রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৪ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: টানা এক মাসেরও বেশি সময় যাবৎ ইউক্রেনের ভূখণ্ডে রাশিয়ার সামরিক অভিযান চললেও এখনো উত্তেজনা প্রশমনের কোনো লক্ষণই যেন নেই। এই এক মাসেই কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পূর্ব ইউরোপের দেশটির বিভিন্ন শহর। উত্তেজনার পারদ বাড়তে থাকায় বাড়ছে রুশ পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারের আশঙ্কাও।
যদিও মস্কোর দাবি, রাশিয়ার অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লেই কেবল পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হবে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারি বাসভবন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এক সাক্ষাৎকারে কথাটি বলেছেন। অবশ্য সপ্তাহখানেক আগেও তিনি প্রায় একই কথা জানিয়েছিলেন। মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স তথ্যটি জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার (২৮ মার্চ) পিবিএসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছিলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে বর্তমান সংঘর্ষের কারণে নয় বরং ‘রাষ্ট্রের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লেই’ কেবল পারমাণবিক অস্ত্রের আশ্রয় নেবে রাশিয়ার সেনাবাহিনী।
সাক্ষাৎকারে পেসকভ দাবি করেন, ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের কোনো ফলাফল অবশ্যই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কারণ হবে না।
তিনি মনে করেন, নিরাপত্তার প্রসঙ্গে আমাদের একটি নীতিমালা রয়েছে। সেখানে খুব স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া আছে যে, রাষ্ট্রের অস্তিত্বের জন্য হুমকি থাকলেই কেবল আমরা (পারমাণবিক অস্ত্র) ব্যবহার করতে পারি। আমরা আসলেই দেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকি দূর করতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করব।
এর আগে গত ২২ মার্চ মার্কিন মিডিয়া সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দিমিত্রি পেসকভ বলেছিলেন, রাশিয়া তখনই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে যদি তার অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে।
ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়টি প্রেসিডেন্ট পুতিন বিবেচনা করছেন কি-না? এমন প্রশ্নের জবাবে পেসকভ দাবি করেন, আমাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার একটি নিয়ম আছে এবং এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার সকল কারণ আপনি সেখানে পড়তে পারেন।
তিনি বলেছিলেন, সুতরাং এটি (অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা) যদি আমাদের দেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়। কিন্তু পারমাণবিক অস্ত্র আমাদের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারি।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নামে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়ান সেনাবাহিনী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রুশ সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই আক্রমণ শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে বৃষ্টির মতো রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে।
সর্বাত্মক হামলা শুরুর পর প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই পূর্ব ইউরোপের দেশটির বহু শহর কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। এছাড়া হামলার শুরুর মাত্র চারদিনের মাথায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার পরমাণু প্রতিরোধ বাহিনীকে বিশেষ সতর্কতায় থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।