মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:০৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সংগীত ওষুধের কাজ করে, মস্তিষ্ক বিজ্ঞানীদের দাবি এবার থেকে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম নির্ধারণ করবে সরকার: হাইকোর্ট দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জরুরী চিঠি শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের এনআইডি সংশোধন কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে রাঙামাটিতে নারী ও মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টাসহ ১০ লাখ টাকা চাঁদা চাওয়ার অভিযোগে ছাত্রদল–যুবদলের দুই নেতা গ্রেপ্তার ভূমিকম্পের আতঙ্ক কাটাতে নরসিংদী জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা নিজে মানুষ হবার শিক্ষা নেই কিন্তু স্বপ্ন দেখে এমপি হওয়ার, হাদিকে নীলা ইসরাফিল কুষ্টিয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের সাইনবোর্ডে আগুন বড় জয়ে আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ নরসিংদীতে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে জালিয়াতি: ভূমি অধিগ্রহণে কোটি টাকার অনিয়ম, দুদুকে অভিযোগ

বৈশ্বিক স্বাস্থ্য রক্ষায় গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের ভুমিকা

ভিশন বাংলা ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ২৬১

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ ২৫শে সেপ্টেম্বর, বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস। আমাদের দেশসহ সারাবিশ্বেই দিবসটি বেশ গুরুত্বের সাথে পালন করা হয়ে থাকে। শুরুতেই একটি বিষয় পরিস্কার করতে চাই, ফার্মাসিস্ট আসলে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্ট কাদেরকে বলা হচ্ছে, যারা কোন সরকারী বা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগ থেকে বি ফার্ম (ব্যাচেলর অব ফার্মেসী) পাশ করে থাকেন তাদেরকে বলা হয় গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্ট বা এ-গ্রেড ফার্মাসিস্ট। এই সকল এ-গ্রেড ফার্মাসিস্টদেরকে ফার্মেসী কাউন্সিল অফ বাংলাদেশ থেকে এ-গ্রেড ফার্মাসিস্ট রেজিষ্ট্রেশন নম্বর দেওয়া হয়ে থাকে, যা পরবর্তী কর্মজীবনের অনেক ক্ষেত্রেই অবশ্যই দরকার এবং অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে থাকে। এবার আসি, বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস সম্পর্কে। সারা বিশ্বে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগ / ফ্যাকাল্টি, ফার্মাসিস্টদের অংগ সংগঠন, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানীসহ ওষুধ সম্পর্কীত অন্যান্য প্রতিষ্ঠান দিবসটি পালন করে থাকে। করোনা মহামারীর কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার দিবসটি ভিন্নভাবে পালিত হচ্ছে। সামাজিক দুরত্ব মাথায় রেখে দিবস সংক্রান্ত সকল কর্মকান্ড ভার্চুয়ালি সম্পন্ন করা হচ্ছে। এটি ১০ম বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস। ইন্টারন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশন (এফআইপি) এর উদ্দ্যোগে ২০০৯ সালে ইস্তানবুল, তুরস্কের একটি মিটিং এর মাধ্যমে এই দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখানে বলে রাখা ভাল, ২৫ শে সেপ্টেম্বর ইন্টারন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশন (এফআইপি) এর জন্ম দিন, যে সংগঠনটি ১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেই জন্য ২৫ শে সেপ্টেম্বরকে বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস হিসাবে নির্বাচন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আজ ১০ম বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস।

এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় Transforming Global Health- বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সর্বব্যাপী ছড়িয়ে দাও। এই লক্ষ্যে সারাবিশ্বে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টরা কাজ করে যাচ্ছে। ইন্টারন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশন (এফআইপি) এর প্রেসিডেন্ট ডোমিনিক জর্ডান বলেন “আমাদের লক্ষ্য নিরাপদ,  কার্যকরী, মানসম্পন্ন ও সহজলভ্য ওষুধ সারাবিশ্বের প্রতেকের নিকট পৌছাতে ফার্মাসিস্টদের অবদান সঠিকভাবে উপস্থাপন করা”। আমার সুযোগ হয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশন (এফআইপি) এর একজন সদস্য হিসাবে ২০১১ সালে হায়দারাবাদ, ইন্ডিয়াতে ইন্টারন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশন (এফআইপি)- এর ৭১তম আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার। সারাবিশ্বের সহস্রাধিক গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্ট যারা ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানীর বিভিন্ন শাখা যেমন প্রডাকশন, কোয়ালিটি কন্ট্রোল, কোয়ালিটি এ্যাসুরেন্স, প্রডাক্ট ডেভেলপমেন্ট, রেগুলেটরী এন্ড ডকুমেন্টেশন, রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আর এন্ড ডি), ওষুধ বিক্রয় ও বিপননে কর্মরত, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ওষুধ বিজ্ঞানী, ওষুধ প্রশাসনে কর্মরত, রিটেল গ্রাজুয়েট ফার্মাস্টিট এবং হসপিটাল ফার্মাসিস্টসহ আরো অনেকের মিলনমেলা। প্রত্যেকে তাদের গবেষনালব্ধ বিষয়গুলো বৈজ্ঞানিকভাবে উপস্থাপন করেছেন। এদের ভিতর নতুন ড্রাগ ডেভেলপমেন্টের উপস্থাপনগুলো বৈশ্বিক স্বাস্থ্যরক্ষায় বিশেষ ভুমিকা রাখে। প্রত্যেক বছরে ইন্টারন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশন (এফআইপি) এই ধরনের বৈজ্ঞানিক সম্মেলন একাধিক করে থাকে। এসব বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে যোগদানের মাধ্যমে জানা যাবে সারাবিশ্বে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টরা কিভাবে Comprehensive Health Service অর্থাৎ একটি পরিপূর্ন সাস্থ্যসেবা বলতে যা বুঝায়, তার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখে যাচ্ছে। উন্নত বিশ্বে এইসকল গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টরা এমবিবিএস ডাক্তারের পাশাপাশি রুগীর স্বাস্থ্যসেবা ও রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে ওষুধ সম্পর্কিত উপদেশ ও পরামর্শ দিয়ে থাকে। আপনারা নিশ্বয়ই জানেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন করোনা থেকে মুক্তিলাভের পর করোনাকালীন তিনি যাদের সেবা, উপদেশ ও সহযোগীতায় আরোগ্য লাভ করেছেন, তাদের কথা বলতে দিয়ে উনি ফার্মাসিস্টদের কথাও উল্লেখ করেছেন।

