শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৯ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, দেশ থেকে পাঁচ লাখ হাজার কোটি টাকার ওপরে পাচার হয়ে গেছে। শনিবার বিকালে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে আয়োজিত বিভাগীয় জনসভায় অংশ নিয়ে এ মন্তব্য করেন মেনন। ২১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে বিভাগীয় এ জনসভার আয়োজন করে ওয়ার্কার্স পার্টি।
মেনন বলেন, এক টাকা নয় দু’টাকা নয়, ২০১৪ সালে এক বছরে ৭৬ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। আমি বলি, আজকে সেই টাকার পরিমাণ পাঁচ লক্ষ হাজার কোটি টাকার উপরে। তা দিয়ে একটি বাজেট আমরা তৈরি করতে পারতাম। দুদক এ বিষয়ে কথা বলে না।
তিনি বলেন, যত টাকা পাকিস্তানিরা নিয়ে গেছে, তার চেয়েও বেশি টাকা এ ক’বছরে পাচার হয়ে গেছে। পার্লামেন্টে যখন ঋণ খেলাপিদের নাম প্রকাশ করা হয় তখন একই সঙ্গে অবশ্যই টাকা পাচারকারীদের নাম প্রকাশ করতে হবে। তখন আমরা দেখব, অনেক পরিচিত লোক রয়েছেন। অনেক পরিচিত নেতা রয়েছেন, যাদের কথা লুকানোর জন্যই নাম প্রকাশ করা হয় না।
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার বড় বড় কথা বলে কিন্তু ব্যাংক লুটেরাদের ধরে না। ১১০ কোটি টাকা দিয়ে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান বাড়ি কেনেন। দুদকও সেসব কথা বলতে রাজি হয় না। যখন কেউ ধরা পড়ে, বুলি আওড়ানো হয়- দল কোনো দায় নেবে না। বনে পশু পুষবেন, দাপিয়ে বেড়াবে। নিয়ন্ত্রণ করবেন না, ধরা পড়লে তার দায়ও নেবেন না। দায়টা নেবে কে?।’
মেনন বলেন, প্রতিদিন ব্যাংক লুট হয়ে যাচ্ছে। ব্যাংক যখন দেওলিয়া হয়ে যাবে, তখন এর দায় নাকি নিতে হবে জনগণকে। কেন জনগণ ব্যাংক ডাকাতদের দায় নেবে?
দেশে এখন উন্নয়ন হলেও বৈষম্য বাড়ছে উল্লেখ করে মেনন বলেন, আজকে উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু বৈষম্য হচ্ছে পাহাড় সমান। আমাদের মাথাপিঁছু আয় ১৯০৯ ডলার। কিন্তু যারা দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করেন তাদের দৈনিক মাথাপিঁছু আয় এক ডলারেরও কম। এ বৈষম্য কেবলমাত্র অংকের হিসাবে নয়।
তিনি যোগ করেন, ৭৪ সালে আমাদের ছিল চারজন কোটিপতি। আর এখন আমাদের কোটিপতির সংখ্যা এক লক্ষ ২২ হাজার। কেবল কোটিপতি নয়, এরা কোটি কোটি কোটিপতি। তাদের জীবনযাপন, তাদের আয়েশ, তাদের বিলাস বাংলাদেশের যুবকদেরকে হতাশ করে।
রাজশাহী মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি লিয়াকত আলী লিকুর সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। এতে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য মোস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি, মাহমুদুল ইসলাম মানিক ও কামরুল আহসান।