শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৭:৪৯ পূর্বাহ্ন

যেভাবে গ্রেপ্তার হন ওসি মোয়াজ্জেম

যেভাবে গ্রেপ্তার হন ওসি মোয়াজ্জেম

নিজস্ব প্রতিবেদক: গুজব ছিল তিনি পালিয়ে গেছেন। তবে পুলিশ ও সরকারের ঊর্ধ্বতনেরা বলে আসছিলেন তাকে শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে। অবশেষে আজ রোববার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলো। তিনি আর কেউ নন, বহুল আলোচিত ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন।

থানায় অভিযোগ করতে আসা ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির সঙ্গে কথোপকথনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন ওসি মোয়াজ্জেম। এ ঘটনায় করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।

গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশ সূত্র জানায়, ওসি মোয়াজ্জেম গতকাল শনিবার রাতে তাঁর এক আত্মীয়ের বাসায় ছিলেন। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় হাইকোর্টে গেলে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

মোয়াজ্জেমের দূর সম্পর্কের আত্মীয় খায়রুল ইসলাম জানান, জামিনের জন্য মোয়াজ্জেম এসেছিলেন আদালতে। পরে শুনানির তারিখ পিছিয়ে কাল সোমবার দিলে পুলিশ মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তার করে বিকেল চারটায়। উল্লেখ্য, এর আগে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় আইনজীবির মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেছিলেন মোয়াজ্জেম।

আজ বেলা পাঁচটার দিকে রমনা জোনের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার তাঁর কার্যালয়ে সাংবাকিদকের জানান, হাইকোর্টের কদম ফোয়ারার কাছে থেকে মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তার হয়।

মারুফ সর্দার বলেন, তাঁকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি সোনাগাজী থানাকে জানানো হয়েছে। যেহেতু ওই থানায় গ্রেপ্তারের পরোয়ানা আছে, সে জন্য তাদের কাছে তাঁকে হস্তান্তর করা হবে। এরপর তারা ঠিক করবেন কোন আদালতে ওঠাবেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল গত ২৭ মে পরোয়ানা জারি করেন। ৩১ মে পরোয়ানার চিঠি ফেনীর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পৌঁছায়। কিন্তু পুলিশ সুপার কাজী মনির-উজ-জামান বারবার বিষয়টি অস্বীকার করতে থাকেন। একপর্যায়ে ৩ জুন রাতে পরোয়ানা হাতে পাওয়ার কথা স্বীকার করেন তিনি। এর দুই দিন পর বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে পরোয়ানা রংপুর রেঞ্জে পাঠানো হয়। তখন আবার রংপুর রেঞ্জ বলেছে, কাজটি বিধি মোতাবেক হয়নি।

পুলিশের এই গড়িমসির সুযোগে মোয়াজ্জেম হোসেন সটকে পড়েন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাঁর মুঠোফোনটিও এক পর্যায়ে বন্ধ পাওয়া যায়। মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সাইয়েদুল হক।

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে গত ৬ এপ্রিল পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেন তাঁর মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। এর ১০ দিন আগে নুসরাত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যান। থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন সে সময় নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তা ভিডিও করে ছড়িয়ে দেন। ওই ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে আদালতের নির্দেশে সেটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পিবিআই গত ২৭ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে ওই দিনই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com