এবার আসা যাক, এই করোনাকালে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টরা আমাদের দেশে স্বাস্থ্যসেবায় কিভাবে ভুমিকা রাখছে। আপনারা জানেন, আমাদের দেশে মার্চের দিকে যখন করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায় এবং মার্চ-এপ্রিলের দিকে লক ডাউন দেওয়া হলো বেশীরভাগ অফিস ও কারখানা বন্ধ থাকলেও ওষুধ উৎপাদন এবং বিক্রয় ও বিতরণ চালু ছিল। সত্যিকার অর্থে এটা বানিজ্যিক দৃষ্টিকোন থেকে নয়, এটা ছিল মানুষের প্রতি, করোনাসহ অন্যান্য রোগীদের প্রতি সামাজিক ও মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে। আমাদের দেশের গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টরা মুখে মাস্ক বেধে নিজের পরিবারের কথা চিন্তা না করে শুধুমাত্র রোগীরা যাতে তাদের কাংখিত ওষুধ প্রয়োজনমত বাসার সামনের ওষুধের দোকান থেকে পায় তার উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিতের লক্ষ্যে চলে গেছেন নিজ নিজ ওষুধ কারখানায়, ঢাকা থেকে টঙ্গী, গাজীপুর, কালিয়াকৈর এমনকি নারায়নগঞ্জ, যেখানে করোনা সংক্রনের ঝুঁকি ছিল সবচেয়ে বেশী। যখনই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অথবা জাতীয় বা আন্তর্জাতিক রোগ নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান থেকে করোনা রোগীর চিকিৎসায় নতুন ওষুধের কথা বলা হচ্ছে, তখনই আমাদের দেশের গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টরা যত দ্রুত সম্ভব প্রস্তুত করে সরবরাহ নিশ্চিত করছে। আপনারা সকলেই আইভারম্যাকটিন, হাইড্রোক্সিলক্লোরোকুইন বা ডক্সিসাইক্লিনের কথা জানেন। এই ওষুধগুলো খুবই পুরোনো। কিন্তু নির্দেশনা আসায় করোনা চিকিৎসায় নতুন করে ব্যবহৃত হয়েছে বা হচ্ছে। কিন্তু একটি কথা না বললেই নয়, এ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ যেমন রেমডিসিভির, ফেভিপিরাভির এর মত ওষুধ অল্প সময়ে উৎপাদন ও বিতরণ নিশ্চিত করেছে যে, বেক্সিমকো ফার্মা, এসকেএন্ডএফ, স্কয়ার ফার্মা, ইনসেপ্টা ফার্মা, হেলথ্ কেয়ার, পপুলার ফার্মা, বিকন ফার্মা, এসিআই, এক্মি, রেডিয়্যান্ড ফার্মা ও ইউনিমেড ইউনিহেলথ্ ফার্মাসিউটিক্যাল্স সহ এই সকল কোম্পানীর গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টরা সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে। শুনেছি, রেমডিসিভির আমাদের দেশে চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশেও করোনা রোগীর চিকিৎসায় রপ্তানী হচ্ছে। রপ্তানী কথাটি আসাতে একটি কথা শেয়ার করতে চাচ্ছি। করোনার কারনে সারা বিশ্বে লকডাউন ও অর্থনৈতিক মন্দার কারণে রপ্তানী আয় কমে গেছে। ওষুধ শিল্পও এর ব্যতিক্রম নয়। ২০১৯-২০২০ সালে বাংলাদেশের ওষুধের ডোমেস্টিক মার্কেট ২৩ হাজার কোটি টাকার উপরে এবং ২০১৮-২০১৯ এর রপ্তানীর পরিমান ১৩০ মিলিয়ন ইউএস ডলার। আমাদের দেশে উৎপাদিত ওষুধ এখন ১৪৭টি দেশে রপ্তানী হচ্ছে। আর এই ওষুধের গুণগত মান এবং উৎপাদন নিশ্চিত করতে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বানিজ্য, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি বিভাগ এর উদ্দোগে আয়োজিত ভার্চুয়াল মিটিং-এ আমন্ত্রিত প্রতিনিধি হিসাবে অংশগ্রহণ করে জানতে পারি, করোনাকালীন রপ্তানীর জন্য যে সকল পন্য আছে তাতে ওষুধ শিল্পই সর্বাপেক্ষা সুবিধাজনক অবস্থায় আছে এবং উক্ত মিটিং এ ওষুধ কোম্পানীতে কর্মরত গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের মেধা, শ্রম ও দক্ষতাকে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়। একজন গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্ট হিসাবে বিষয়টি আমার জন্য সত্যিই আনন্দের। এখানে উল্লেখ্য, একটি শিল্পখাত যা গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্ট নির্ভর এবং দেশের ৯৮% ওষুধের চাহিদা মিটিয়ে ওষুধ রপ্তানীতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। শেষ করার আগে হসপিটাল গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের ভুমিকা নিয়ে কথা বলতে চাই। আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে, আমাদের দেশে বড় বড় বেসরকারী হাসপাতাল যেমন: এভারকেয়ার, ইউনাইটেড, স্কয়ার সহ অন্যান্য সুনামধন্য হাসপাতালে হসপিটাল ফার্মাসিস্ট বা ক্লিনিক্যাল ফার্মাসিস্ট কর্মরত আছেন। আসলে উন্নত দেশগুলোতে এটা নতুন নয়, যা আমি যুক্তরাজ্যের কথা আগেই উল্লেখ করেছি। এই সকল গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টরা তাদের ফার্মাকোলোজিক্যাল, টক্সিকোলোজিক্যাল, ফার্মাসিউটিক্যাল টেকনোলোজি, বায়োফার্মাসিটিকস্ সমৃদ্ধ জ্ঞান যা তারা তাদের বি ফার্ম/এম ফার্ম ক্লাসে শিখে আসেন এবং পরবর্তীতে ইন্টার্নি/  ইনপ্যাল্ট ট্রেনিং এর মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করে রোগীর স্বাস্থ্যসেবায় নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। রোগীর ওষুধ বিষয়ক জিজ্ঞাসা যেমন ডোজ বা মাত্রা, মাত্রার সমন্বয়, ওষুধ সেবনের নিয়মাবলী, ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সহ ওষুধের যাবতীয় নির্দেশাবলী রোগীকে দিয়ে থাকেন। সরকারী হাসপাতালগুলোতেও যদি গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টদেরকে হসপিটাল ফার্মাসিস্ট হিসাবে সঠিক নিয়োগ দেওয়া হয় সেই ক্ষেত্রে  আমাদের দেশের সকল স্তরের রোগীদের জন্য পরিপূর্ণ স্বাস্থ্য সেবা পাবার এক বিশেষ দিক উম্মোচন হবে। আশাকরি স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়সহ স্বাস্থ্যবিষয়ক নীতি নির্ধারকরা গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের  ভুমিকা বিশেষভাবে গুরুত্ব দিবেন। তাই এই বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবসে একটি কথাই বলতে চাই, “বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ছড়িয়ে দিতে এবং একটি পরিপুর্ন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের মুল্যায়ন করতে হবে এবং এদের জ্ঞান, শিক্ষা ও দক্ষতায় এদেশের ওষুধ শিল্পখাত যেমন উন্নতির শীর্ষে নিয়ে যাবে, ঠিক তেমনি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সর্বব্যপী ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। আর এটাই হচ্ছে বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবসের লক্ষ্য ও উদ্দ্যেশ্য।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2011-2025 VisionBangla24.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com