বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৩ অপরাহ্ন

অনেক ঘটনাবহুল এক সিরিজ জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা

অনেক ঘটনাবহুল এক সিরিজ জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা

ভিশন বাংলা ডেস্ক: মাঠে কথার লড়াই, বল টেম্পারিং-এর মতো ঘটনা-দুর্ঘটনা আলোচিত-সমালোচিত চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজে অস্ট্রেলিয়াকে হারালো স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। জোহানেসবার্গে চতুর্থ টেস্টে অসিদের ৪৯২ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিলো প্রোটিয়ারা। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানে জয়ের রেকর্ডও গড়লো দক্ষিণ আফ্রিকা। পাশাপাশি দেশের মাটিতে ৪৮ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ পেলো ডু-প্লেসিস-ডি ভিলিয়ার্সরা। ১৯৭০ সালে সর্বশেষ দেশের মাটিতে চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজে অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশ করেছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর দুই দলের মধ্যে সাতটি টেস্ট সিরিজের মধ্যে পাঁচটিতে জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। বাকি দুইটি হয় ড্র।

ম্যাচ জয়ের মঞ্চটা গতকালই তৈরি করে রেখেছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়ার সামনে ৬১২ রানের পাহাড় সমান টার্গেট ছুড়ে দেয় প্রোটিয়ারা। সেই লক্ষ্যে ৩ উইকেটে ৮৮ রান তুলে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছিলো অস্ট্রেলিয়া। তাই ম্যাচ জয়ের জন্য পঞ্চম ও শেষ দিনে ৫২৪ রান প্রয়োজন পড়ে অসিদের। পক্ষান্তরে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার হয় ৭ উইকেট।

এমন সমীকরণ মাথায় রেখে পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা শুরু করে দু’দল। দিনের শুরুটা চমৎকারভাবে করেছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। দিনের চতুর্থ বলেই মিচেল মার্শকে ফিরিয়ে দেন প্রোটিয়া পেসার ভারনন ফিলান্ডার। ৭ রান নিয়ে খেলতে নেমে সেখানেই থেমেছেন মার্শ।

২৩ রান নিয়ে শুরু করা পিটার হ্যান্ডসকম্বও বেশিক্ষণ উইকেটে টিকে থাকতে পারেননি। মাত্র ১ রান করে তিনিও ফিলান্ডারের শিকার হন।

দিনের শুরুতেই ২ উইকেট তুলে নিয়ে জ্বলে উঠার ইঙ্গিত দেন ফিলান্ডার। এরপর অস্ট্রেলিয়ার বাকী ৫ উইকেটের মধ্যে দ্রুতই বাকী ৪টি তুলে নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১১৯ রানেই অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। আজ মাত্র ১৬ দশমিক ৪ ওভার ব্যাট করে মাত্র ৩১ রান যোগ করতে সমর্থ হয় অসিরা।

চার নম্বরে নামা হ্যান্ডসকম্ব আউট হলে পরের দিকে আর কোন ব্যাটসম্যানই দু’অংকের কোটা স্পর্শ করতে পারেননি। মিচেল মার্শ শুন্য, অধিনায়ক-উইকেটরক্ষক টিম পাইন ৭, প্যাট কামিন্স ১, নাথান লিঁও ৯ ও চাঁদ শ্রেয়াস শুন্য রান করেন। ৯ রানে অপরাজিত থাকেন জশ হ্যাজেলউড। দক্ষিণ আফ্রিকার ফিলান্ডার প্রথম ইনিংসে ৩০ রানে ৩ উইকেট এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ২১ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন। পুরো সিরিজে ৪৪৩ রানে ২৩ উইকেট নিয়ে সেরা খেলোয়াড় হন দক্ষিণ আফ্রিকার ডান-হাতি পেসার কাগিসো রাবাদা।

টেস্ট সিরিজে শুরুতে ২২ গজে দক্ষিণ আফ্রিকার ডান-হাতি পেসার কাগিসো রাবাদার সাথে অস্ট্রেলিয়ার স্টিভেন স্মিথ-ডেভিড ওয়ার্নারের সাথে বাদানুবাদেও পর ধাক্কা-ধাক্কি। ফলে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পান রাবাদা। এমন উত্তেজনাকর অবস্থায় বল টেম্পারিং-এ ঘটনা ঘটায় অস্ট্রেলিয়া। কেপটাউনে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে বল টেম্পারিং করে নিজ দেশের বোর্ড কর্তৃক এক বছরের নিষেধাজ্ঞা পান স্মিথ-ওয়ার্নার। বল টেম্পারিং করা তরুন ব্যাটসম্যান ক্যামেরুন ব্যানক্রফট নিষিদ্ধ হন নয় মাসের জন্য।
সিরিজে তৃতীয় ম্যাচে বল টেম্পারিং-এর জন্য ক্রিকেট বিশ্বের দুয়োধ্বনি শোনার পরও মানসিকভাবে শক্ত থেকে মাঠের লড়াইয়ে শামিল হয়েছিলো অস্ট্রেলিয়া। ঘটনাবহুল এক সিরিজ তো শেষ করতে পারলো অস্ট্রেলিয়া।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
দক্ষিণ আফ্রিকা : ৪৮৮ ও ৩৪৪/৬ডি, ১০৫ ওভার (ডু-প্লেসিস ১২০, এলগার ৮১, কামিন্স ৪/৫৮)।
অস্ট্রেলিয়া : ২২১ ও ১১৯, ৪৬.৪ ওভার (বার্নস ৪২, হ্যান্ডসকম্ব ২৪, ফিলান্ডার ৬/২১)।
ফল : দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৯২ রানে জয়ী।
সিরিজ : চার ম্যাচের সিরিজ ৩-১ ব্যবধানে জিতলো দক্ষিণ আফ্রিকা।
ম্যাচ সেরা : ভারনন ফিলান্ডার (দক্ষিণ আফ্রিকা)।
সিরিজ সেরা : কাগিসো রাবাদা (দক্ষিণ আফ্রিকা)।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com