মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০২ পূর্বাহ্ন
আগৈলঝাড়া প্রতিনিধিঃ
ভরা মৌসুমেও ইলিশের আকাল দেখা দিয়েছে বরিশালে। নগরীর পোর্ট রোডের ইলিশ মোকামে নদী ও সাগর থেকে আহরিত স্বল্প সংখ্যক ইলিশ এ মোকামে আসলেও দাম চড়া। মাছের সরবরাহ কম থাকায় করোনার কান্তি লগ্নে আয় রোজগার হারিয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন মৎস্য শ্রমিকরা।
সোমবার সকালে একাধিক আড়তদাররা জানিয়েছেন, গভীর সমুদ্রে সৃষ্ট লঘুচাপের জন্য মাছ ধরা ট্রলারগুলো শুন্য হাতে ফিরে আসায় বাজারে ইলিশের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তবে আগামীদিনগুলোতে প্রচুর ইলিশ সরবরাহ হবে বলে তারা আশা করছেন।
সূত্রমতে, সাগরে সবধরনের মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত ২৩ জুলাই। অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতেও এই মুহুর্তে ইলিশ শিকারে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। তারপরেও দণিাঞ্চলের অন্যতম ইলিশ মোকাম বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড আড়ত অনেকটাই ইলিশ শুন্য। সোমবার সকালে দুইশ’মন, রবিবার দেড়শ’ মণ, শনিবার প্রায় পাঁচশ’ মণ এবং শুক্রবার প্রায় নয়শ’ মণ ইলিশ এসেছিলো মোকামে।
পোর্ট রোডের ইলিশ বিক্রেতা মো. হারুন জানান, বৈরী আবহাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা শেষে মাছ শিকার করতে গভীর সমুদ্রে যাওয়া ট্রলারগুলো ফিরে আসছে। অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতেও তেমন ইলিশ পাওয়া যাচ্ছেনা। তাই বাজারে ইলিশের সরবরাহ একেবারে কম। আড়তে মাছ না থাকায় মাছের উপর নির্ভরশীল শ্রমিকরা আয় রোজগার হারিয়ে চরম বেকাদায় পরেছেন। আড়তদার নাসির উদ্দিন জানান, এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। এই মুহুর্তে প্রতিদিন কমপক্ষে এক হাজার মণ ইলিশ আসার কথা বরিশাল মোকামে। স্থানীয় নদ-নদীর কিছু ইলিশ মোকামে আসলেও চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় দাম চড়া।
সোমবার বরিশালের ইলিশ মোকামে এক কেজি দুইশ’ গ্রাম সাইজের প্রতি মন ইলিশ পাইকারি ৪৬ হাজার, কেজি সাইজের প্রতি মন ৪১ হাজার, রপ্তানিযোগ্য এলসি সাইজ (৬শ’ থেকে ৯শ’ গ্রাম) প্রতি মন ৩৮ হাজার, চারশ’ থেকে সাড়ে পাঁচশ’ গ্রাম সাইজের (ভেলকা) প্রতি মন ২১ হাজার এবং গোটলা সাইজ (আড়াইশ’ থেকে সাড়ে তিনশ’ গ্রাম) প্রতি মন ১৭ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
ভরা মৌসুমেও ইলিশের চড়া দাম হওয়ায় হতাশ হয়ে পরেছেন ক্রেতারা। আগামীদিনগুলোতে ইলিশের দাম কমার আশায় রয়েছেন তারা। ইলিশ ক্রেতা মিজানুর রহমান বলেন, এখন ইলিশের যে দাম থাকা উচিত ছিলো তার চেয়ে দাম অনেক বেশি। এই মুহুর্তে ইলিশের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় মতার বাহিরে।
জেলা মৎস্য আড়তদার এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রিপন বলেন, সাগর থেকে ট্রলারগুলো ফিরে আসলে ইলিশের সরবরাহ বাড়ার পাশাপাশি দামও কমবে। আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র এই তিনমাস ইলিশের প্রধান মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করা হয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।