শনিবার, ১২ Jul ২০২৫, ০৯:১৬ পূর্বাহ্ন
রুবেল হোসেন:
দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহীনির চলমান মাদক বিরোধী অভিযানের মধ্যেও মিরপুরের শাহআলী থানা এলাকায় ব্যতিক্রমী কৌশলে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে একটি চক্র। এই এলাকার স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যবহার করে নানা রকম কৌশলে মাদকের এই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে এই চক্রটি। মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেটের রমরমা বিস্তারের কারণে এই এলাকায় গড়ে উঠেছে একটি কিশোর গ্যাং গ্রুপ।
সরেজমিনের অনুসন্ধান করে জানা যায়, রাজধানীর মিরপুর বিভাগের শাহআলী থানার মাদক ব্যবসায়ী চক্রের মূল হোতা মিঠু বিভিন্ন কৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ রমরমা ইয়াবা মাদক বাণিজ্য করে যাচ্ছে। মিঠুর মাদক ব্যবসা সাথে জড়িত আছে শাহ্ আলী ও দারুস সালাম থানার বেশ কয়েকজন চিহ্নিত সোর্স। বিভিন্ন সময়ে থানা পুলিশের সহযোগীতাও পেয়ে থাকে এই উঠতি বয়সী মাদক ব্যবসায়ী মিঠু। থানা পুলিশের সাথে সখ্যতার প্রধান সূত্র মিঠুর মামা দারুস সালাম থানা পুলিশের চিহ্নিত সোর্স ৭/৮টি মামলার আসামী তাজুল ইসলাম ওরফে ফর্মা তাজু। একসময় ফর্মা তাজুই নিয়ন্ত্রণ করতো এই এলাকার মাদক বাণিজ্য। পরবর্তীতে একাধীক মামলার আসামী ও র্যাবের চিহ্নিত ব্যবসায়ী হিসেবে তালিকাভূক্ত হয়ে যাওয়ায় কিছুদিন গাঢাকা দিয়ে পালিয়ে থাকে তাজু। অন্তরালে যাওয়ার পরই তাজুর মাদক ব্যবসার দায়িত্ব পরে তার আপন ভাগ্নে মিঠুর উপরে। কয়েকটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন জেল হাজতে থাকতে হয় এই তাজুর। আর জেল খেটে বেরিয়ে পুলিশের ফর্মা হিসেবে নতুন পরিচয়ে নিজেকে বাঁচাতে তৎপর হয় তাজুল ইসলাম। কিন্তু তার মাদকের ব্যবসা কোনোভাবেই ছারতে পারে না। তাজুর উঠতি বয়সী ভাগ্নে মিঠু মাদক ব্যবসার কাজে যুক্ত করে বেশ কয়েকজন স্কুল-কলেজে পড়ুয়া মাদকসেবী ছাত্র-ছাত্রীর গ্রুপকে। এইসব ছাত্র-ছাত্রীরা বই-খাতার ব্যাগে করে স্কুল-কলেজ ড্রেস পরা অবস্থায় বিভিন্ন স্পটে ঘুরে ঘুরে মাদক বিক্রি করে থাকে। এছাড়াও পাইকারী ও খুচরা মাদক বিক্রি করার জন্য এই চক্রটির ৮/১০ জন সেলসম্যানও রয়েছে। এরা হলোÑ সানজিত, সানি, আপন দুই ভাই, অন্যদিকে মিঠুর খালাত ভাই দুজনই ডান হাত, বাম হাত হিসেবে কাজ করে। আরও রয়েছে সুমন এ ব্লক ৯নং রোডে বাসা খোকন মিয়ার ছেলে হিরাসহ একটি গ্রুপ। এসব উঠতি বয়সী মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীরা মিলে গড়ে তুলেছে একটি কিশোর গ্যাং গ্রুপ। এই গ্রুপের বিভিন্ন সদস্য জড়িয়ে পরেছে চুরি-ছিনতাইসহ নানা অপকর্মে। এছাড়াও শাহ্ আলী থানা এলাকার কথিত মাছ ব্যবসায়ী জয়নাল এবং উত্তর বিশিলের কয়েকজন প্রভাবশালীর নামও চলে আসে এই মিঠু চক্রের নেপথ্যে। প্রভাবশালী এই ব্যক্তিরা নিয়মিত মাশোয়ারা পায় এই মাদক বানিজ্যের টাকা থেকে।
একটি বিস্বস্ত সূত্রে আরো জানা যায়, এই মাদক চক্রের কোনো সদস্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলে সোর্স তাজুল ইসলাম পুলিশকে ম্যানেজ করে তাৎক্ষণিকভাবে ঐ মাদক ব্যবসায়িকে ছারিয়ে নেয়। এই মাদক বাণিজ্যে কেউ বাধা দিলে তাকে বিভিন্ন মিথ্যে মামলা দিয়ে ও পুরানো মামলায় ফাসিয়ে পুলিশি হয়রানী করা হয় এবং সন্ত্রাসী দ্বারা মার-ধর, ভয়ভিতিসহ প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়।
শাহ্ আলী থানা এলাকার সচেতন সমাজ তাদের স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলে মেয়েদের নিয়ে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহীনির মাদক বিরোধী চলমান অভিযানের মধ্যেও কিভাবে এরা কিভাবে দাপটের সাথে এই মাদকের রমরমা বাণিজ্য পরিচালনা করে আসছে তা নিয়ে সংকায় রয়েছে সতেচন সমাজ। এলাকাবাসী এই মাদক সিন্ডিকেটের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারদের দৃষ্টি আকর্ষন করে এই মাদকের ছোবল থেকে পরিত্রান চাচ্ছে।
এই মিঠু চক্রের অন্তরালে থাকা বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন পরবর্তী প্রতিবেদনে…