সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫২ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশে প্রবেশের ভিসা পেতে ব্যর্থ হয়ে প্রায় সাড়ে তিনশ কাশ্মীরি মেডিক্যাল শিক্ষার্থী এক মাস ধরে দিল্লি, কলকাতা, গৌহাটি ও আগরতলায় আটকা পড়ে আছে। ভারতের অন্যান্য রাজ্যের শিক্ষার্থীরা কোনো সমস্যা ছাড়াই ভিসা পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কলকাতার সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক।
বাংলাদেশের মেডিক্যালে পড়াশোনার জন্য শিক্ষার্থীদের পাঠানোর কাজে জড়িতরা বলছেন, ভিসা পেতে দীর্ঘ বিলম্বের কারণে তারা সমস্যায় পড়েছেন। ওই কোর্সের জন্য অর্থ পরিশোধকারী অভিভাবকরা এখন পরিশোধিত অর্থ ফেরত চাইছেন।
বাংলাদেশ, চীন ও অন্যান্য দেশে মেডিক্যালে পড়ার জন্য শিক্ষার্থী পাঠানোর কাজে নিয়োজিত একটি এডুকেশনাল কনসাল্টেন্সির ব্যবস্থাপক বলেন, শিক্ষার্থীরা গত বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে দিল্লি, কলকাতা, গৌহাটি ও আগরতলার হোটেলগুলোতে বসে আছেন। সাধারণত কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা দিল্লির বাংলাদেশ হাই কমিশনে ভিসার জন্য আবেদন করেন।
নিজের ও তার প্রতিষ্ঠানের পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি ওই ব্যক্তি। ‘খারাপ পরিণতির’ শঙ্কায় পরিচয় প্রকাশ করতে চান না ওই ব্যবস্থাপক।
ওই ব্যবস্থাপক আরো বলেন, বাংলাদেশের কূটনীতিকরা ভারতের অন্যান্য রাজ্যের ছাত্রদের ভিসা দিচ্ছে। কিন্তু আমাদেরকে তারা বলছেন যে, কাশ্মীরি শিক্ষার্থী নিয়ে কিছু সমস্যা আছে।
তবে আরেকটি এডুকেশনাল কনসালটেন্সির ব্যবস্থাপক বলেন, ২০ জনের মতো কাশ্মীরি শিক্ষার্থীকে ভিসা দেয়া হয়েছে এবং তারা বাংলাদেশের মেডিক্যাল কলেজগুলোতে যোগ দিয়েছেন। আমরা ভাবছি যে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে এমন কিছু ঘটে থাকতে পারে। হয়তো ভারত সরকারের নির্দেশনায় কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের ভিসা দেয়া হচ্ছে না।
তবে তিনি এও বলেন, গৌহাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার দীর্ঘ দিনের ছুটিতে আছেন। ফলে গত দু’দিন ধরে আগরতলা মিশনের সহকারী হাই কমিশনার কিরিটি চাকমা রয়েছেন গৌহাটিতে।
তিনি আরো বলেন, এসব শিক্ষার্থী ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে হোটেলে আছেন। তাদের সাথে অনেক অভিভাবকও আছেন। আমরা সবাই বড় ধরনের অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছি।
প্রসঙ্গত, ভুটানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী পেশায় চিকিৎসক। তিনি ২০০১ সালে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে গ্রাজুয়েট হন। পরে তিনি ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে পোস্ট-গ্রাজুয়েট ডিগ্রি নেন সার্জারিতে।
ভারতের কঠিন ভর্তি পরীক্ষা থাকায় কিংবা ভারতের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ফি অনেক বেশি হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি কাশ্মীরিদের কাছে আকর্ষণীয়।
এছাড়া, বাংলাদেশের মেডিক্যালে শিক্ষার মান ভারতের সমমানের। উভয় দেশেই এমবিবিএস প্রোগ্রাম চলে ইংরেজিতে। পাঠ্য বইগুলোও একই। অন্যদিকে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের তাদের রাজ্যে চিকিৎসা শিক্ষা পাওয়ার সুযোগ সীমিত। ফলে তাদের কাছে ভারতের অন্যান্য রাজ্য ছাড়াও বাংলাদেশ হয়ে উঠছে আকর্ষণীয়। তবে ভিসা জটিলতায় তারা এখন বিপাকে পড়েছেন।
সূত্র : নর্থইস্টনাউ