সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩২ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট: বিশ্ব যখন করোনাভাইরাস থেকে মানুষ বাঁচাতে ব্যস্ত, তখন আরেক শ্রেনীর মানুষ মরতে বসেছে ক্ষুদার জ্বালায়। ফলে দ্রুত যদি ব্যবস্থা নেয়া না যায় তবে ভয়াবহ দূর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বজুড়ে। এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (ডব্লিউএফপি) এক প্রতিবেদনে।
সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিজলে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘কভিড-১৯ যে হুমকি তৈরী করেছে তাতে মানুষ বহুমাত্রিক দূর্ভিক্ষে পড়তে পারে। এতে দৈনিক ৩ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে। যা হবে ‘ক্ষুধার মহামারি’।’ এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে ৮২ কোটি ১০ লাখ মানুষ। যদি আমরা তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারি। মানুষের খাদ্যের ব্যবস্থা ও বাধাহীন বাণিজ্য নিশ্চিত করতে না পারি তাহলে এর পরিণতি হবে একটি মানবিক বিপর্য। যা কয়েক মাসের মধ্যেই ঘটতে পারে।’
বিজলে বলেন, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোতে কয়েক কোটি মানুষ রয়েছে।রয়েছে লাখ লাখ নারী ও শিশু। তারা ক্ষুধায় দিন কাটাচ্ছে, ফলে একটি দূর্ভিক্ষ অনেক বেশি বাস্তব হয়ে ধরা দিচ্ছে।’
ডব্লিউএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের ৫৫ দেশ যারা নিজেরা মোটামুটি চলতে পারে। সে সব দেশে ১৩ কোটি মানুষ রয়েছে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায়। যা সংকট পর্যায়ের। কিন্তু করোনাভাইরাস সেই সংকট আরো বাড়িয়ে তুলেছে। বন্ধ রয়েছে অবাধ বাণিজ্য এবং মানুষের জীবিকা। ফলে করোনাভাইরাস থেকে মানুষকে বাঁচাতে গিয়ে সে সব মানুষ মারা যাবে ক্ষুধায়। অর্থাৎ দূর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বজুড়ে।
বিশ্বেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস এ বিশ্বকে বিপর্যয়ের কোন প্রান্তে নিয়ে যায় তা বলা মুশকিল। কারণ এটি এমন একটি অদৃশ্য শত্রু যা খুব সহজে বিদায় নেবে না। যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনা দীর্ঘমেয়াদে থাকবে। অর্থাৎ হাজার হাজার মৃত্যু এখন আমাদের প্রতিদিনের পরিচিত সংখ্যা হয়ে উঠছে। অন্যদিকে লকডাউনে খাদ্য সংকট নিন্মবিত্ত ছাড়িয়ে এখন মধ্যবিত্তকে ছুঁয়েছে। আইএলও’র হিসাব অনুযায়ী বিশ্বে ২০ কোটির ওপর বেকার বাড়ছে। শ্রমশক্তির ৮১ শতাংশ বা ৩৩০ কোটি মানুষের কাজ পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ।
ডব্লিউএফপি জানায়, সবচেয়ে বেশি খাদ্য ঝুঁকিতে রয়েছে বিশ্বের পাঁচ দেশ। এর মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে ইয়েমেন। বর্তমানে দেশটিতে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ১ কোটি ২০ লাখ। ফলে দেশটির জন্য জরুরিভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন। বেশি ঝুঁকিতে থাকা বাকী দেশগুলো হচ্ছে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো (ডিআরসি), ভেনেজুয়েলা, দক্ষিণ সুদান এবং আফগানিস্তান।
সূত্র: বিবিসি, ডব্লিউএফপি