মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৭ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে মুঠোফোনে এক কলেজছাত্রীর (২১) গোসলের দৃশ্য ধারণ করার অভিযোগ উঠেছে হাসান পাটওয়ারী (২২) নামের এক বখাটের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রাগে-ক্ষোভে ওই ছাত্রী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে ছাত্রীর পরিবারের দাবি, বখাটে হাসান তাকে হত্যা করে আত্মহত্যার ঘটনা সাজিয়েছেন।
গত রোববার শাহরাস্তি উপজেলার টামটা দক্ষিণ ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হাসানের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে থানায় মামলা করা হয়েছে। মৃত ছাত্রী চাঁদপুর সরকারি কলেজে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে পড়তেন।
পরিবারের ভাষ্যমতে, ২০১৬ সালে ওই ছাত্রীর সঙ্গে তৌকির আহমেদ নামের এক ব্যক্তির বিবাহ হয়। পরে তৌকির সৌদি আরব চলে যান। তখন থেকে ছাত্রী শাশুড়ির সঙ্গে থাকতেন। রোববার শাশুড়ি ঈদের কেনাকাটা করার জন্য হাজীগঞ্জ বাজারে যান। এ সময় ছাত্রী ঘরের পেছনে টিউবওয়েলে গোসল করছিলেন। তখন তার চাচাতো দেবর হাসান গোপনে ছাত্রীর গোসলের দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করেন। গোসল শেষে ছাত্রী ঘরে ঢুকলে হাসান তাকে ওই কথা জানান। এতে ছাত্রী তাৎক্ষণিকভাবে শাশুড়ি ও প্রবাসে থাকা স্বামীকে ঘটনাটি জানিয়ে রাগে-ক্ষোভে ঘরের আড়ার সঙ্গে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এ ঘটনায় শাশুড়ি ওই দিন রাতেই হাসানকে অভিযুক্ত করে শাহরাস্তি থানায় মামলা করলে তিনি পালিয়ে যান। আর ছাত্রীর লাশ চাঁদপুর সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের পর পরদিন সোমবার সন্ধ্যায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
শাশুড়ি বলেন, হাসান দীর্ঘদিন ধরে তার পুত্রবধূকে উত্ত্যক্ত করে আসছেন। ঈদের আগের দিন বাজার করতে যাওয়ার পর পুত্রবধূর গোসলের দৃশ্য ভিডিও করে তাকে কুপ্রস্তাব দেন।
ছাত্রীর চাচা ও মামা অভিযোগ করেন, মেয়েটির গোসলের দৃশ্য ধারণ করে হাসান তাকে ব্ল্যাকমেল করতে চেয়েছেন। ঘরে একা পেয়ে তাকে ধর্ষণও করে থাকতে পারেন তিনি। পরে বালিশ চাপা দিয়ে তাকে হত্যা করেন বলে তারা জেনেছেন। সুষ্ঠু তদন্ত করে মেয়েটির মৃত্যুরহস্য উদ্ঘাটন ও দোষী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
ছাত্রীর বাবাও তার মেয়েকে ‘হত্যার’ বিচার দাবি করে প্রশাসন ও মানবাধিকারকর্মীদের সহায়তা চেয়েছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শাহরাস্তি থানার উপপরিদর্শক মোজাম্মেল হক বলেন, হাসানকে গ্রেফতারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পরিবারের হত্যার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক ফাঁস লাগানোর ঘটনা উল্লেখ করেছেন।