মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৩ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো তৃণমূল প্রতিনিধিদের পর এবার রাহুল-প্রিয়াঙ্কা। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং এনআরসি ইস্যুতে প্রতিবাদী আন্দোলনে পীড়িতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চেয়ে বাধা পেতে হল বিরোধীদের। গত রবিবার লখনউতে যেতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারের পুলিসের বাধা পেয়েছিল তৃণমূল। আজ মিরাটে রাহুল, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে আটকে দিল যোগীরাজ্যের পুলিস। যা নিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাঁধল। কেন তাঁদের আটকানো হচ্ছে, তা নিয়ে দুই নেতানেত্রীর সঙ্গে পুলিসের তর্কবিতর্ক বাঁধল।
পুলিস স্পষ্ট জানিয়ে দিল, ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। পাল্টা রাহুল বলেন, আমরা তো দু’জন যাব। এতে তো ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন হচ্ছে না। তাহলে কেন যেতে দেওয়া হবে না? এরপরেই মিরাট পুলিস কিছুটা হুমকির সুরে তাঁদের সতর্ক করেন বলে অভিযোগ। রাহুল-প্রিয়াঙ্কাকে পুলিস জানিয়ে দেয়, পরিস্থিতি ঠিক নেই। তাই বাইরের ভিড় বাড়ানো উচিত নয়। তবে এরপর ওখানে গিয়ে কোনও অশান্তি হলে আপনারা দায়ী থাকবেন।
কিন্তু কেন এভাবে স্বাধীন ভারতে উত্তরপ্রদেশ পুলিস পথ আটকাল, তা নিয়ে সওয়াল খাড়া করেছে কংগ্রেস। দলের অন্যতম দুই শীর্ষ নেতাকে এভাবে আটকে দেওয়ায় পাঞ্জাবের অমরিন্দর সিং, রাজস্থানের অশোক গেহলট, ছত্তিশগড়ের ভূপেশ বাঘেলের মতো কংগ্রেসি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা প্রতিবাদে সরব হয়েছেন।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং এনআরসি নিয়ে আন্দোলনে দেশ উত্তাল। সরকার বিরোধী প্রতিবাদে শামিল হয়ে উত্তরপ্রদেশে প্রায় ১৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে গত রবিবার উত্তরপ্রদেশের বিজনোরে গিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। পুলিস প্রিয়াঙ্কার ওই কর্মসূচিতে কোনও বাধা দেয়নি বলেই কংগ্রেসই জানিয়েছে।
কিন্তু আচমকা আজ বদলে গেল ছবিটা। গতকাল রাজঘাটে দলের আয়োজনে সত্যাগ্রহ সভার পর এদিন সকাল সাড়ে ১১টার সময় দিল্লি থেকে গাড়িতে মিরাট রওনা দেন রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা। সঙ্গে ছিলেন উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন এমপি প্রমোদ তিওয়রি। দিল্লি ছাড়িয়ে গাজিয়াবাদ পেরিয়ে আরও এগনোর পর মোদি নগরে তাঁদের আটকে দেয় মিরাট পুলিস। কংগ্রেস নেতানেতত্রীদের জানিয়ে দেওয়া হয়, যেতে পারবেন না। পুলিসের নিষেধাজ্ঞায় হতবাক হয়ে যান প্রিয়াঙ্কা। বলেন, ররিবার বিজনোর গিয়েছি। কিছু তো হয়নি। পুলিস তো বাধা দেয়নি। তাহলে আজ কী হল?
পুলিসকে রাহুল বলেন, আমরা তো কোনও বিক্ষোভ বা প্রোগ্রাম করতে যাচ্ছি না। স্রেফ পীড়িতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাব। প্রয়োজনে তিনজনে না গিয়ে দুজন যাব। তাহলে আটকাচ্ছেন কেন? আমরা তো ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করছি না। কিন্তু মিরাট পুলিস কোনওভাবেই এগনোর অনুমতি দেয়নি। পরে দিল্লি ফিরে প্রমোদ তিওয়ারি বলেন, তবে আমরা ফের যাব বলেই রাহুলজি পুলিসকে জানিয়ে দিয়ে এসেছেন। পুলিসও আশ্বাস দিয়েছে, আগামী শুক্রবারের পর যেকোনও দিন মিরাটে যেতে পারবেন। যদিও কেন শুক্রবারের পর, তা নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা দিতে চায়নি যোগী আদিত্যনাথের পুলিস।