মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন
ভিশন বাংলা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মার্সার ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় বিদেশি কর্মীদের বসবাসের জন্য দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর নির্বাচিত হয়েছে ঢাকা। বিশ্বের ৪০০টিরও বেশি শহরের দুই শতাধিক পণ্য ও সেবার মূল্যের ভিত্তিতে চালানো নতুন এক জরিপে সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরের তালিকা বুধবার প্রকাশ করেছে নিউইয়র্কভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠান।
সূচকে চলতি বছর ঢাকার অবস্থান ৫৮ ধাপ অবনমন ঘটলেও মার্সারের ‘কস্ট অভ লিভিং সার্ভে-২০২২’ শীর্ষক এই জরিপে প্রবাসীদের জন্য এখনও বিশ্বের ব্যয়বহুল ১০০ শহরের মধ্যে আছে ঢাকা।
২০২২ সালে প্রবাসী কর্মীদের জন্য বিশ্বের ৯৮তম ব্যয়বহুল শহর নির্বাচিত হয়েছে ঢাকা। যদিও এই জরিপে আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে ঢাকার অবস্থান ছিল ৪০তম। তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে ঢাকা ছিল ২০তম অবস্থানে। ফলে শীর্ষ ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় থাকলেও ঢাকা ক্রমান্বয়ে বিদেশীদের জন্য কম ব্যয়বহুল হচ্ছে।
বিদেশী কর্মীদের বসবাসের জন্য ঢাকা এখনও বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত কিছু শহরের তুলনায় ব্যয়বহুল রয়েছে। মার্সারের এই তালিকায় মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর ১৮১তম, কাতারের দোহা ১৩৩তম, সৌদি আরবের জেদ্দা ১১১তম, কানাডার ভ্যানকুভার ১০৮তম, থাইল্যান্ডের ব্যাংকক ১০৬তম এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা রয়েছে ১০৪তম অবস্থানে।
এ বছর মার্সার বিশ্বের ৪০০টিরও বেশি শহরে জরিপ পরিচালনা করে ২২৭টি শহরের সূচক তৈরি করেছে। আবাসন, পরিবহন, খাদ্য, পোশাক, গৃহস্থলি পণ্য-সামগ্রী এবং বিনোদনসহ প্রত্যেকটি শহরের দুই শতাধিক পণ্য ও পরিষেবার তুলনামূলক খরচের ভিত্তিতে এই সূচক তৈরি করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরকে সমস্ত তুলনার জন্য ভিত্তি শহর হিসেবে ধরা হয়েছিল। আর প্রত্যেকটি শহরে প্রবাসীদের জীবন-যাপনের ব্যয় মার্কিন ডলারের বিপরীতে তুলনা করা হয়। চলতি বছরের মার্চে এসব শহরের খরচের তুলনা করে জরিপটি পরিচালনা করেছে মার্সার।
সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় ভারতের মুম্বাই ১২৭তম, নয়াদিল্লি ১৫৫তম, চেন্নাই ১৭৭তম এবং বেঙ্গালুরু ১৭৮তম অবস্থানে রয়েছে। সেই হিসেবে প্রবাসী কর্মীদের জন্য এসব শহর ঢাকার (৯৮তম) তুলনায় কম ব্যয়বহুল।
এমনকি শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতেও প্রবাসীদের ব্যয় ঢাকার তুলনায় অনেক কম। সূচকে কলম্বোর অবস্থান ১৮৩তম। এরপরই ভারতের হায়দরাবাদ ১৯২তম, পুনে ২০১তম এবং কলকাতা ২০৩তম অবস্থানে রয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবাসীদের জীবনযাপনের জন্য সবচেয়ে কম ব্যয়বহুল শহর নির্বাচিত হয়েছে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ এবং করাচি। বৈশ্বিক হিসেবে এই শহর দুটির অব্স্থান যথাক্রমে ২২৪ এবং ২২৩তম। বিশ্বের সবচেয়ে কম ব্যয়বহুল শহরের হিসেবেও শহর দুটির অবস্থান চতুর্থ এবং পঞ্চম।
সূচকে বিদেশি কর্মীদের জন্য সবচেয়ে সস্তা শহর নির্বাচিত হয়েছে তুরস্কের আঙ্কারা, কিরগিজস্তানের বিশকেক এবং তাজিকিস্তানের দুশানবে। অন্যদিকে, প্রবাসী কর্মীদের জন্য আবারও বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর হয়েছে হংকং (১ম)। এরপরই সূচকে দ্বিতীয় স্থানে আছে জুরিখ (২য়), সুইজারল্যান্ডের তিন শহর জেনেভা (৩য়), বাসেল (৪র্থ) এবং বার্ন (৫ম)।
এছাড়া আন্তর্জাতিক কর্মীদের বসবাসের জন্য বিশ্বের শীর্ষ ১০টি সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরের চারটির অবস্থানই এশিয়ায়।
মার্সারের অংশীদার এবং মবিলিটি বিজনেসের বৈশ্বিক প্রধান ইভন ট্র্যাবার বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৃষ্ট অস্থিরতা এবং ইউক্রেন সংকট বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাকে আরও উসকে দিয়েছে। এই অনিশ্চয়তার সঙ্গে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি সংশ্লিষ্ট। প্রবাসী কর্মীরা তাদের ক্রয় ক্ষমতা এবং আর্থ-সামাজিক স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বিগ্ন।