রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন

ভূমি অধিগ্রহণে ঘুষ বাণিজ্য, নরসিংদীতে ক্ষতিগ্রস্তদের আহাজারি

ভিশন বাংলা ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০২৫
  • ১০৩

ফালু মিয়া, বিশেষ প্রতিনিধি:

ঢাকা-সলিটে মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নতকরণ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ ঘিরে নরসিংদীতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দালালদের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন জমি ও বিভিন্ন স্থাপনার মালকিরা। অভিযোগ মতে ক্ষতিপূরণের টাকা পেতে ১০ থকেে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ঘুষ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে তাদের। ঘুষ না দিলে জমির ন্যায্য মূল্য তো মিলছেই না, উল্টো হয়রানির শিকার হয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার পথে বসেছেন বহু মানুষ। আজ সোমবার সকালে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে এসব কথা বলনে নরসিংদী স্বনামধন্য অন্নপূর্ন্না অয়েল মিল এর মালিক সুধীর চন্দ্র সাহা।
সংবাদ সম্মলেনে অভিযোগ করে আরো বলনে, বহুল প্রত্যাশিত ঢাকা-সিলেট ছয় লেন প্রকল্পের আওতায় নরসিংদীর ৫২ কিলোমিটার অংশে ১৮২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু সরকারের এই উন্নয়ন প্রকল্পই স্থানীয় বহু মানুষের জন্য অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে এখন। জমি অধিগ্রহণ শুরু থেকেই একটি সংঘবদ্ধ চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে এই চক্রের সদস্যরা অধিগ্রহণকৃত জমি ও স্থাপনার তালিকা তৈয়ারী সময় উৎকোচ দাবি করে যারা ঘুষ দিতে রাজি হন, তাদের জমির শ্রেনীর পরিবর্তন করে (যেমন, আবাসিক বা বাণিজ্যিক জমিকে কৃষি দেখানো) বা স্থাপনার অবমূল্যায়ন করে কম ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয় বলে জানান তিনি।
এই দুর্নীতির শিকার হয়ে পথে বসার উপক্রম হয়ে নরসিংদীর সুপরিচিত প্রতিষ্ঠান ‘অন্নপূর্ন্না অয়েল মিল’ এর মালিক সুধীর চন্দ্র সাহার। বাঘহাটা মৌজায় ভাড়া করা জমিতে নিজের অর্থায়নে এই কল কারখানাটি গড়ে তুলছিলেন তিনি কারখানার স্থাপনাটি অধিগ্রহণের আওতায় পড়লে ভূমি অধিগ্রহণ শাখার র্কমর্কতারা তার কাছে মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবি করেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি ঘুষ দিতে অস্বীকার করায়, তার কারখানার স্থাপনাটি এলাকার গিয়াস উদ্দিন গাজী গং ও বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রভাবশালী নেতা এবং ২৪ জুলাই আন্দোলনে ছাত্র হত্যার সাথে জড়তি শীলমান্দী এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলাম সরকারের পুত্র মোমেন সরকার এর নামে অবৈধভাবে লিপিবিদ্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে কারখানার ক্ষতিপূরণের অর্থ আটকে গেছে যা মালিক ও শ্রমিকদের জীবনে স্থবিরতা নেমে আসে এই কারখানাটির ৯০ ভাগ জমি অধিগ্রহনের আওতায় আনা হলেও স্থাপনার ক্ষতিপূরনের অর্থ না দিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে যার ফলে কারখানাটি অন্যত্র স্থানান্তর ও সম্প্রসারিত করার কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছি না। এদিকে কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়ছে বহু সাধারন শ্রমিকরা। ভূমি অধিগ্রহণ শাখার একাধিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী এই অনিয়ম ও সেচ্ছাচারিতার সঙ্গে জড়িত বলে জানান তিনি এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্থ ভূমি মালিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। আর সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের সুফলতা দুরের কথা, এখন তারা নিজেদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তা বা প্রতিপক্ষদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভূমি অধিগ্রহণে ঘুষ বাণিজ্য বিষয় ওঠা অভিযোগগুলো অত্যন্ত গুরুতর। তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে ও অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নরসিংদী জেলা প্রশাসনের এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের এখন একটাই দাবি এই দুর্নীতিবাজ চক্রকে চিহৃত করে আইনের আওতায় আনা হোক ও তাদের ন্যায্য ক্ষতিপূণের টাকা নিবিগ্নে পাওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। এমনটাই প্রত্যাশা ভূমি অধিগহণের ক্ষতিগ্রস্ত মালিকদের।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2011-2025 VisionBangla24.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com