মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪০ পূর্বাহ্ন
ভিশন বাংলা নিউজ: ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড কোম্পানিটি অবসায়ন বা অবলুপ্তি করার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টের শোকজ নোটিশ স্থগিতের আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামীকাল সোমবার আদেশ দেবেন আপিল বিভাগ।
আজ রবিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে ডেসনিটির পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। এ ছাড়া জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন একেএম বদরুদ্দোজা।
এর আগে ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড কোম্পানি কেন অবলুপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হবে, তা জানতে চেয়ে শোকজ নোটিশ জারি করে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৪ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়। গত ১৫ মে বিচারপতি এম আর হাসান (মো. রেজাউল হাসান)-এর একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে ওই কোম্পানির পরিচালক লে জে এম হারুন-অর-রশীদ ও ৫ শেয়ার হোল্ডারের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এবিএম সিদ্দিকুর রহমান খান ও মাইনুল ইসলাম। এ ছাড়া জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট একেএম বদরুদ্দোজা।
পরে একেএম বদরুদ্দোজা বলেছিলেন, ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর রেজিস্টার্ড হওয়া কোম্পানিটি ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত চলমান বর্ষগুলোয় বার্ষিক সাধারণ সভা করার কথা ছিল। কিন্তু তা করতে না পারায়, বিলম্বের মার্জনা চেয়ে ওই কোম্পানির পরিচালক লে জে এম হারুন-অর-রশীদ ও ৫ শেয়ারহোল্ডার হাইকোর্টে আবেদন করেন।
হারুন-অর-রশীদ ছাড়াও আবেদনকারী বাকি ৫ জন হলেন কাজী মোহাম্মদ আশরাফুল হক, মো. সাইফুল আলম রতন, সিরাজুম মুনীর, মো. জাকির হোসেন ও বিপ্লব বিকাশ শীল।
ওই আবেদনে বিবাদী করা হয় জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের রেজিস্ট্রার ও ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডকে।
একেএম বদরুদ্দোজা বলেন, ‘আইন অনুসারে প্রতি ইংরেজি পঞ্জিকা বছরের বার্ষিক সাধারণ সভা করতে হয়। এতে ব্যর্থ হলে কোম্পানির যে কোনো সদস্যের আবেদনক্রমে আদালত উক্ত কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা আহ্বান করতে অথবা আহ্বান করার নির্দেশ দিতে পারবে এবং আদালত উক্ত সভা আহ্বান, অনুষ্ঠান ও পরিচালনার জন্য যেরূপ সমীচীন বলে বিবেচনা করবে, সেরূপ অনুবর্তী ও আনুষঙ্গিক আদেশ প্রদান করতে পারবে। তাই আইন অনুসারে তারা হাইকোর্টে আবেদন করেন। কিন্তু যে ৬ জন আবেদন করেছেন, তাদের মধ্যে ডেসটিনির সভাপতি ও সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদ শর্তসাপেক্ষে জামিনপ্রাপ্ত। জামিনের শর্ত ছিল, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি এ কোম্পানির কোনো কার্যক্রমের সঙ্গে কোনোরকম সম্পর্ক রাখবেন না। আবেদনে তদন্ত শেষ হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে কিছু বলা নেই। ফলে তিনি আবেদন করতে পারেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। এ ছাড়া তাদের এজিএমের (বার্ষিক সাধারণ সভা) আবেদনে উল্লেখ আছে ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কোম্পানির কোনও অডিট নেই। অডিট রিপোর্ট না থাকলে বার্ষিক সাধারণ সভা কীভাবে হবে?’
একেএম বদরুদ্দোজা আরও বলেন, ‘আবেদনে তারা বলেছে দুদকের মামলায় সমস্ত সম্পদ জব্দকৃত এবং সে সম্পদ তত্ত্বাবধানে তত্ত্বাবধায়কও নিয়োজিত আছেন। ফলে কার্যত কোম্পানি হিসেবে এর কোনও কর্মকাণ্ড নেই। এ ছাড়া ৭ পরিচালকের মধ্যে ২০১২ সালের অক্টোবর থেকে কোম্পানির পরিচালক রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসেন জেলে এবং চারজন পলাতক আছেন। এ ছাড়া তদন্ত চলাকালে অপর পরিচালক হারুন-অর-রশীদ এ কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করবেন না এমন শর্তে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন। দুদকের কারণে ৬ বছর ধরে কোম্পানির কার্যক্রম প্রায় বন্ধ। এখন পরিচালক ছাড়া এজিএম হবে কীভাবে?’
এ কারণে আদালত এজিএমের বিষয়ে আদেশ না দিয়ে কোম্পানিটি বিলুপ্তি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের প্রতি শোকজ নোটিশ জারি করেছেন বলেও জানান এ আইনজীবী।
এর আগে গত ১৫ মে ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড কোম্পানিতে পাঠানো হাইকোর্টের নোটিশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের পরিচালক লে জে এম হারুন-অর-রশীদ ও ৫ জন শেয়ার হোল্ডার। এর পর গত ২১ মে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে ২৭ মে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। সেই অনুসারে আজ রবিবার শুনানি শেষে আদেশের জন্য আগামীকাল সোমবার দিন নির্ধারণ করেন আপিল বিভাগ।