মঙ্গলবার, ০১ Jul ২০২৫, ০৫:২২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বাগমারায় পথশিশু ধর্ষণ: সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সনাক্ত হয়নি আসামি আটক হওয়া বাংলাদেশিদের কেউ কেউ আইএসের সঙ্গে যুক্ত: মালয়েশিয়া পুলিশ কুড়িগ্রামে বিপুল প‌রিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মাদক কারবা‌রি গ্রেফতার লালমনিরহাটে পরিকল্পনাহীন নগরায়ণের ছোবলে ফুরিয়ে যাচ্ছে কৃষি জমি বিদ্যালয়ে সহপাঠীর হামলায় আহত ছাত্র, হামলাকারীদের শাস্তির দাবি অভিভাবকের গোপালগঞ্জে শ্বশুরবাড়ি থেকে ভুয়া সেনা সদস্য আটক বাহরাইনের বিপক্ষে বাংলাদেশের ৭ গোলের বিশাল জয় কলাগাছিয়া গ্রামে কাদা-মাটির নিচে থাকা সড়ক যেন মরণ ফাঁদ এইচএসসি পরীক্ষা দিতে বেরিয়ে নিখোঁজ হওয়া মাহিরা উদ্ধার দেশের ইতিহাসে এক বছরে প্রবাসী আয়ে রেকর্ড
মুক্তিযোদ্ধা ও জুলাই যোদ্ধাদের মর্যাদার প্রশ্নে বিভাজন নয়, স্পষ্টতা জরুরি

মুক্তিযোদ্ধা ও জুলাই যোদ্ধাদের মর্যাদার প্রশ্নে বিভাজন নয়, স্পষ্টতা জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদিচ্ছা ও উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের একটি চূড়ান্ত তালিকা মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই প্রণীত হয়েছে। উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম এর ভাষ্যমতে, এটি সরকারের “আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধের প্রতিফলন।” কিন্তু এই দ্রুততর প্রক্রিয়া এবং তাৎপর্যপূর্ণ স্বীকৃতির ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।

অনেক মুক্তিযোদ্ধা মনে করছেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ ও রক্তক্ষয়ী সংগ্রামকে সমতুল মর্যাদায় অন্য যে কোনো আন্দোলনের পাশে দাঁড় করানোর চেষ্টা ইতিহাসের একধরনের বিকৃতি। তাঁদের ভাষায়, “আমরা জীবন দিয়ে একটি দেশ এনে দিয়েছি, আর এখন আমাদের ত্যাগকে সমমর্যাদার নামে হালকা করে দেওয়া হচ্ছে।” দীর্ঘ ৫৪ বছরেও যেখানে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করতে দেরি হয়েছে, সেখানে মাত্র কয়েক মাসে অন্য একটি আন্দোলনের যোদ্ধাদের তালিকা সম্পন্ন হওয়া অনেকের কাছেই গভীর অসন্তোষের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এখানে প্রশ্ন উঠেছে—এই দুটি আন্দোলনের ইতিহাসগত অবস্থান কি একরকম? একটি বিদেশি দখলদার ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র মুক্তির সংগ্রাম, অন্যটি ছিল রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক অধিকারের লড়াই। উভয়ের গুরুত্ব ইতিহাসে স্বতন্ত্র, কিন্তু তা সমমর্যাদার নয়। এ বিভাজন রাজনৈতিক নয়, এটি ইতিহাস ও আত্মত্যাগের প্রকৃত মূল্যায়নের প্রশ্ন।

সরকার যদি সত্যিই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে চায়, তাহলে প্রথমেই মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক জাতীয় ন্যারেটিভকে স্পষ্ট করে বলতে হবে—মুক্তিযুদ্ধের চেয়ে বড় কিছু নয়। অন্য আন্দোলনগুলোর স্বীকৃতি থাকুক, কিন্তু তা যেন মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদাকে প্রশ্নবিদ্ধ না করে।

অন্যথায়, দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হৃদয়ে যে ক্ষোভ ও হতাশা জন্ম নিচ্ছে, তা ইতিহাসের ধারাবাহিকতাকে বিপন্ন করে তুলবে। একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধারা যদি নিজেদের মূল্যায়নে বঞ্চিত বোধ করেন, তবে জাতি হিসেবে আমাদের আত্মপরিচয়ের ভিত্তিই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।

জুলাই আন্দোলনের শহীদদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে, তবে শ্রদ্ধা আর সমমর্যাদা এক জিনিস নয়। ইতিহাসকে গুলিয়ে ফেলা নয়, ইতিহাসকে সম্মান করাই হোক আমাদের দায়িত্ব।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com