সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৬ অপরাহ্ন
ভিশন বাংলা ডেস্ক: শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষার্থীরা কি শিখল সেটি বড় বিষয় নয়, কে কত জিপিএ পেয়েছে সেটিই এখন বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। জিপিএ নিয়ে তাদেরকে মধ্যে অসম প্রতিযোগিতার কারণে শিক্ষার্থীরা শেখার পরিবেশই পাচ্ছে না। এর ফলে যার মধ্যে যে প্রতিভা আছে সেটি বিকশিতও হচ্ছে না। এই অসম প্রতিযোগিতা থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে আনা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, জিপিএ বেশি পাওয়ার প্রবণতা থেকে সবাইকে বের করে আনা হবে। সে জন্য নতুন ধরনের পাঠ্যপুস্তক তৈরি করা হচ্ছে।
শনিবার (০৭ আগস্ট) শিক্ষাবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ইরাব) ‘কলম’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
দীপু মনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা শিখছে কিন্তু সে নিজে বলতে পারছে না। তার কারণ আমাদের কিছু ঘাটতি রয়েছে। সেগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করা হচ্ছে। আগে ক্লাস শিক্ষকরা নিয়োগের তিন থেকে চার বছর পর বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের সুযোগ পেত। বর্তমানে সেটি পরিবর্তন করা হচ্ছে। কোনো শিক্ষক প্রশিক্ষণবিহীন অবস্থায় পাঠদানের জন্য ক্লাসে যাবেন না, সেটি নিশ্চিত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ঝুলে থাকা অনেক কাজ শেষ করতে সক্ষম হয়েছি। নানা অসঙ্গতি থাকা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনায় এমপিওভুক্তি নীতিমালা যুগোপযোগী করে তোলা হয়েছে। সংশোধিত এ নীতিমালার আলোকে চলতি বছর নতুন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণ করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে আবেদন চাওয়া হবে।
সাবেক তত্ত্বাবধারক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, শিক্ষা সেক্টরে এমন কোনো বাণিজ্য নেই যেটার কবলে আমরা পড়িনি। করোনায় শিক্ষা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতি পোষাতে প্রণোদনা প্রয়োজন আছে। কারণ শিক্ষার সক্ষমতা বাড়াতে বিনিয়োগের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, ইন্টারনেটের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। কারণ স¤প্রতি ইন্টারনেটে সক্ষমতা নিয়ে যে রিপোর্ট এসেছে সেখানে বাংলাদেশ ১৩৭টি দেশের মধ্যে ১৩৫তম। ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমে শিক্ষকদেরকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কারণ এখানে নগরের শিক্ষকরা সুবিধা বেশি পাচ্ছেন। শিক্ষা আইন বাস্তবায়ন খুবই জরুরি। আমরা অনেক ক্ষেত্রে অনেক আইন দেখি। কিন্তু সেটির মনিটরিং ও বাস্তবায়ন জরুরি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, শিক্ষায় কাঠামোগত পরিবর্তন নিয়ে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছিলাম। করোনা আমাদেরকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এরপরও অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দুই-একটি ছাড়া বাকি কার্যক্রম আমরা করতে পেরেছি। আমাদের মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক ঘাটতি ছিল। আমরা ইতোমধ্যে সেটি পূরণ করার চেষ্টা করেছি।
কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম বলেন, পিএসসির পক্ষ থেকে এক হাজার ২০০ শিক্ষকের নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। খুব শিগগিরই তারা নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। এছাড়াও সাড়ে চার হাজার শিক্ষক নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
ইরাবের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল আলম সুমনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, সাংবাদিক শরিফুজ্জামান পিন্টু, ইরাবের সভাপতি সাব্বির নেওয়াজ, সহ-সভাপতি নিজামুল হক প্রমুখ।