শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৭ পূর্বাহ্ন
নিউজ ডেস্কঃ ভারতের উড়িষ্যায় আঘাত হেনেছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী। পূর্বাভাসের কয়েক ঘণ্টা আগেই আজ শুক্রবার সকালে উড়িষ্যায় ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটারের বেশি গতি নিয়ে আঘাত হানে ফণী। ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি। বাংলাদেশের উপকূলে আজ সন্ধ্যায় আঘাত হানবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশাল আকারের ঘূর্ণিঝড়টি এখন বাংলাদেশের উপকূলের খুব কাছাকাছি এলাকায় রয়েছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে সমুদ্রের ঢেউয়ের উচ্চতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে নদীগুলোতেও। পটুয়াখালী ও বরগুনায় ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।
এর প্রভাবে শুক্রবার থেকেই ঝড়ো হাওয়া ও ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশের আবহাওয়া বিভাগ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই কুয়াকাটাসংলগ্ন সাগরে উত্তাল ঢেউ সৃষ্টি হয়। সৈকতে আছড়ে পড়ে বড় বড় ঢেউ। ইতোমধ্যে গভীর সমুদ্র থেকে মাছধরার ট্রলার ও নৌকাগুলো তীরে ফিরতে শুরু করেছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে দুর্গত এলাকা থেকে যাতে মানুষকে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া যায় সে জন্য সাইক্লোন শেল্টারগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে।
পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে বর্তমানে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তবে মূল ঘূর্ণিঝড় এদিকে না আসলে মহাবিপদ সংকেতের দিকে যাবে না বাংলাদেশের প্রশাসন।
আজ শুক্রবার সকাল ৮টা থেকেই ভারতের উড়িষ্যায় ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানলে সেখানে প্রবল ঝড়ো হওয়া বইছে। ফণী আঘাত হানার আগেই উড়িষ্যা থেকে ১০ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এসময় লোকজনকে বাইরে বের না হতে বলা হয়েছে।
এদিকে ধেয়ে আসা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী আজ শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। তখন পুরো বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়ের আওতায় থাকবে।
আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, আজ সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ পুরো বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়ের আওতায় থাকবে। উচ্চগতির বাতাস ও দমকা ঝোড়ো হাওয়ার সময় সবাইকে নিরাপদে থাকতে হবে। ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে সারা রাত বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাবে। সেসময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০-১২০ কিলোমিটার থাকতে পারে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী উপকূল অতিক্রম করার সময় বাংলাদেশের উপকূলীয় নিচু এলাকাগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলায় এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরকে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৯০-১১০ কিমি বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস সূত্র জানিয়েছে।