মোঃ জহিরুল ইসলাম সবুজ, আগৈলঝাড়া:
প্রায় একযুগ ধরে আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরে হোটেল ব্যাবসা করে আসছেন। সেই আয়ে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কোনো রকমে খেয়ে পরে দিন কাটছিল। তবে করোনাভাইরাসের প্রকোপে জীবন থমকে যাওয়ার সঙ্গে কাশেমের ব্যাবসা থেমে গেছে। ঘরে বসে থাকলে পেট চলে না। তাই ভ্যান ভারায় নিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছেন হোটেল ব্যাবসায়ী কাশেম। এখন সে ভ্যান চালক।
করোনায় বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে প্রিয়জনদের নিয়ে টিকে থাকার প্রয়োজনে নিজের পেশা বদল করেছেন কাশেম। কাশেমের মতো এমন অনেক শ্রমজীবী নিজেদের পেশা এবং ব্যবসায়ের ধরন পাল্টে টিকে থাকার লড়াই করছেন।
গতকাল শুক্রবার আগৈলঝাড়া উপজেলার বিড়িভন্ন এলাকা ঘুরে কথা হয় এমন কিছু শ্রমজীবীর সঙ্গে।
চৈত্রের দুপুরে ভ্যান হাতে উপজেলা সদরের বিভিন্ন সড়কে ভ্যান চালিয়ে ক্লান্ত কাশেম জানান. করোনার ভয়ে মানুষ বাইরের খাবার বাদ দিয়েছে। গত ২৩ মার্চ থেকে হোটেল বন্ধ হওয়ার পর ঘরে বসেই কাটিয়েছেন। তবে সঞ্চয়ের টাকা শেষ হওয়ায় আর ঘরে থাকা যায়নি। তাই ভ্যান ভারা করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভ্যান চালানো শুরু করেছি। আগে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার টাকা আয় ছিল। এখন আয় দুই শ থেকে আরাই শ টাকা। এই আয়ে সংসার না চললেও জীবন বাঁচবে।

করোনার ভয় আছে কাশেমের। তবে এর চেয়ে বড় ভয় ক্ষুধার। কাশেমেন ভাষায়, ‘করোনার ভয় আছে, তারচেয়ে বড় ভয় খিদার। পেট তো আর করোনা বুঝে না। যেই হাতে ব্যাবসা কইরা খাইছি, ওই হাতে সাহায্য চাওয়াও সম্ভব না। তাই একটা কিছু করতেই হয়। যতদিন হোটেল ব্যাবসা চালু করতে না পারছি তত দিন প্রর্যন্ত ভ্যান চালিয়েই সংসার চালাবেন তিনি।
কাশেমের মতো নিজের পেশা বদলেছে আরেক যুবক মিজান. সে ঠিকই জানে, মানুষজন না বের হলে কেনাবেচাও জমবে না। তাই কাপরের দোকান বন্ধ করে দিয়ে বাজারে বসে মাস্ক বিক্রি শুরু করেছেন। এমন পেশা বদলের পাশাপাশি ব্যবসায়ের ধরনও পাল্টেছে অনেক শ্রমজীবীর।