বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৫৪ অপরাহ্ন
সুমন খান গজারিয়া মুন্সিগঞ্জ: আজ বিশ্ব নদী দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সভাপতিত্বে পর্যটন কর্পোরেশন বাংলাদেশ মিলনায়তনে সকল নদী যোদ্ধাদের সংগঠন গুলোর সমন্বয়ে এক মতবিনিময় ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা। উল্লেখ্য থাকে যে ১৯৮০ সাল থেকে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসের শেষ রবিবার (চলতি বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব নদী দিবস হিসেবে পালন করতে শুরু করে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া (বিসি) ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি। যার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছিল বিসি রিভারস ডে পালন দিয়ে। ১৯৮০ সালে কানাডার খ্যাতনামা নদীবিষয়ক আইনজীবী মার্ক অ্যাঞ্জেলো দিনটি ‘নদী দিবস’ হিসেবে পালনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বিসি রিভারস ডে পালনের সাফল্যের হাত ধরেই তা আন্তর্জাতিক রূপ পায়।নদী দিবসে এসে বলতে হচ্ছে, আমাদের দেশে নদ-নদী দখল ও দূষণের চিত্র অত্যন্ত উদ্বেগজনক। দীর্ঘদিন ধরে এদিকে খেয়াল না দেওয়ায় দেশের ২৩০টি নদ-নদী আজ মৃতপ্রায়। এসব নদ-নদী দখলবাজরা দীর্ঘদিন ধরে দখল করে আসছে। তা ছাড়া নদীগুলো আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, মিল-কলকারখানার বর্জ্য, নদীর পারে গড়ে ওঠা শহর, নগরের মানুষের ব্যবহারের দূষিত নোংরা পানি, শহর বাজারের (মাছ, মাংস বাজারের নোংরা বর্জ্য) ড্রেনে দীর্ঘদিন জমে থাকা দূষিত বর্জ্য সরাসরি ড্রেনের মাধ্যমে নদীর সঙ্গে সংযোগ রাখার কারণে সাংঘাতিকভাবে নদীদূষণ হচ্ছে। মৃতপ্রায় এসব নদ-নদী দেখলে মনে হয় এ যেন বর্জ্য রাখার ভাগাড়। এসব নদ-নদী ধ্বংস করার পেছনে কাজ করছে স্থানীয় ক্ষমতাধর প্রভাবশালী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের দৌরাত্ম্যও রয়েছে। নদীদূষণ ও দখল এখন নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। আমাদের প্রায় প্রতিদিনই নদীদূষণ ও দখলের খবর মিডিয়ার মাধ্যমে চোখে পড়ে। বিআইডব্লিউটির এসব বিষয়ে দেখভাল করার কথা থাকলেও তাদের দায়িত্বহীনতার কারণে দখলদাররা নদীদখল অব্যাহত রেখেছে। সারাদেশে নদীনালা, খাল-বিল অবৈধভাবে দখল হওয়ার কারণে পানিপ্রবাহের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। শহর এলাকায় বস্তিবাসীদের অপরিকল্পিত অস্বাস্থ্যকর টয়লেট ব্যবস্থা ও বিভিন্ন ভবনের টয়লেট ড্রেনের সঙ্গে সংযোগ করে নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে নদ-নদীর পানি ব্যবহারের অনুপযোগী ও জলজ প্রাণী ধ্বংস হচ্ছে। অন্যদিকে পরিবেশ মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়ছে। নদীদূষণ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। লঞ্চ-স্টিমার নির্মাণ ও মেরামতকালে নদী ও সমুদ্রের পাড়ে তৈলাক্ত বর্জ্য নিঃসরণ বন্ধ করতে হবে।যেহেতু ক্ষমতাবান প্রভাবশালীরা নদীকে ধ্বংস করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে, নদীগুলো উদ্ধারের কাজে সরকারের সঙ্গে সাধারণ জনগণের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে কাজকে বেগমান করতে পারলে, খননের সঙ্গে সঙ্গে নদীদূষণমুক্ত হলে দেশের নদীগুলো বাঁচবে, জলজ প্রাণী বাঁচবে, পরিবেশ বাঁচবে।