শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক নিউজ : বাংলাদেশে এয়ার কন্ডিশনার বা এসির ব্যবহার বেড়েই চলেছে, আবার তেমনি প্রায়ই এসি বিস্ফোরণের ঘটনার কথাও শোনা যাচ্ছে। আর তাই শীতকালে এসি অচল থাকার পর গরমের শুরুতে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ না করে চালানোর কারণেই বিস্ফোরণ ঘটছে। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে বছরে অন্তত তিনবার এবং বিশেষভাবে শীতকালের শেষে এসির মেইনটেনেন্সের তাগিদ দেন বিশেষজ্ঞরা।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন সেলিম বলেন, এসির সার্ভিসিং নিয়মিত করা হয় না। ফলে এসির পাইপলাইন এবং গ্যাস সিলিন্ডারে ব্লক তৈরি হয়। এতে গ্যাস প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয় এবং একটা পর্যায়ে বিস্ফোরণ ঘটে। এছাড়া দু-তিন এসি মাস না চালানোর কারণে লিকুইড বাষ্প হয়ে যায়। সেই অবস্থায় এসির কার্যক্রম হলে কম্প্রেসারে বেশি চাপ পড়ে। এখান থেকে বিস্ফোরণ হতে পারে।
এ ছাড়া একেকটি এসি বসাতে ভবনের বাইরে যে পরিমাণ জায়গা দরকার, সেই পরিমাণ জায়গা দেওয়া হচ্ছে না। একটা মেশিনের গরম আরেকটা মেশিনে ছড়িয়ে পড়ছে, যেখান থেকে বিস্ফোরণ হচ্ছে। একেকটি এক টন এসি ১৫০ স্কয়ার ফুটের বেশি জায়গায় যেন চালানো না হয়, সে বিষয়েও পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
এবার আসুন জেনে নিই এসি বিস্ফোরণের কারণ এবং কী করলে এর থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে–
বিস্ফোরণের কারণ:
ইলেক্ট্রিক হাই ভোল্টেজের কারণে এসির কম্প্রেসারের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়ে বিস্ফোরণের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
এসির কম্প্রেসারের মধ্যে বার্নেবল গ্যাসের ব্যবহারের কারণেও এসির বিস্ফোরণ হতে পারে।
এসির যন্ত্রপাতি গরম হয়ে গেলেও ওভারহিটিং এর কারণে এসি বিস্ফোরিত হতে পারে।
অফিসে কিংবা ঘরে এসির লাগানোর সময় ওয়্যারিং এ কোনো সমস্যা থাকলে এমন দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারে।
এসির ভেতরে থাকা কমপ্রেসর পাইপের কোথাও ব্লকেজ হলে হাইপ্রেশার তৈরি হয় এর ফলে কমপ্রেসার বিস্ফোরণ হতে পারে।
অনেক সময় বজ্রপাতের সময় এসির সুইচ অন থাকলে এসির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এসি দুর্ঘটনার আরেকটি বড় কারণ হলো রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। এজন্য সঠিকভাবে এসির রক্ষণাবেক্ষণ করা জরুরি।
এসি ব্যবহারে যে সকল সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত:
এয়ার কন্ডিশনারকে এসব ক্ষতি ও বিস্ফোরণ থেকে রক্ষা করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।
এয়ার কন্ডিশনারের এয়ার ফিল্টার নিয়মিত পরিষ্কার করুন যেনো কোনো ময়লা জমাট বাধতে না পারে। এই কাজটি প্রতি মাসে একবার করা উচিত।
নিয়মিত এসির ফ্যান, কয়েল, কন্ডেন্সার ফিল্টার পরিষ্কার করতে হবে।
একটানা অনেক সময় এসি চালিয়ে রাখা যাবে না।
এসির ইউনিট বা ফ্যানে ময়লা জমে যেতে পারে, তাই সেটা ভালোমতো মুছে পরিষ্কার করতে হবে।
এসির পাইপের কোথাও ব্লকেজ আছে কি না তা টেকনিশিয়ান দিয়ে পরীক্ষা করতে হবে।
ঘরের ইলেকট্রিক ভোল্টেজ কম হলে এসির মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই এসি সংস্থাপনের আগে অবশ্যই বাসার ইলেকট্রিক ভোল্টেজ চেক করে নিতে হবে।
হাই ভোল্টেজ এড়াতে বাড়িতে ভালো মানের সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করতে হবে।
রুমের আকার অনুযায়ী সঠিক মানের এয়ার কন্ডিশনার ক্রয় করতে হবে।
বৃষ্টিপাত বা বজ্রপাতের সময় এসি না চালানোই ভালো।
দীর্ঘদিন এসি বন্ধ থাকলে চালু করার আগে ভালো সার্ভিস এক্সপার্টকে দিয়ে এসি পরীক্ষা করে চালু করতে হবে।
সর্বশেষ বলা যায়, এয়ার কন্ডিশনার দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে এবং কোনো দুর্ঘটনা এড়াতে অবশ্যই এটি সঠিক উপায়ে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে এবং সতর্কতার সহিত কাজ করতে হবে।