প্রাণঘাতী কফ সিরাপ কাণ্ডে একাধিক শিশুর মৃত্যুর পর ওষুধ প্রস্তুতকারকদের প্রতি কঠোর অবস্থান নিয়েছে ভারত সরকার। দেশজুড়ে সব ওষুধ কারখানাকে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মান অনুযায়ী উৎপাদন ইউনিট আধুনিকায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সময়সীমা বাড়ানোর কোনো সুযোগ এবার দেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সরকারি সূত্রে জানা যায়, বড় ওষুধ কোম্পানিগুলোর জন্য আধুনিকায়নের সময়সীমা শেষ হয়েছে চলতি বছরের জুনে। ছোট ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর (MSMEs) জন্য নির্ধারিত সময়সীমা ডিসেম্বর ২০২৪। তবে প্রাণঘাতী ‘Coldrif’ কফ সিরাপে বিপজ্জনক রাসায়নিক ডাই-ইথিলিন গ্লাইকোল (DEG) শনাক্তের পর আর কোনো ছাড় না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, DEG-এর উপস্থিতি অনুমোদিত সীমার প্রায় ৫০০ গুণ বেশি পাওয়া গেছে। তামিলনাড়ুভিত্তিক Sresan Pharmaceuticals কোম্পানির উৎপাদিত এই সিরাপ সেবনের পর মধ্যপ্রদেশে একাধিক শিশুর মৃত্যু হয়। ঘটনাটির পর প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে এবং কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা গ্রেপ্তার হয়েছেন।
ভারতের Central Drugs Standard Control Organisation (CDSCO) জানিয়েছে, ভবিষ্যতে সব কারখানাকে প্রতিটি কাঁচামাল ও তৈরি ওষুধের ব্যাচ পরীক্ষা বাধ্যতামূলকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। উৎপাদন ইউনিটগুলোর পরিদর্শন জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে রাজ্য পর্যায়ের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে।
সরকারের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “মানহীন উৎপাদনের কারণে মানুষ মারা যাচ্ছে। তাই আর কোনো সময়সীমা বাড়ানো হবে না।”
ভারতের ওষুধ শিল্পে বর্তমানে প্রায় ৩ হাজার কোম্পানি ও ১০ হাজারের বেশি উৎপাদন ইউনিট রয়েছে। সরকার জানিয়েছে, যারা সময়মতো কারখানার মানোন্নয়ন করতে ব্যর্থ হবে, তাদের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ইতোমধ্যেই ভারতীয় কফ সিরাপ কেলেঙ্কারি নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে এবং রফতানিকৃত পণ্যের ওপর অতিরিক্ত নজরদারির পরামর্শ দিয়েছে।
সূত্র: Reuters।