শুক্রবার, ১৮ Jul ২০২৫, ১০:৪১ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
রূপগঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা শেরপুরের শ্রীবরদীতে জাল সনদে শিক্ষকের উচ্চতর গ্রেড, বেতন ফেরতের নির্দেশ ভূয়া জুলাই যোদ্ধা গেজেটভূক্ত হওয়ায় নেত্রকোনায় সংবাদ সম্মেলন লালমনিরহাটে নার্সারী বাগান করে তরুণ উদ্যোক্তারা স্বাবলম্বী সৌদিতে মুদি দোকানে যেসব পণ্য বিক্রি নিষিদ্ধ হলো ‘চাঁদাবাজদের সামলান, না-হলে জনগণ ফ্যাসিস্টদের মতো বিতাড়িত করবে’ : বশিরুল্লাহ আবারো গোপালগঞ্জে যাব, গ্রামে-উপজেলায় কর্মসূচি করব: নাহিদ ইসলাম রাজশাহী নগরীতে মুজিবের মুছে দেওয়া ম্যুরালের সামনে নির্মাণ হচ্ছে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ ফের রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে সারাদেশের মেধাবৃত্তি পরীক্ষায় শীর্ষে মাধবপুরের তোহা, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল অর্জন
রাজশাহী নগরীতে মুজিবের মুছে দেওয়া ম্যুরালের সামনে নির্মাণ হচ্ছে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ

রাজশাহী নগরীতে মুজিবের মুছে দেওয়া ম্যুরালের সামনে নির্মাণ হচ্ছে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী নগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড়ে  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুছে ফেলা একটি ম্যুরালের পাদদেশে নির্মিত হচ্ছে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ।
এটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে গত রোববার (১৩) জুলাই। আগামী রোববারের (২০ জুলাই) মধ্যে কাজ শেষ করে ৫ আগস্ট সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য এটি উন্মুক্ত করে দিতে চায় রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-১।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তরের সামনেই জায়গাটি জেলা পরিষদের। ৫ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয়ে এখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ করে সিটি করপোরেশন। সিটি করপোরেশনে দাবি, এটিই দেশে শেখ মুজিবুর রহমানের সবচেয়ে বড় ম্যুরাল। নির্মাণ শেষে ২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ-ভারত পঞ্চম সাংস্কৃতিক মিলনমেলায় অংশ নিতে রাজশাহী এসে ম্যুরালটির উদ্বোধন করেন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল এবং তৎকালীন সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
ম্যুরালটির উচ্চতা ৫৮ ফুট, চওড়া ৪০ ফুট। ম্যুরালের সীমানাপ্রাচীরের দুই পাশে ৭০০ বর্গফুট টেরাকাটার কাজ করা হয়। এক পাশে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের লোকজ সংস্কৃতির নানা চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। টেরাকাটায় ছিল ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্যও। ল্যান্ডস্কেপিংয়ে গ্রানাইট দিয়ে সজ্জিত করা হয়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর এই ম্যুরালও আক্রান্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় টেরাকাটাও। তবে ম্যুরালটি ভেঙে ফেলা যায়নি। পরে গেল ফেব্রুয়ারিতে ম্যুরাল থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি সাদা রং দিয়ে ঢেকে ফেলা হয়। প্রতিকৃতি ছাড়া ম্যুরালটি এখনো দাঁড়িয়ে রয়েছে।
নগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, ম্যুরালের পাদদেশে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। পেছনে দাঁড়িয়ে প্রতিকৃতি মুছে ফেলা ম্যুরাল। ম্যুরালের নিচের অংশে রয়েছে আঘাতের চিহ্ন। দুপাশে সীমানাপ্রাচীরের সঙ্গে থাকা টেরাকাটার কিছু অংশ তুলে ফেলা হয়েছে। ওপরের অংশে লেখা, ‘জালেমের ওপর অভিশাপ’।
সেখানে ছিলেন ঠিকাদারের ব্যবস্থাপক মো. সোহান। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম জানতে চাইলে বলেন, লেখেন মুনলাইট এন্টারপ্রইজ।’ এরপরই তিনি বলেন, এই নামটা কেটে দেন। এখনো টেন্ডার হয়নি। জরুরি ভিত্তিতে কাজ করতে হচ্ছে। নির্মাণ কাজে কি পরিমাণ খরচ হবে তা জানা যায়নি।
রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম জানান, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়। এর ভিত্তিতে দেশের ৬৪ জেলায় এটি নির্মাণ করা হচ্ছে। জুলাইয়ের মধ্যে দ্রুত শেষ করার জন্য কাজ হচ্ছে ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্ট মেথডে (ডিপিএম)। এটি নির্মাণ করতে ১২ লাখ টাকার মতো খরচ হবে।
তিনি জানান, রাজশাহীর জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভটি হবে ১৮ ফুট উচ্চতার। গণ-অভ্যুত্থানে রাজশাহীর যতজন শহীদ হয়েছেন, তাঁদের নাম লেখা থাকবে এর ওপরে। গেজেট থেকে তাঁরা পাঁচজনের নাম পেয়েছেন। এ ছাড়া জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের জনপ্রিয় সব স্লোগান লিখে দেওয়া হবে স্মৃতিস্তম্ভে। ২০ জুলাইয়ের মধ্যে কাজ শেষ করে আগামী ৫ আগস্ট সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁরা স্মৃতিস্মম্ভটি উন্মুক্ত করে দিতে চান। স্থান নির্বাচনের বিষয়ে প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম জানান, স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের নির্দেশনা পাওয়ার পর বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসেছিলেন। আলোচনায় কয়েকটি স্থানের কথা উঠে আসে। তবে সিঅ্যান্ডবি মোড়ের এই স্থানই চূড়ান্ত হয়
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ও সম্প্রতি ঘোষিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী মো. নাহিদুল ইসলাম (সাজু) বলেন, এই জায়গাটি রাস্তার পাশে, এখানে নির্মাণ করা হলে মানুষের চোখে সহজেই পড়বে। এ কারণে সবাই এই জায়গাটিকেই নির্বাচন করেছেন। এখানে থাকা শেখ মুজিবের ম্যুরালটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ওই জায়গায় যদি এটি নির্মাণ না করা হয়। এটি সরকারি জায়গা। এটি পড়েই থাকবে। কোনো কাজে লাগবে না। নষ্ট হয়ে যাবে। আমরা আন্দোলনের জায়গা হিসেবে নগরীর তালাইমারী থেকে আলুপট্টি পর্যন্ত জায়গা দেখেছি। কিন্তু তেমন ভালো জায়গা পাইনি। যদিও এটি বিতর্কিত জায়গা। জায়গাটি ভেঙে ফেলে এটি নির্মাণের কথা। আবার সময়ের স্বল্পতাও আছে। এ কারণে হয়তো পরে সেটি ভেঙে ফেলা হবে।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার বলেন, ‘সর্বসম্মতিক্রমে জায়গাটি নির্বাচন করা হয়েছে। আমরা কয়েকটি জায়গা নির্বাচন করেছিলাম। তারপর আসলে জুলাই যোদ্ধা যারা ছিলেন, তারা এই জায়গাটি নির্বাচন করেছেন। তারা এটি পছন্দ করেছেন।’

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com