শুক্রবার, ১২ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪১ পূর্বাহ্ন

আগৈলঝাড়ায় হোমিও চিকিৎসায় জীবন উৎসর্গ করতে চান মানবিক ডাঃ সুকুমার মজুমদার

আগৈলঝাড়ায় হোমিও চিকিৎসায় জীবন উৎসর্গ করতে চান মানবিক ডাঃ সুকুমার মজুমদার

আগৈলঝাড়া প্রতিনিধিঃ দুঃখবুঝে দুঃখী মানুষের পাশে থাকতে পারাটাই হয়তো ভাগ্যের ব্যাপার। সমাজের ক’জন মানুষের সে ভাগ্য হয়। সবাই রাষ্ট্র, সমাজ, পরিবার ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ব্যস্ত। অথচ অসহায়, দরিদ্র ও রোগাক্রান্ত মানুষের মুখে একঝলক হাসি দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে থাকে কিছু মানুষের অন্তর। রাতের শান্তির ঘুমটা বিসর্জন দিয়ে দীপ্ত আলোর নিশান হাতে বার বার তারা ছুটে যান দুঃখী মানুষের পাশে। তারা ভাবেন মানবসেবা করার জন্যই হয়তো এই পৃথিবীতে তাদের আগমন ঘটেছে। এমনি একজন মানুষ ডাঃ সুকুমার মজুমদার। বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার এক অজপাড়াগাঁয় জন্ম তার। ছাত্র জীবন থেকেই মানবসেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে এক বিস্ময় তৈরি করেছেন তিনি। করোনা কালে দরিদ্র মানুষের দারে দারে গিয়ে চিকিৎসা করে হয়ে উঠেছেন মানবিক ডাক্তার।

দরিদ্রতাকে জয় করে বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ থেকে এম.এ পাশ করে বরিশাল এপেক্স হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে ডাক্তারী পাশ করে মানব সেবায় কাজ শুরু করে। সেই ছেলেটি আজ মানবিক ডাক্তার নামে পরিচিত। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের যে কোনো সমস্যায় তিনি এগিয়ে যান তার সর্বস্ব নিয়ে। অসুস্থদের চিকিৎসা দিতে রাতের আধারে ছুটে যান ঔষধ নিয়ে অসহায় দরিদ্র পরিবারের বাড়িতে। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক কাজের মধ্যেই নিজের প্রশান্তি খুঁজে নিয়েছেন। এলাকার মানুষদের কাছে মানবিক ডাক্তার হিসেবেই পরিচিত তিনি। চোখের সামনে কোনো মানবিক বিপর্যয় দেখলেই ছুটে যান সেখানে।

ডাঃ সুকুমার মজুমদার ১৯৬৯ সালের ১২ জুলাই বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের পশ্চিম বাগধা গ্রামের একটি নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের পর থেকেই শুরু হয় সংগ্রামী জীবনের। কঠোর পরিশ্রম করে নিজের পড়া-লেখার খরচ নিজেই চালিয়েছেন। ঠিক তখন থেকেই প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য কিছু করতে হবে। সেই প্রতিজ্ঞা থেকেই আজ একের পর এক ভালো কাজ করে চলেছেন।

বর্তমানে করোনাভাইরাস আতঙ্ক গোটা বিশ্বে। এই মরণঘাতী ভাইরাস মোকাবেলায় কার্যত এখনও পর্যন্ত ঔষধ বা ভ্যাকসিন তৈরিতে অক্ষম চিকিৎসক-বিজ্ঞানীরা। চীনে করোনাভাইরাসের আক্রমনে যখন দিশেহারা তখন এই অজপাড়াগাঁরে এই হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক তার ফেইচবুকে এক স্টাটার্চে লিখেছিলেন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় করোনা প্রতিরোধ করা যাবে। ঔষধের নাম লিখে ছিলেন আর্সেনিকাম অ্যালবাম ৩০ ((Arsenicum album 30) ) এই ভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় আজ তা প্রমানিত।

বাংলাদেশে করোনা দেখা দিলে ডাঃ সুকুমার মজুমদার এঅঞ্চলের মানুষের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সাধারন মানুষকে ঔষধ বিনামুল্যে সেবন করান। তারপর থেকে তিনি আর বসে নেই। সরকারী বে-সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিজে গিয়ে ওই সব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঔষধ সেবন করান। এপ্রর্যন্ত যাদের তিনি ঔষধ সেবন করাইয়াছেন তাদের কারোই করোনা হয়নি। এরই মধ্যে রয়েছেন আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আফজাল হোসেন। তাদের অফিসের প্রত্যেকেই তিনি ঔষধ সেবন করাইয়াছেন। তারা সবাই সুস্থ্য আছেন।

“মানবিক ডাক্তার ” খ্যাত সুকুমার মজুমদারের সঙ্গে আলাপ কালে তিনি বলেন, মানবিক কাজের মধ্যে অন্যরকম প্রশান্তি আছে। যখন কোনো আসহায় মানুষকেক সাহায্যের মাধ্যমে তার মুখে হাসি ফোটাতে পারি তখন হৃদয়টা প্রশান্তিতে ভরে যায়। এ প্রশান্তি আর কোথাও পাইনা।

তিনি আরো বলেন, মানবসেবার মধ্য দিয়ে সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জনই আমার মূল ল্য। কর্মেেত্র সফল হওয়ার আগে একজন ভালো মানুষ হতে হবে তবেই পূর্ণতা আসবে জীবনের।
আমি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরিদ্র মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের সহায়তা ও বিভিন্ন উৎসবে দরিদ্রের মাঝে পোশাক বিতরণ সহ মুমূর্ষ রোগীদের সেবা করে থাকি।

মানবিক ডাক্তার ” খ্যাত সুকুমার মজুমদারের মানবিকতার গল্প এখন সকলের মুখে-মুখে। আর এ জন্য তিনি সকলের প্রিয় মানুষ হয়ে উঠেছেন। তার এমন মানবিক কাজে খুশি এলাকাবাসী। এখন তারাও এমন মানবিক কাজে উৎসাহ দেন তাকে।

এব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত বলেন,ডাঃ সুকুমার মজুমদারের এমন মানবিক দিকগুলোকে আমি ভালো চোখেই দেখি। এটা নিঃসন্দেহে ভালো কাজ। তাকে দিয়ে এ উপজেলা মানুষের উপকারই হবে। কোন সহযোগীতা প্রয়োজন হলে আমি তাকে সহযোগিতা করব।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com