মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ ২০২৪, ১০:৫২ পূর্বাহ্ন

শুভ জন্মদিন কবি মাহবুব মিত্র

শুভ জন্মদিন কবি মাহবুব মিত্র

ভিশন বাংলা ডেস্ক: কবি মাহবুব মিত্র’র জন্মদিন আজ।  ১৯৮১ সালের ১ ডিসেম্বর নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার কদমশ্রীতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মতিউর রহমান চৌধুরী ও মা জয়গুননেসা বেগম চৌধুরী দম্পতির নয় সন্তানের ভেতর তিনি অষ্টম। কবি মাহবুব মিত্র অনলাইন নিউজ পোর্টাল ভিশন বাংলা’র সাহিত্য সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। কবি’র জন্মদিনে ভিশন বাংলা পরিবারের পক্ষ থেকে রইল অফুরান শুভকামনা।

মাহবুব মিত্র ইংরেজি সাহিত্যে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক ও নর্দান ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর সম্পূর্ণ করেন। তিনি খুব ছোটবেলা থেকেই লেখা-লেখি করেন।

প্রকাশিত বই:
১. জননীর করতলে কবিতার মিছিল
২. অমীমাংসিত কবিতার রক্তাক্ত সংলাপ
৩. আমি নীল পাহাড়ের গান
৪. ভালো থেকো নীল আকাশ
৫. শাদা কফিনে মেঘের শব্দ
৬. মার্বেল পাথরের গহীন ছায়া
৭. জলের নিচে অনন্ত দুপুর
৮. গ্লাস ভর্তি নীল ছায়া
৯. আমার বিশ্বাস আমার অবিশ্বাস
১০. আমার বিশ্বাস আমার ভাবনা
১১. টুকরো কথা সত্য সংলাপ
১২. আমার কথা উড়াল পাখি

প্রকাশিতব্য বই:
১. আমি দীর্ঘস্থায়ী বেদনার উল্লাস
২. জলের ডানায় পাখির পালক
৩. কবিতা জমজ ভাইবোনের কোলাহল
৪. তোমার হাসি প্রাথমিক বিদ্যালয়
৫. আমার কিছু বলার আছে
৬. যে কথা হয়নি বলা

 

কবি’র জন্মদিনে পাঠকদের জন্য দেয়া হলো দু’টি অপ্রকাশিত কবিতা…

বৃত্তহীন প্রতিবিম্বে কিংবদন্তী শাবক

ভুলে যেতে পারলেই ভালো। যারা চলে যেতে চায়~তাদের ধারণ করো না বুকের মায়ায়~ভাসিয়ে দাও ভুলো মনের ছায়ায়; তবু্ও মনে আসে—ভুলতে চাওয়া নদীর ঢেউ। অনেকদিন পর দাঁড়িয়ে আছে চারুকলার হাসি। লাইটের চোখ চারুলতার মুখ বকুলতলার বুক—ধীরে-ধীরে ছুঁয়ে যায় চলমান স্রোত। এখনো দাঁড়িয়ে আছো পুকুরপাড়ে। তোমার হাতে ঝুলে আছে নিউমার্কেটের বিপণীবিতান।

তোমার চিমটিকাটা হাসি তুরাগ নদীতে স্নান করছে। যেখানে দাঁড়িয়েছিলাম, তা সময়ের ছায়া। লজ্জাবনত ছবিগুলো কাকাতুয়া রোদ্দুর। চারুকলার পেইন্টিংয়ে তোমার ভিন্ন-ভিন্ন ছিন্নভিন্ন মুখ ও মুখোশ নেই; তাতে অবশ্য আমার কোনো অপেক্ষা নেই। আমরা জানি তোমার মুখগুলোই~মুখোশের আয়না আর পিকাডিলি সার্কাস।

