সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৬ অপরাহ্ন
আগৈলঝাড়া প্রতিনিধঃ দারিদ্রতাকে পিছনে ফেলে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার টেমার মালেকা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী মোঃ ছালাম মিয়া’র মেয়ে ফারজানা আক্তার। দুই ভাই বোনের মধ্যে বড় ফারজানা। দারিদ্রতাকে জয় করে টেমার মালেকা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেলেও ভালো কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে আছে চড়ম অনিশ্চয়তার মধ্যে। আভাব-অনাটন ও টানাটানির সংসারে ফারজানা দৈনিক ৬ থেকে ৭ ঘন্টা পড়াশুনার পাশাপাশি অন্যদের প্রাইভেট পড়ানোর মধ্য দিয়ে নিজের লেখাপড়ার খরচসহ মাকে সাংসারিক কাজে সংসারে সহযোগীতা করত।
অদম্য মেধাবী ছাত্রী ফারজানার সাথে কথা বলে জানাগেছে, তার এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে বাবা-মা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সহযোগীতা ও অনুপ্রেরণা এবং নিজের ইচ্ছাশক্তি।
শিক্ষকদের সহযোগীতা ও অনুপ্রেরণায় অনুপ্রানিত হয়ে অতি দরিদ্র পরিবারের মেয়ে ফারজানা বহুকষ্টে এই কৃর্তিত্ব অর্জন করলেও ভবিষ্যতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হয়েও ছোট-ছোট কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করে শিক্ষিত জাতি গঠন করাই তার স্বপ্ন।
ফারজানা’র পিতা মোঃ ছালাম মিয়া জানান, সামান্য বেতনে বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহরীর চাকুরী করে দুই সন্তান, স্ত্রী ও নিজের গর্ভধারিনী মা’সহ পাঁচ জনের সংসার চালিয়ে ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনার খরচ চালানো খুবই কষ্টকর। অশ্রুসিক্ত নয়নে তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ে (ফারজানা আক্তার) এর এই সাফল্যে খুশি হয়েও বর্তমানে চড়ম দুশ্চিন্তায় আছি। কিভাবে একটি ভালো কলেজে ভর্তি করে মেয়ের পড়াশুনার খরচ চালাবো।
ফারজানা’র মা মোসাঃ লিপি বেগম বলেন, আভাব-অনাটনের টানাটানির সংসারে মেয়েকে পরীক্ষার সময় ভালো একটি জামা-কাপর কিনে দিতে পারিনি। এমনকি পরীক্ষার সময় ভালো খাবারও খেতে দিতে পারিনি। এর পরেও মেয়ের এই সাফল্যে আমরা গর্ববোধ করছি। বর্তমানে অর্থের অভাবে ফারজানার ভালো কলেজে ভর্তি হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলেও জানান তিনি।
তাইতো সমাজের বিত্তবানদের কাছে মেয়ের লেখা-পড়ার জন্য সাহায্যের আহব্বান জানান মেধাবী ছাত্রী ফারজানার মা ও বাবা।