পদাধিকারবলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) চেয়ারম্যান ও সচিবের সদস্য হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত আইনি বিধান কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, জানতে রুল জারি করা হয়েছে।এ সংক্রান্ত এক রিটে প্রাথমিক শুনানির পর গত সোমবার এ রুলসহ আদেশ বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর দ্বৈত বেঞ্চ।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তৌফিক ইনাম টিপু, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী অনীক হোসেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা নওয়াব আলী মণ্ডল গত ১০ মে রিটটি করেন। রিটে তার মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিলের প্রজ্ঞাপন, ভাতা বন্ধ ও কাউন্সিল গঠন সংক্রান্ত জামুকা আইনের ৬(১) (ক) ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। এ বিধান অনুসারে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জামুকার চেয়ারম্যান আর সচিব সদস্য।
আজ মঙ্গলবার আইনজীবী তৌফিক ইনাম টিপু সাংবাদিকদের বলেন, ‘রুল জারির পাশাপাশি হাইকোর্ট নওয়াব আলী মণ্ডলের মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিলসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন তিন মাসের জন্য স্থগিত করে তার ভাতা অব্যাহত রাখতেও নির্দেশ দিয়েছেন।’এ আইনজীবী আরো বলেন, ‘জামুকা একটি স্বাধীন, সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। জামুকার অন্যতম প্রধান কাজ গেজেটভুক্ত কোনো মুক্তিযোদ্ধা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নয় বলে তদন্তে প্রতীয়মান হলে তার গেজেট বাতিল এবং নতুন মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেটভুক্ত করতে মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করা। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও সচিব জামুকার সর্বোচ্চ পদে থেকে মন্ত্রণালয়ে যে সুপারিশ পাঠান, সে সুপারিশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়।
বিষয়টা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে, যিনি তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ তিনিই আবার বিচারক। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী জামুকার সব নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী এবং তিনি আবার মন্ত্রণালয়ের প্রধান। যে কারণে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় একই প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এটি ন্যায়বিচারনীতির পরিপন্থী।’রুল শুনানির পর আইনের এ বিধান উচ্চ আদালতে বাতিল হবে বলে মনে করেন আইনজীবী তৌফিক এনাম টিপু।