শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:১৯ অপরাহ্ন
শাহান সাহাবুদ্দিন, বিশেষ প্রতিনিধি:
গাজীপুরের মাটি কেঁপে উঠেছে সহকর্মীর রক্তের আহাজারিতে। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ–এর সাহসী সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সারাদেশের মতো গাজীপুরেও নেমে এসেছে তীব্র প্রতিবাদের ঝড়।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) সকাল ১১টায় গাজীপুর সদর উপজেলার হোতাপাড়ায় গাজীপুর সাংবাদিক পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রকম্পিত হয়েছে প্রতিবাদের স্লোগান—“সাংবাদিক হত্যা বন্ধ কর, হত্যাকারীর বিচার কর”।
সভাপতি মো. মোজাহিদ–এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান সবুজ–এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা, কবি ও লেখক শাহান সাহাবুদ্দিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহান সাহাবুদ্দিন ক্ষোভে ও বেদনায় বলেন,
“সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ড শুধু একজন মানুষের মৃত্যু নয়, এটি সত্য ও গণমাধ্যমের ওপর বর্বর আঘাত। স্বাধীনতার পর থেকে অন্তত ৩৩ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন, অধিকাংশ হত্যার বিচার হয়নি। আমরা স্পষ্টভাবে দাবি জানাচ্ছি—তুহিন হত্যার দ্রুত তদন্ত, খুনিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশেষ আইন প্রণয়ন করতে হবে। বিচার না হলে এই আন্দোলন গাজীপুর থেকে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে।”
সভাপতি মো. মোজাহিদ বলেন,
“সাংবাদিক হত্যা মানে গণতন্ত্রের শ্বাসরোধ। আমরা তুহিন হত্যার বিচার আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকব।”
সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান সবুজ বলেন,
“সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যার বিচার না হলে দেশে স্বাধীন সাংবাদিকতা টিকবে না। অন্তর্বর্তী সরকারকে বলছি—তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়ে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।”
সংক্ষেপ বক্তব্যে সাংবাদিক মাহমুদুল হাসান, আজহারুল ইসলাম সজল ও মো. ইব্রাহিম বলেন,
“তুহিন হত্যার নেপথ্যের সকলকে আইনের আওতায় আনতে হবে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া এ ধরনের অপরাধ বন্ধ হবে না।”
মানববন্ধনে গাজীপুরে কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার অর্ধশতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন—মাহবুবুল আলম, মো. মনিরুজ্জামান, সাদ্দাম হোসেন অনন্ত, হুমায়ুন কবির তুষার, জহিরুল ইসলাম, শেখ ফরিদ, আরিফ হোসেন, আলমগীর ইসলাম, মাহাদী হাসান মিঠুন, এম এইচ হৃদয় খান, ছাত্রনেতা আজিজুর রহমান তুহিন, সাকিব হোসেনসহ আরও অনেকে।
বক্তারা ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠে ঘোষণা দেন—“সাংবাদিকদের উপর হামলা, নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব।”