সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০২ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক :
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রীশিবপুর গ্রামের মোঃ ফকর উদ্দিন খান নামে এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করেও প্রতারণার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি একজন নাবালক ছিলেন। ২০০০ সালের ভোটার তালিকায় তার জন্ম তারিখ হলো ২৯-১০-১৯৫৭ এবং ভোটার নম্বর-২৫০। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভূক্তিতে যাতে কোনো সমস্যা না হয় একারণে বয়স বাড়ানোর জন্য ২০০৮ সালের ভোটার তালিকায় তার জন্ম তারিখ সংশোধন করেন, যা হলো ১৫-০২-১৯৫৩। জালিয়াতি করে মুক্তিযোদ্ধা সনদ সংগ্রহ করে তিনি এলাকায় সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড পরিচালনা, অন্যের জমি দখল, চাঁদাবাজীসহ নানা অপকর্ম পরিচালনা করছে। এ ব্যাপারে জামুকা, বরিশাল জেলা প্রশাসক, বাকেরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার, এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। আগামীকাল ১৯-০৭-২০২৩ ইং তারিখে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে অভিযোগের বিষয়ে শুনানী অনুষ্ঠিত হবে।
১৯৭১ সালে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর কবল থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে বাঙালি জাতি ও মুক্তিযোদ্ধারা নয় মাস যুদ্ধ করেছেন, এ ইতিহাস তর্কের ঊর্ধ্বে। এই প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস নিঃসন্দেহে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জাতির পবিত্র আবেগ ও গৌরবের মধ্যে মিশে আছে, যে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে মাতৃভূমি বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে। অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন এবং পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান এবং সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা তাদের প্রাপ্য। একাত্তরে কোনো পার্থিব চাহিদার কারণে নয়, বরং শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তারা জীবনবাজি রেখেছিলেন। এমনকি অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা সনদ পর্যন্ত নেননি কেবল নিঃস্বার্থ যুদ্ধ করেছেন বলে।
কিন্তু সরকার জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ ও সম্মানস্বরূপ মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু সুযোগ-সুবিধা এবং অনারিয়াম দেয়ায় অমুক্তিযোদ্ধাদের আবির্ভাব ঘটেছে। মুক্তিযোদ্ধা শব্দটি আমাদের কাছে অনেক বেশি শ্রদ্ধার। কিন্তু, যদি কেউ প্রতারণার মাধ্যমে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে, তবে সেটি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের জন্য অবমাননাকর তাই এলাকাবাসীর দাবী দ্রুত এই অমুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করা হোক।