সারা জীবনের উপার্জিত অর্থ কোথায় বিনিয়োগ করবেন—এ চিন্তা অনেকের মনেই ঘুরপাক খায়। কেউ স্থায়ী সম্পদে বিনিয়োগ করেন, কেউ সঞ্চয়পত্র বা বিভিন্ন ব্যবসায়। তবে মধ্যবিত্তদের জন্য সঞ্চয়ের একটি জনপ্রিয় ও বুদ্ধিদীপ্ত মাধ্যম হলো প্রাইজ বন্ড। মাত্র ১০০ টাকার একটি প্রাইজ বন্ড কিনেই জিতে নেওয়া যেতে পারে সর্বোচ্চ ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার।
সমাজের সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে সঞ্চয় অভ্যাস গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে সরকার চালু করেছে ‘বাংলাদেশ প্রাইজ বন্ড’ কর্মসূচি। এই বন্ড যেকোনো সময় সহজে কেনা ও ভাঙানো যায়, যা একে আরো আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
ফলাফল জানবেন যেভাবে
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটের সার্চ বক্সে প্রতিবারে এক বা একাধিক নম্বর অনুসন্ধান করা যাবে। একটি নম্বরের জন্য শুধু নম্বরটি টাইপ (সিরিজ নয়) করলেই ফলাফল জানা যাবে।
যদি একাধিক প্রাইজ বন্ড থাকে এবং তা যদি ক্রমানুসারে হয় তাহলে শুধুমাত্র প্রথম ও শেষ নম্বরের মাঝে হাইফেন (-) টাইপ করে সমস্ত নম্বর অনুসন্ধান করা যাবে। আর যদি একাধিক প্রাইজ বন্ড থাকে এবং তা যদি ক্রমানুসারে না হয় তাহলে কমা (,) দ্বারা আলাদা করে সমস্ত নম্বরগুলো টাইপ করে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফলাফল জানা যাবে।
এ ছাড়া প্রাইজ বন্ডের লটারির ফলাফল জানার জন্য বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ চালু করেছে প্রাইজ বন্ড রেজাল্ট ইনকুয়্যারি সফটওয়্যার (পিবিআরআইএস)। যার ওয়েব এড্রেস হলো www.irdbd.online।
এ সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে ২টি পদ্ধতিতে ফলাফল অনুসন্ধান করা যাবে। সার্চ বক্সে সরাসরি নম্বর লিখে এবং নম্বর আপলোড করে অনুসন্ধান করা যাবে।
প্রথম পদ্ধতির ক্ষেত্রে সার্চ বক্সে প্রাইজ বন্ডের নম্বরটি (সিরিজ ব্যতীত) বাংলায় অথবা ইংরেজিতে অনুসন্ধান করা যাবে। একসঙ্গে একাধিক নম্বর অনুসন্ধান করলে নম্বরগুলোকে কমা (,) দিয়ে আলাদা করতে হবে। ধারাবাহিক নম্বর অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে প্রথম ও শেষ সংখ্যার মধ্যে হাইফেন (-) ব্যবহার করতে হবে।
দ্বিতীয় পদ্ধতির ক্ষেত্রে মাইক্রোসফট এক্সেল সিটের কলাম এ তে প্রাইজ বন্ডের নম্বরগুলো (সিরিজ ব্যতীত) ইংরেজিতে লিখে শেষ করতে হবে। তারপর এক্সেল ফাইলটি সরাসরি সফটওয়্যারে আপলোড দিতে হবে। অনুসন্ধানের তারিখ শুরু করে পূর্ববর্তী ২ বছরের মধ্যে প্রকাশিত সব ফলাফলের বিপরীতে কোনো মিল পেলে ফলাফলের কপি দেখাবে।
এই সফটওয়্যার থেকে প্রাইজ বন্ড ক্রেতারা পুরস্কারের টাকা দাবি ফরম ডাউনলোড করতে পারবেন। সেই সঙ্গে প্রাইজ বন্ডের ড্র বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারবেন। ক্রেতারা এ সফটওয়্যারে বিনা মূল্যে ই-মেইল সাবস্ক্রিপশন করতে পারবেন। এতে সাবস্ক্রিপশনপ্রাপ্ত নাগরিকরা প্রতি ৩ মাস পরপর প্রকাশিত ফলাফল সম্পর্কে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইমেইলে অবহিত হতে পারবেন।
জানা গেছে, ড্রয়ের নির্ধারিত তারিখ থেকে ৬০ দিন আগে (বিক্রির তারিখ ধরে এবং ড্রয়ের দিন বাদ দিয়ে) যেসব প্রাইজ বন্ড বিক্রি হয়েছে, সেগুলোই সংশ্লিষ্ট ড্রয়ের আওতায় আসে। আয়কর আইন, ২০২৩-এর ১১৮ ধারার নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রাইজ বন্ডে পুরস্কারপ্রাপ্ত অর্থের ওপর ২০ শতাংশ হারে উৎসে কর কাটা হয়।
প্রতিবছর ৩১ জানুয়ারি, ৩০ এপ্রিল, ৩১ জুলাই এবং ৩১ অক্টোবর ড্র অনুষ্ঠানের নির্ধারিত তারিখ। যদি নির্ধারিত দিনটি কোনো সরকারি ছুটির দিন হয়, তাহলে পরবর্তী কার্যদিবসে ড্র অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ৩১ জুলাই ১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজ বন্ডের ১২০তম ‘ড্র’ অনুষ্ঠিত হয়।