বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪, ০৪:৫০ অপরাহ্ন

ঘরের মাঠেও হেরে গেল বাংলাদেশ

ঘরের মাঠেও হেরে গেল বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক: ‘হোম অব ক্রিকেট’ খ্যাত মিরপুরে শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা আর বিদ্রুপ সবসময়ই চলতে থাকে। বাংলাদেশ এই মাঠ ছাড়া জিতে না- গত কয়েকমাসে এমন কথাও প্রচলিত হয়ে গেছে। তবে আজ সেই কথাটি সত্য প্রমাণিত হলো না। সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে লজ্জাজনক পারফর্ম করে দেশের মাটিত প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচও হেরে গেল বাংলাদেশ। আজ সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ৪ উইকেটে হেরেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। ২২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হাসান আলী।

রান তাড়ায় নেমে পাকিস্তানের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলা দলটি ১৬ রানেই প্রথম উইকেট হারায়। ইনফর্ম মোহাম্মদ রিজওয়ানকে (৮) বোল্ড করে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। আরেক ওপেনার তথা অধিনায়ক বাবর আজমও তাসকিনের বলে বোল্ড হওয়ার আগে করে ৯ বলে ৩ রান। পাকিস্তানের দূর্গে তৃতীয় আঘাত হানেন মেহেদি হাসান। এই স্পিনারের বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েন হায়দার আলী (২)। বিশ্বকাপে দারুণ ব্যাটিং করা অভিজ্ঞ অল-রাউন্ডার শোয়েব মালিক আজ ‘ডাক’ মেরে ফিরেন। তাকে দারুণভাবে রান-আউট করেন নুরুল হাসান সোহান। ২৪ রানে নেই ৪ উইকেট।

দ্রুত উইকেট হারানোয় পাকিস্তানের রান তোলার গতি কমে যায়। এই পরিস্থিতি থেকে দলকে আবার টেনে তোলেন ফখর জামান আর খুশদিল শাহ। পঞ্ম উইকেটে তারা ৫০ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। ৩৬ বলে ৩৪ করা ফখর জামানকে সোহানের গ্লাভসবন্দি করে ব্রেক থ্রু দেন তাসকিন। এরপর খুশদিল শাহকে ফেরান শরীফুল। আউট হওয়ার আগে ৩৫ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ৩৪ রান করেন খুশদিল। শেষ তিন ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন হয় ৩২ রানের।

মুস্তাফিজুর রহমানের করা ১৮তম ওভারেই আবারও ম্যাচে ফিরে পাকিস্তান। ওই ওভার থেকে ১৫ রান নেন শাদাব আর নওয়াজ। ১৯তম ওভারে শরীফুলও মার খান। নওয়াজের দুই ছক্কায় আসে আরও ১৫ রান। আমিনুল ইসলামের করা শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরে পাকিস্তানকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন শাদাব খান। এই লেগস্পিনারকে শেষ ওভারেই কেন প্রথমবারের মতো বল দেওয়া হলো- সেটাও রহস্য বটে! ১০ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ২১* রানে অপরাজিত শাদাব খান। আর মোহাম্মদ নওয়াজ অপরাজিত থাকেন ৮ বলে ১ চার ২ ছক্কায় ১৮* রানে। ওভারে ৩১ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মেহেদি, মুস্তাফিজ আর শরিফুল।

এর আগে আজ শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৭ রান তোলে বাংলাদেশ। করোনা পরবর্তী সময়ে বহুদিন পর মিরপুরে ফিরেছে দর্শক। ঘরের মাঠে দর্শকদের সাথে নিয়েও ব্যাটিংয়ে সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। দলীয় ৩ রানে  হাসান আলীর বলে উইকটকিপার রিজওয়ানের গ্লাভসবন্দি হন মোহাম্মদ নাঈম (৩ বলে ১)। হুট করে সুযোগ পাওয়া আরেক ওপেনার অভিষিক্ত সাইফ হাসানও ১ রান করে ফিরেন মোহাম্মদ ওয়াসিমের বলে ফখর জামানের হাতে ক্যাচ দিয়ে।

দলের ধসের শুরুটা হয় এভাবেই। নাজমুল হাসান শান্ত আজও সমালোচনার জবাব দিতে পারেননি। আউট হয়েছেন ১৪ বলে ৭ রান করে। তাকে কট অ্যান্ড বোল্ড করে দেন ওয়াসিম। ১৫ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর আফিফ হোসেনকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। রিয়াদ ১১ বলে ৬ রান করে মোহাম্মদ নেওয়াজের বলে বোল্ড হন। ৪০ রানে ৪ উইকেটের পতন। বাংলাদেশের ইনিংসের অর্ধেক শেষ হয় আফিফ হোসেনের বিদায়ে। শাদাব খানের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে আফিফ ৩৪ বলে ২ চার ২ ছক্কায় করেন ৩৬ রান।

বিশ্বকাপে ব্যর্থ নুরুল হাসান সোহানও বেশ হাত খুলে মারার চেষ্টা করেছিলেন। শাদাব খান এবং ওয়াসিমের বলে দুটি ছক্কাও মারেন। তার ইনিংস যখন আশা জাগাচ্ছে, তখন ফের ছন্দপতন। ২২ বলে ২ ছক্কায় ২৮ রান করা সোহানকে রিজওয়ানের গ্লাভসবন্দি করেন হাসান আলী। ১৭তম ওভারে দলীয় ৯৬ রানে ৬ষ্ঠ উইকেটের পতন। আমিনুলকে (২) বোল্ড করে দেন হাসান আলী। শেষের দিকে শেখ মেহেদি ২০ বলে ১ চার ২ ছক্কায় ৩০ রান করে বড় অবদান রাখেন। তাসকিনও ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা মেরে দলের স্কোরকে ১২৭ এ পৌঁছে দেন। ২২ রানে ৩ উইকেট নেন হাসান আলী। ওয়াসিম নিয়েছেন ২ উইকেট।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com