রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন
ক্রীড়া ডেস্কঃ ওয়ালটন ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে মুখোমুখি হবে উইন্ডিজ ও বাংলাদেশ। শুক্রবার (১৭ মে) আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে ৪টায়। সরাসরি সম্প্রচার করবে বিটিভি, মাছরাঙা টিভি ও গাজী টিভি।লিগ পর্বে ৪ ম্যাচের ৩টিতেই দাপট দেখিয়ে হেসেখেলে জিতেছে বাংলাদেশ। একটি ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়। উইন্ডিজের বিপক্ষে ৮ উইকেটে বড় জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করে টাইগাররা। উইন্ডিজের ২৬২ রানের টার্গেট টপ-অর্ডারের প্রথম চার ব্যাটসম্যানের হাত ধরেই স্পর্শ করে ফেলে বাংলাদেশ।
দুই ওপেনার তামিম ইকবাল-সৌম্য সরকার ১৪৪ রানের জুটি গড়েন। দু’জনই হাফ-সেঞ্চুরি তুলে চোখ ধাধাঁনো ইনিংস খেলেন। তামিম ৮০ ও সৌম্য ৭৩ রান করেন। এরপর সাকিব অপরাজিত ৬১ ও মুশফিকুর অপরাজিত ৩২ রান করেন। এ ম্যাচে বল হাতে উজ্জল ছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। অধিনায়ক মাশরাফি ৩টি, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন-মুস্তাফিজুর ২টি করে এবং সাকিব-মিরাজ ১টি করে উইকেট শিকার করেন।এরপরের ম্যাচে বৃষ্টির কারণে আয়ারল্যান্ডের সাথে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয় বাংলাদেশকে। তাই প্রথম পর্ব থেকে একটি জয়কে সঙ্গী করে ফিরতি পর্বে আবারও উইন্ডিজের মুখোমুখি হয় মাশরাফি বাহিনী। ঐ ম্যাচে বোলাররা বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন দেখান। প্রথম ম্যাচে যেভাবে পারফরমেন্স করেছিলেন মাশরাফি-মুস্তাফিজ-সাকিবরা।এবারও দুর্দান্ত বোলিং নৈপুন্যে উইন্ডিজকে ২৪৭ রানের মধ্যে আটকে রাখেন মাশরাফি-মুস্তাফিজ-সাকিবরা। মুস্তাফিজ ৪টি, মাশরাফি ৩টি ও সাকিব-মিরাজ ১টি করে উইকেট পকেটে ভড়েন।২৪৮ রানের টার্গেট পেয়ে সহজেই তা স্পর্শ করে ফেলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। তামিম ২১, সৌম্য ৫৪, সাকিব ২৯, মুশফিক ৬৩, মোহাম্মদ মিথুন ৪৩, মাহমুদুল্লাহ অপরাজিত ৩০ রান করে বাংলাদেশের ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেন।লিগ পর্বে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচটি হয়ে পড়ে নিয়মরক্ষার ম্যাচ। নিয়মরক্ষার হলেও নিজেদের পারফরমেন্সের ব্যাপারে বেশ সর্তকই ছিলো টাইগাররা। তারপরও রিজার্ভ বেঞ্চ ঝালিয়ে নিতে চারটি পরিবর্তন এনে সেরা একাদশ সাজায় বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট।তবে ডান-হাতি পেসার আবু জায়েদের দুর্দান্ত বোলিং-এর পরও প্রথমে ব্যাট করে বড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়ে ফেলে আয়ারল্যান্ড। ওপেনার পল স্ট্রার্লিং-এ সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটে ২৯২ রান করে আইরিশরা। জায়েদ ৯ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে ৫ উইকেট শিকার করেন।২৯৩ রানের বড় লক্ষ্য স্পর্শ করতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি বাংলাদেশের। কারন ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ফর্মেই রয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। সৌম্যকে বিশ্রামে রেখে লিটন দাসকে ইনিংসের শুরুতে তামিমের সঙ্গী করে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। সুযোগ পেয়েই জ্বলে উঠেন লিটন। তামিমকে নিয়ে ১০০ বলে ১১৭ রানের জুটি গড়েন লিটন। নিজেদের ব্যক্তিগত রানটাও বলার মত করে দাড় করিয়েছেন তারা। তামিম ৫৩ বলে ৫৭ ও লিটন ৬৭ বলে ৭৬ রান করেন।এরপর সাকিব আহত অবসর হবার আগে ৫১ বলে ৫০, মুশফিক-মাহমুদুল্লাহ ৩৫ রান করে করলে ৭ ওভার আগেই ম্যাচ শেষ করে দেন। যার ফলে তিন জয় নিয়ে ফাইনালের মঞ্চে বাংলাদেশ। ফাইনালে তাই এগিয়ে থাকবে রোডস বাহিনীই। সবাই ফর্মে থাকায় দলগঠনে মধুর সমস্যায় পড়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট।আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত ইনিংস খেলা লিটন দাশকে রেখে এই ম্যাচে আবারও ফেরানো হতে পারে, ব্যাক টু ব্যাক ফিফটি হাঁকানো সৌম্য সরকারকে। এছাড়া পেসার রুবেল হোসেনের পরিবর্তে মোস্তাফিজ এবং মোসাদ্দেকের পরিবর্তে ফিরতে পারেন মেহেদি মিরাজও।এবার ফাইনালে লড়াইয়ে নিজেদের মেলে ধরার পালা টাইগারদের। বিশ্বকাপের আগে এই ট্রফিটি বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস অনেকখানি বাড়িয়ে দিবে বলেও অভিমত দিয়েছিলেন টাইগার নেতা মাশরাফি। বলেন, যদি এখান থেকে জিতে বিশ্বকাপে যেতে পারি তাহলে ভালো হবে। দলের সকলের মধ্যেই আত্মবিশ্বাস কাজ করবে।তবে ফাইনাল ম্যাচে জয় সম্ভব বলেই মনে করছেন উইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। তিনি বলেন, অবশ্যই আরও বেশি রান করতে হবে আমাদের। ফিল্ডিংয়েও আমরা নিজেদের ডুবিয়েছি। বেশ কিছু ক্যাচ নিতে পারিনি। বোলাররা মোটামুটি ভালোই করেছে। বেশ সুযোগ সৃষ্টি করেছে। কিন্তু সুযোগগুলো নিতে পারিনি আমরা।তিনি আরও বলেন, আমরা সলিড ক্রিকেট খেলতে চাই। মাঠে আমাদের চাওয়া প্রতিদিনই উন্নতি করা। কালকে উন্নতির আরেকটি সুযোগ। এখনও আমাদের দলটি বেশ তরুণ। বেশ অনভিজ্ঞ। ব্যাপারটা হলো সুযোগ কাজে লাগানোর। আমি স্রেফ দলকে বলব সুযোগ এলে কাজে লাগাতে।এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে ৩৬ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরমধ্যে ১৩ বার জয় পেয়েছে টাইগাররা। ২১টি জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। এই সিরিজের আগে ডাবলিনের ক্যাসেল এভিনিউতে একবার মুখোমুখি হয়েছিলো বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপের ১২তম ম্যাচ ছিলো সেটি। ঐ ম্যাচে ৭ উইকেটে জয় পায় ক্যারিবীয়রা।