বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২৪ অপরাহ্ন

আশুলিয়ায় দি মিলেনিয়াম স্টারস্ স্কুল এণ্ড কলেজের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ

আশুলিয়ায় দি মিলেনিয়াম স্টারস্ স্কুল এণ্ড কলেজের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ

শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড, যে জাতি যত শিক্ষিত সে জাতি তত উন্নত, আমাকে তোমরা শিক্ষিত মা দাও আমি তোমাদের শিক্ষিত জাতি দেব ।

এমন অসংখ্য বাক্য স্কুল-কলেজের দেয়ালে। চাকচি্ক্কে চোখ ধাধানো সব বাহ‍ারী রঙের আল্পনা। মাষ্টার বাবুদের পড়নে স্যুট , গায়ে কোট, গলায় বাধা টাই। শিক্ষিকাদের শাড়িগুলোও দামি।

পিএসসি, জেএসসি পরিক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা ছাত্রছা্ত্রীদের ছবি তুলে স্কুলের সামনে কৃতি শিক্ষার্থীদের ব্যানার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করা মাত্রই মনে হবে কোনো শিক্ষার স্বর্গরাজ্যে পা রাখলাম। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নামেও আছে চমক। লেখা পড়া যেমন তেমন অবিভাবকদের দৃষ্টি আকর্ষণ বড় কথা।

শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার প্রতিটি পাড়া মহল্লায় ব্যাঙের ছাতারমত গড়ে উঠেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতারা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে শিক্ষা সেবার নামে অবাদে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অর্থ বানিজ্য। অনেকে আবার অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখা পড়া করলেও পালন করছেন প্রধান শিক্ষকের মতো মহান দায়ীত্ব। শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক ভর্তি হতে হবে , নিজেদের পরিচালিত কোচিং সেন্টার অথবা ডে-কেয়ারে।

এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অসাধু মালিকরা। যার দরুন সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আর দেশের আগামী ভবিষ্যত শিশু কিশোররা বঞ্চিত হচ্ছে সুশিক্ষা থেকে। তৈরী হচ্ছে বিবেক-সামাজিকতা বর্জিত ‍তরুণ প্রজন্ম। ‍আর ‍এতে দিশেহারা হয়ে পরছে অবিভাবকরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,  আশুলিয়া মধ্যে গাজিরচট সোনিয়া মার্কেট এলাকায় “দি মিলেনিয়াম স্টারস্ স্কুল এন্ড কলেজ” প্রধান ফটকের সামনে বড় ব্যানারে এ + এবং জিপিএ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ছবি। খোঁজনিয়ে জানা যায় ব্যানারে ছবি থাকা ছাত্রছাত্রী অনেকেই পরিক্ষায় উত্তির্ণ হতে পারে নাই।

“দি মিলেনিয়াম স্টারস্ স্কুল এন্ড কলেজে” পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার ( ইমা ) জানায়, পরিক্ষায় উত্তীর্ন হওয়ার পর আবার নতুন করে ভর্তি হতে হয় এবং ভর্তির সাথে সাথে কোচিং ভর্তির ফরমও পূরণ করতে হয়। ভর্তি বাবদ এক হাজার টাকা আর কোচিং বাবদ ২৫০০-৩০০০ হাজার টাকা দিতে হয়।

একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্র ইমন হোসেন জানায়, নবম শ্রেণীতে পরিক্ষায় উত্তীর্ন হওয়ার পরও দশম শ্রেণীতে ভর্তির সময় একই পন্থা অবলম্বন করতে হয়েছে। ইমন আরো জানায় যে, এসএসসি পরিক্ষায় প্রস্থতি নেওয়ার জন্য ফরম পূরণের মাধ্যমে শিক্ষা বোর্ডে তালিকাভুক্ত হতে ১০ হাজার টাকা প্রধান শিক্ষকের কাছে দিয়েছে তাঁর বাবা।

ইমনের বাবা ইকবাল হোসেন জানায়, এসএসসি পরীক্ষার প্রস্ত‍ুতি নেয়ার জন্য অন্যান ছাত্রছাত্রীদের নাম তালিকা বোর্ডে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু ইমনের নাম এখন পযর্ন্ত শিক্ষা বোর্ডে তালিকাভুক্ত হয়নি বলে জানিয়েছে ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম শফিক।

এলাকাবাসী আক্ষেপ করে বলেন, শফিক নিজেই ৮ম-৯ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া জানে সে কি ভাবে প্রধান শিক্ষক হয়। সে ছিল জুট ব্যাবসায়ীদের ভাড়া করা সন্ত্রাস সে শিক্ষাই বা কি দিবে ছেলে মেয়েদের।

“মিলেনিয়াম স্টারস্ স্কুল এন্ড কলেজের” প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম শফিকের সাথে কথা হলে তিনি অপকটে শিকার করে বলেন,দশম শ্রেণীর ছাত্র ইমনের বোর্ড তালিকায় নাম না থাকার কারণ হলো ভূলবশত নামটি বোর্ডে পাঠানো হয়নি। তবে সংশোধন করে নিয়ে আসা যাবে।

কোচিং এর ব্যাপারে তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীদের মেধা সম্পন্ন করে তুলতে হলে কোচিং এর প্রয়োজন আছে।প্রধান শিক্ষক শফিক আরো বলেন, বিভিন্ন সমস্যার কারণে তিনি এসএসসি পরিক্ষা দিতে পরেনি। তবে তার নিজের যোগ্যতা বলে ২০১৫ সালে স্কুল এবং কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।

এবিষয়ে সাাভার উপজেলা শিক্ষা অফিসার তাবসিরা ইসলাম লিজা বলেন, সরকারীভাবে কোচিং একেবারে নিষিদ্ধ রয়েছে। তাছাড়া নন এসএসসি কোনো ব্যাক্তি কোনোভাবেই প্রধান শিক্ষক হতে পারে না। লিখিত কোনো অভিযোগ পেলে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

-আশুলিয়া থেকে জাহাঙ্গীর আলম প্রধান 

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com