পিছনের রাস্তায় তোমার পদচ্ছাপ। সামনের আলোয় ময়ূরপেখম। মাঝখানে বৃত্তে-বৃত্তে ঘুরছে বৃত্তহীন প্রতিবিম্ব। প্রথমদিন মধ্যমদিন শেষদিন… তারপরো দাঁড়িয়ে আছে সময়ের দুর্বিনীত কাকলাস। খরগোশ আর কচ্ছপের নীতিশাস্ত্র আমরা ভুলতে পারি না। তুমি বারবার খরগোশের রূপ ধারণ করেছো; কিন্তু তুমি শুয়োর কিংবা গন্ডারের কিংবদন্তী শাবক। কচ্ছপ ধীরে-ধীরে পেরিয়ে যাচ্ছে তিনশত (৩০০) বছরের টানেল…

০৭.০৯.২০১৯
সন্ধ্যা :: ৬:৫৪~৭:৩৭
বকুলতলা, চারুকলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

 

অমীমাংসিত সময়ের সাইরেন

আমিও ফিরে-ফিরে আসি বারবার অচেনা পথে…
পাতার মর্মরে গেয়ে ওঠে আহত কোকিল
মেঘে-মেঘে ভেসে যায় যে-ভেলা, তারই
পাটাতনে বসে থাকে পারিজাত নীরব প্রেমিক;
অরণ্যের গহীনে ঢেউ ওঠে পরাজিত হাওয়ার।

সময় একরাশ স্থূল হাসি, যেতে পারো প্রাচীর ঘেঁষে
প্রাচীরঘেরা হাওয়ার ময়দানে খেলছে সমুদ্রসন্তান;
রাত্রির ছায়ায় দোলে ওঠে ফুল আর পাখির সঙ্গম
নদীর বাঁকে-বাঁকে শুয়ে থাকে অসমাপ্ত চুম্বনরতি
আকাশের সীমান্তে মিশে যায় জ্যামিতির বৃত্তকলা।

বহুবার গিয়েছি, বহুবার গিয়েছে তারা, তবুও শূন্যতা
দাঁড়িয়েছি মুখোমুখি, তারাও দাঁড়িয়েছে পাহাড়ের গুহায়
নতমুখী ঈশ্বরশিষ্য বহুবার হারিয়ে গেছে মুখের ঘূর্ণনে
যারা মানুষ বোঝে না, শুধু ঈশ্বর বোঝে, হারিয়েছে কমলাবৃত্তে।

পাহাড়-পাহাড় খেলা, আগুন-আগুন কাম, ছাই-ছাই প্রেম
শরীর কখনো বোঝে না শরীরের ভাষা, যদি-না চোখ কথা হয়;
আমাদের যদি বিভ্রম হয় শ্বাসে-শ্বাসে ঘাসে-ঘাসে ঘামে-ঘামে
তবুও জ্বালিয়ে দাও আগুন শুকনো বনে, কিংবা নিভিয়ে দাও জলস্রোত;
শরীর হয়ে যাবে দেহ—দেহ গলে-গলে হবে মৃত্তিকার সংসার।

জানি, তবুও আমি আসিনি, তুমিও আসোনি,
তবে কিসের উল্লাসমঞ্চ-হর্ষধ্বনি—কিসের অগ্নিশিখা!
অগ্নিশয্যায় ভেঙে-ভেঙে গুঁড়িয়ে পড়ছে অগ্নিশপথ
তোমার মেহেদিরাঙা হাতে বসেছে ক্লান্ত প্রজাপতি;
অসমাপ্ত চুম্বনরেখায় গড়িয়ে যাচ্ছে
অমীমাংসিত সময়ের সাইরেন।

তোমার কম্পমান পাহাড়ে আর
আমার সমুদ্রহাওয়ায় অবারিত স্রোতে
ভেসে যাচ্ছে পৃথিবী, মুছে যাচ্ছে সূর্যরেখা;
আসো শুধু একবার চোখ বন্ধ করি।

১৬.০৭.২০২০
দুপুর :: ১:৪২—৩:০৭
শেওড়াপাড়া, মিরপুর, ঢাকা।

 

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com