়ে যদি ২ টাকা লোকশান পায় তা হলে চাষিরা কেমনে বাঁচবে।
বিএডিসি যদি দ্রুত সময়ে গম বীজের মূল্য ৩৬ টাকা না কবরে তাহলে চাষিরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে। এতে চাষিরা আর্থিক ভাবে ক্ষতির মুখে পরছেন। চুক্তিবদ্ধ চাষিরা যদি লোকশানে পরে তা হলে বীজ উৎপাদনে অনাগ্রহী হয়ে উঠবে। তাই চাষিদের কথা চিন্তা করে কর্তৃপক্ষ পূনরায় মূল্য নির্ধারণ করবেন প্রাথমিক ভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে মূল্য বৃদ্ধির দরখাস্ত পাঠানো হয়েছে।
কৃষি বিপনন অধিদপ্তর সূত্রে জানাযায়, গত বছর ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন বাজারে কাঁচা গম ১৮-১৯ টাকা বিক্রি হলেও এবার ২৩-২৪ টাকা দরে বিক্রি হয়। জেলায় গমের আবাদ কমে যাওয়ায় চাষিরা এবার ভাল দাম পেয়েছে।
বিএডিসি কর্তৃপক্ষ গম বীজ ক্রয়ের মূল্য ভিত্তি বীজ ৩৮ ও প্রত্যায়িত ও মানঘোষিত বীজ ৩২ টাকা নিধার্রণ করেছে। গতবছর গম বীজ ক্রয়ের মূল্য ছিল ভিত্তি বীজ ৪২ ও প্রত্যায়িত ও মানঘোষিত বীজ ৩৫ টাকা।