বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০৫:১৫ পূর্বাহ্ন
নীলফামারী থেকে মোঃ ইব্রাহিম আলী সুজনঃ
নীলফামারীতে এলপিজি গ্যাসের (লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) দাম বাড়ায়
বিপাকে পড়েছে ভোক্তরা। জেলার সৈয়দপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের বিসিক সংলগ্ন
ওয়েলডিং ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান জানান, গত মাসের তুলনায় প্রতিটি
সিলিন্ডার (১২ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা বেশী দরে।
তিনি বলেন, পরিবারের রান্নাসহ অন্যান্য জ্বালানী কাজে ব্যবহৃত ওই গ্যাসের
হঠাৎ দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছে ভোক্তাসহ ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে, গ্যাস
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় বেশী দামে কিনতে হচ্ছে।
একারণে কিছু লাভ রেখে বিক্রি করতে হচ্ছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারী) সকালে বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে ১২ কেজি ওজনের
বিভিন্ন কোম্পাণীর এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে এক হাজার একশ
টাকা থেকে এক হাজার ১৫০ টাকা পর্যন্ত। গত মাসের (ডিসেম্বর) ৩১ তারিখ
পর্যন্ত সমপরিমান গ্যাসের দাম ছিল ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা পর্যন্ত। যা পূর্বের
তুলনায় প্রতি সিলিন্ডারের দামের বর্তমান পার্থক্য ১৫০ থেকে ২০০ টাকা
পর্যন্ত। জেলা শহরের বড় বাজারের মামা ভাগিনা হোটেলের মালিক ভঞ্জন কুন্ডু
জানান, সাতদিন আগে ৪৫ কেজি ওজনের একটি সিলিন্ডার তিন হাজার ৭০০ টাকায়
নিয়ে ছিলাম। আর গতকাল রবিবার (৫ জানুয়ারী) একই সিলিন্ডার তিন হাজার ৯০০
টাকায় কিনতে হয়েছে। এক সপ্তাহে ২০০ টাকার ব্যবধান। এ রকম হলে হোটেল
ব্যবসা একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে।
বাড়িতে রান্নার জ্বালাণীর জন্য গ্যাস কিনতে এসেছিলেন জেলা শহরের নিউবাবু
পাড়ার গৃহিণী আলেয়া বেগম (৫৫) বলেন,“একই সিলিন্ডার আগে কিনেছিলাম ৯০০
টাকায়। আজকে সেটি ১৮০ টাকা বেশী দিয়ে কিনতে হলো”।
সৈয়দপুর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের প্রভাষক সুলতানা নাসরিন বলেন,
“পেঁয়াজ, ভোজ্য তেল, আদা, রসুনসহ নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের দাম
বাড়ার পর এবার গ্যাসের দাম বাড়লো। এতে আমরা স্বল্প আয়ের মানুষ বিপাকে
পড়ছি”। একের পর এক বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছে ভোক্তরা।
জেলা শহরে মানিকের মোড়ের গ্যাসের খুচরা বিক্রেতা মনিরুজ্জামান বলেন, ১
জানুয়ারী থেকে পরিবেশকরা দাম বাড়িয়েছে। তাই বেশী দামে কিনছি বলেই আগের
তুলনায় বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাতে আমাদের বিনিয়োগের পরিমান
বাড়লেও লাভ বাড়েনি”।
এ ব্যাপারে, শহরের বসুন্ধরা ও যমুনা এলপিজি গ্যাসের পরিবেশক চিত্ত রঞ্জন
সরকার বলেন, ‘চলতি মাসের এক তারিখ থেকে বিভিন্ন কোম্পাণী গ্যাসের দাম
বাড়ায়। একারনে বাড়তি দামে আমাদেরকে উত্তোলন করে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে
বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে আমাদের করার কিছু নেই। তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক
বাজারে মূল্য বৃদ্ধির কথা কোম্পাণী থেকে আমাদেরকে জানানো হয়েছে”।
জেলা মার্কেটিং ও এলপিজি গ্যাস নিয়ন্ত্রন কমিটির সদস্য সচিব এটিএম এরশাদ
আলম খাঁন জানান, বর্তমানে এলপিজি গ্যাস নিয়ন্ত্রন করেন জেলা প্রশাসন। এ
ব্যাপারে, তারাই (জেলা প্রশাসন) ভাল বলতে পারবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও এলপিজি গ্যাস নিয়ন্ত্রন কমিটির
আব্বায়ক আজাহারুল ইসলাম বলেন, “এলপিজি গ্যাস বাজারে বিক্রির নির্ধারিত
মূল্য আছে। বর্তমানে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কিনা সে বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া
হচ্ছে। দাম না বাড়লেও বেশী দামে বিক্রি করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া
হবে”।