রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৫ অপরাহ্ন
ক্রীড়া ডেস্কঃ ইতিহাস গড়া হলো না টাইগারদের। টি-টেয়েন্টি সিরিজ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে গতকাল মাঠে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতায় সফল হয়নি টাইগাররা। সফরকারী উইন্ডিজের কাছে ৫০ রানে হেরে স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে বাংলাদেশের। সিরিজের শেষ ম্যাচটি মিরপুর স্টেডিয়ামে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের ষষ্ঠ দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের হাতছানি ছিলো টাইগারদের সামনে। সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাজে ভাবে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে জয় পেলে শেষ ম্যাচে হেরে যাওয়ায় ইতিহাস গড়া হয়নি বাংলাদেশের। টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ জয়ের সাথে বছরের শুরুতে একই পরিস্থিতিতে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের স্মৃতি বাড়তি উদ্যম হয়ে কাজে লেগেছিলো সাকিবদের জন্য। অন্যদিকে স্বাগতিক দলের সমর্থকদের পাশাপাশি এ ফরম্যাটের সাম্প্রতিক সময়ের বাজে ফর্ম কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরাবে সফরকারীদের। তবে নিশ্চিতভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজ নিজেদের করে নেয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে সফল হয় সফরকারীরা। টস জিতে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা যেমন শুরু করেছিলেন, তাতে কিছুটা মনমরা হয়ে পড়ে মিরপুরের টাইগার সমর্থকরা। তবে দারুণ বোলিংয়ে ভালোভাবেই ম্যাচে ফিরেছে বাংলাদেশ। ৫ বল বাকি থাকতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৯০ রানে গুটিয়ে দিয়েছে তারা। অর্থাৎ টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিততে হলে সাকিব বাহিনীকে করতে হবে ১৯১ রান। সে লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৪০ রানেই কুপোকাত হয়ে যায় বাংলাদেশ। ফলে সহজ জয়ে ট্রফি হাতে মাঠ ছাড়ে ক্যারিবীয়রা। ম্যাচ সেরা হন এভিন লুইস। সিরিজ সেরা সাকিব আল হাসান। ৫ ওভারের উদ্বোধনী জুটিতেই ৭৬ রান তুলে ফেলেন ক্যারিবীয় দুই ওপেনার এভিন লুইস আর শাই হোপ। বেশি ভয়ংকর ছিলেন লুইস। ১২ বলে ২৩ রান করা শাই হোপকে বোল্ড করে এই জুটিটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। এরপর কেমো পলকে মাত্র ২ রানে আরিফুল হকের ক্যাচ বানান মোস্তাফিজুর রহমান। লুইসের ব্যাটে চড়ে তবু দ্রুতগতিতে রান তুলে চলছিল সফরকারী দল। তাকে আটকানোর পথই খুঁজে পাচ্ছিলেন না বাংলাদেশের বোলাররা। যে-ই বল করতে এসেছেন, তার ওপরই চড়াও হয়েছেন লুইস। তবে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের লাগাম অনেকটাই টেনে ধরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ইনিংসের দশম ওভারে বল করতে এসে টানা দুই বলে দুই উইকেট নেন এই অফস্পিনার। সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাটসম্যানটিকেই ফিরিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ২৬ বলে ৬ চার আর ৮ ছক্কায় ৮৯ রান করা এভিন লুইসকে বোল্ড করেন তিনি। পরের বলে এলবিডব্লিউ করে সিমরন হেটমেয়ারকেও (০) সাজঘরের পথ দেখান মাহমুদউল্লাহ। ১৬ বলে ১৯ করে রভম্যান পাওয়েল হন তার তৃতীয় শিকার। এরপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট খুইয়েছে ক্যারিবীয়রা। ২৪ বলে ২টি করে চার ছক্কায় নিকোলাস পুরানের ২৯ রান ছাড়া পরে বলার মতো রান করতে পারেননি আর কেউ। বল হাতে সবচেয়ে সফল ছিলেন মাহমুদউল্লাহই। ৩.২ ওভারে ১৮ রানে ৩টি উইকেট নেন তিনি। সাকিব আর মোস্তাফিজও ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন, তবে তারা রান খরচ করেছেন বেশি। সাকিব ৪ ওভারে দেন ৩৬ রান, মোস্তাফিজ ৩৩।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
উইন্ডিজ : ১৯০/১০ (১৯.২ ওভার) এভিন লুইস ৮৯, নিকোলাস পুরান ২৯ রান।
(সাকিব ৩/৩৭, মোস্তাফিজ ৩/৩৩ ও মাহমুউদুল্লাহ ৩/১৮ উইকেট)।
বাংলাদেশ : ১৪০/১০ (১৭ ওভার) লিটন ৪৩, রনি ২২, মিরাজ ১৯ রান।
(পাওয়েল ৫/১৫ ও অ্যালেন ২/১৯ উইকেট)
ফলাফল : উইন্ডিজ ৫০ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : এভিন লুইস।
সিরিজ সেরা : সাকিব আল হাসান।
সিরিজ : উইন্ডিজ ২-১ বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ একাদশ : তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আরিফুল হক, মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোস্তাফিজুর রহমান এবং আবু হায়দার রনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ : এভিন লুইস, শাই হোপ, নিকোলাস পুরান, সিমরন হেটমায়ার, শেরফান রাদারফোর্ড, কার্লোস ব্রেথওয়েট (অধিনায়ক), রভম্যান পাওয়েল, ফ্যাবিয়ান অ্যালেন, কেমো পল, শেলডন কোট্রেল, ওসান থমাস।