মোঃ জহিরুল ইসলাম সবুজ, আগৈলঝাড়া:
‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না ও বন্ধু..’ উপমহাদেশের কিংবদন্তী গায়ক ভূপেন হাজারিকার এ কালজয়ী গানটি মনে পরে গেল যখন দেখলাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে দেশব্যাপী কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষ ঘরবন্দি। প্রায় দু’মাস লকডাউন থাকায় ঘরবন্দি শ্রমজীবী মানুষ নিজেদের পুঁজি ঘরে বসে খেয়ে অর্ধআহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে ঠিক তখনি ঘরবন্দি শ্রমজীবী দরিদ্র ও দুঃস্থদের সাহায্য করতে পাসে এসে দায়িছে বরিশাল আঞ্চলিক ব্যপ্টিষ্ট চার্চ সংঘ। মনে হয় একারণেই মানুষের প্রতি মানুষের হৃদয়টাকে স্ফিত করে মানবিকতাকে জাগিয়ে তুলতেই যেন গানটি গেয়েছিলেন উপমহাদেশের কিংবদন্তী এ গায়ক।
ক্ষুধার্ত ও হতদরিদ্র মানুষদের মুখে দু’মুঠো খাবার তুলে দেওয়ার অনন্ত চেষ্টার খন্ড দৃশ্যগুলো যখন আমার চোখের সামনে। মহামারীতে রূপ নেওয়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পাশাপাশি এ যেন মানবতার পক্ষেরও লড়াই। মানবিকতাবোধ জাগ্রত হয়েছে তাদের মধ্যে।
জাতির চরম সংকটময় মূহুর্তের বাংলাদেশ ব্যপ্টিষ্ট চার্চ সংঘের অর্থায়নে বরিশাল আঞ্চলিক ব্যপ্টিষ্ট চার্চ সংঘ অসহায় মানুষের পাশে দারিয়ে মানবিকতাবোধে বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় কর্মহীন গরিব ও দুঃস্থদের বাঁচিয়ে রাখতে চাল, ডাল, আলু, তেল, লবন, সাবান, ক্রয় করার জন্য নগদ এক হাজার টাকা করে প্রদান সহ স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য লিফলেট বিতরন করছে তারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন. বরিশাল -এবিসিএস এর সভাপতি জেমস্ রিপন বাড়ৈ, সহ-সভাপতি, পালক প্রধান, নির্বাহী সদস্য, কাউন্সিল, কনভেনর, সংশ্লিষ্ট সম্পাদক ও পাঠকবৃন্দ।
এব্যাপারে বরিশাল আঞ্চলিক ব্যপ্টিষ্ট চার্চ সংঘের সভাপতি জেমস্ রিপন বাড়ৈ জানান, বিদ্যমান সময়ের মহাক্রান্তিকালে বিশ্ব অতিক্রম করছে ভয়ানক এবং অনিবার্য এক সংকটাপন্ন স্তব্ধ জমাটবাঁধা অদ্ভুত এক আঁধারের গলিপথে। সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত মানবজাতি স্মরণকালের যে কোনো সময়ের মহামারীর তুলনায় বড়ো বেশি আতঙ্কিত-বিষাদগ্রস্ত। তাই বাংলাদেশ ব্যপ্টিষ্ট চার্চ সংঘের অর্থায়নে বরিশাল আঞ্চলিক ব্যপ্টিষ্ট চার্চ সংঘ (বরিশাল-এবিসিএস) কভিড-১৯ এ মোকাবেলায় বরিশাল জেলার নিম্ন-মধ্যম আয়, সাধারণ পথচারী, রিক্সাচালক, ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে জীবাণুনাশক চাল, ডাল, আলু, তেল, লবন, সাবান, ক্রয় করার জন্য মোট ৯টি স্থান থেকে ২০০ পরিবারে খাদ্য সহায়তা বাবদ ১০০০/- (এক হাজার) টাকা করে ২০০০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা প্রদান করা হয়েছে। এরমধ্যে ইন্দুর কানি- ২৬, নাঘিরপাড়- ২২, সাঁতলা- ২৮, কাঠিরা ২৭, আনন্দপুর- ২২ ,পিংলাকাঠি- ১৪. ধামশর- ২৮. দেহেরগতি- ১৫ বরিশাল- ১৮ পরিবার রয়েছে। এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য লিফলেট বিতরন করা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি চলমান এই সংকটের মধ্যে ক্ষুর্ধাত মানুষের পাশে দাড়ানোর। চলমান পরিস্থিতিতে এই কার্যক্রমকে আরো সম্প্রসারণ করা হবে বলেও জানান তিনি। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এই কর্মকান্ড চলছে। এবং এই কর্ম কান্ডকে সহযোগীতা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।