মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শিশুদের অধিকার নিশ্চিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন এবং বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে তাদের ভেতরকার সম্ভাবনা বিকাশে সহায়তা করতে বিশিষ্টজন, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রসহ সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আজ বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা-২০১৮ অনুষ্ঠানে বলেন, শিশুরা যাতে কুসংস্কার ও ধর্মীয় উগ্রবাদ থেকে মুক্ত থাকতে পারে তার জন্য তাদের (শিশুদের) শিক্ষা পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি শিশুদের মধ্যে দেশপ্রেম, নৈতিক মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও আন্তরিকতা সৃষ্টি এবং তাদের বেশি করে বই পড়া, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, শিল্পকলা ও সাহিত্য সম্পর্কে জানা এবং অন্য পাঠ্য বহির্ভূত কার্যক্রম বিষয়ে অনুপ্রাণিত করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
শিক্ষা জীবনের একেবারে শুরুতেই বিভিন্ন প্রতিযোগিতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি শিশুদের পড়াশোনা অথবা অন্য কোন বিষয়ে চাপ সৃষ্টি না করে বরং বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করে তাদের বিকশিত হওয়ার সুযোগ দেয়ার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, এই অশুভ ও অসম প্রতিযোগিতা শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে।
শারিরীক প্রতিবন্ধী শিশুদের সমাজে অবিচ্ছেদ্য অংশ উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, তাদের বোঝা মনে করা যাবে না এবং সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনার তাদের সহায়তা করতে হবে- সকল পর্যায়ে তাদের মানসিক বিকাশের সুযোগ দিতে হবে।
তিনি তাদের (শারিরীক প্রতিবন্ধীদের) সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং তাদের মূল্যবান মানব সম্পদ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, শিশুদের সুষ্ঠু বিকাশ প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার জন্য সহায়ক।
রাষ্ট্রপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন অনুযায়ী বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জাতির জনক শিশুদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের অংশ হিসেবে জাতীয় শিশু আইন-১৯৭৪ প্রণয়ন করেছিলেন।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের অত্যন্ত ভালবাসতেন। তিনি তাদের নিয়ে সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবান করতে চেয়েছিলেন।
পরে রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন বিষয়ে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার ও পদক বিতরণ করেন।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ক্রীড়া, সৃষ্টিশীল নৃত্য, সঙ্গীত, অভিনয়, হামদ, নাত, কবিতা পাঠ, কিরাত, ছড়া গান, গল্পবলা, চিত্রাংকন ও নৃত্যসহ ২৮টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, এই মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান ও উপন্যাসিক সেলিনা হোসেন এবং পরিচালক আনজির লিটন বক্তৃতা করেন।
এতে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রেবেকা মোমিন এমপি।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শিশু একাডেমিতে শিশুদের পরিবেশিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও উপভোগ করেন।