নিজস্ব প্রতিবেদক: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৭তম জন্মজয়ন্তী আজ। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের এই দিন, পঁচিশে বৈশাখে কলকাতার বিখ্যাত জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপুরুষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর-সারদা দেবী দম্পতির চতুর্দশ এই সন্তান বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেন বাংলা ভাষা ও জাতিসত্ত্বাকে।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের রচিয়তা রবি ঠাকুরের ১৫৭তম জন্মজয়ন্তী বরাবরের মতোই সারাদেশে আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপিত হবে। দেশের বেশ কিছু সংগঠনসহ রাষ্ট্রীয়ভাবে এ দিনটি বিশেষভাবে পালন করা হবে।
রবীন্দ্রনাথের রচনা সম্ভার বিপুল, বৈচিত্র্যময়। সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় নিপুণভাবে কলম চালিয়েছেন কবিগুরু।
তার কবিতা, ছোটগল্প, নাটক, সংগীত, ভ্রমণ, প্রবন্ধ, শিশুতোষ রচনা, পত্রসাহিত্য বাঙালি ঐতিহ্য পালনে অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করে।
এ মানুষটি সাহিত্য-সংস্কৃতির বাইরেও তার কীর্তি রেখেছেন সাংগঠনিক ও সামাজিক কাজে। প্রবর্তন করেন কৃষিঋণ-ব্যবস্থা। শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে রয়েছেন তার অনন্য প্রতিষ্ঠান বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়।
তার সৃষ্টির স্বীকৃতি হিসেবে ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলী কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি পান নোবেল পুরস্কার।
রবীন্দ্রনাথের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সোমবার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যের একজন দিকপাল, উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার কালজয়ী লেখায় একদিকে ঋদ্ধ হয়েছে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, অন্যদিকে তা বিশ্বসাহিত্যের অপরিহার্য উপাদানে পরিণত হয়েছে আপন বৈভব, আঙ্গিক, বহুমাত্রিকতা আর সর্বজনীনতায়।
তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ রচিত ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ আমাদের জাতীয় সংগীত। এই গান জাতীয় ঐক্য ও সম্প্রীতির স্মারক। যেকোনও দুর্যোগ-সংকট, আনন্দ-বেদনায় রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যসম্ভার শক্তি ও সাহস জোগায়। তার সাহিত্যপাঠে আমরা আনন্দিত হই-আন্দোলিত হই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ও বাঙালির অহংকার, বিশ্বসাহিত্যের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র। অসাধারণ সব সাহিত্যকর্ম দিয়ে তিনি বিস্তৃত করেছেন বাংলা সাহিত্যের পরিসর।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ২৪ বছরের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রবি ঠাকুরের লেখনী আমাদের উজ্জীবিত করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তার (রবীন্দ্রনাথ) জাতীয়তাবোধ বাঙালির অনন্ত প্রেরণার উৎস। কবির প্রতি অন্তহীন ভালোবাসায় ১৯৬১ সালে পাকিস্তানি শাসকচক্রের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আমরা রবীন্দ্র জন্মশতবর্ষ উদযাপন করেছি।