বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১১:২৯ অপরাহ্ন

অভ্যস্ত ব্র্যান্ডই বাংলাদেশের সাফল্যের সূত্র

অভ্যস্ত ব্র্যান্ডই বাংলাদেশের সাফল্যের সূত্র

Abu Dhabi: Bangladeshi players get together to celebrate the dismissal of Pakistan's Babar Azam during the one day international cricket match of Asia Cup between Pakistan and Bangladesh in Abu Dhabi, United Arab Emirates, Wednesday, Sept. 26, 2018. AP/PTI(AP9_26_2018_000190B)

ক্রীড়া প্রতিবেদক : মাস পাঁচেক আগে এমনই এক তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ বাজে হারে শুরু করেছিল বাংলাদেশ। হারের ভুল থেকে এরপর সাফল্যের ফুলও ফুটেছিল। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ এবং যুক্তরাষ্ট্র সফরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২-১-এ টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতার সাফল্যের পুনরাবৃত্তি কি এবার দেশের মাটিতেও ঘটাতে পারবেন সাকিব আল হাসানরা?

এই ফরম্যাটের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা যেহেতু এখন আর তাদের জন্য অমীমাংসিত কোনো রহস্য হয়ে নেই, কাজেই আবারও তেমন কিছুর আশায় দোষের কিছু নেই। তবে সে জন্য আরেকবার নিজেদের বদলানো চাই। যেমনটি তারা বদলেছিল গত ৩১ জুলাই সেন্ট কিটসে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বৃষ্টি আইনে ৭ উইকেটে হারার পর। সেখানেই টিম মিটিংয়ে সবার মধ্যে এই বোধোদয় হয় যে গায়ের জোরে ব্যাটিং বিস্ফোরণ ঘটাতে জানা ক্যারিবীয়দের জবাবটা গায়ের জোরেই দিতে গেলে মুশকিল। এই জায়গাটায় ঠিক পারা যাবে না। পারা যাবে, যদি বুদ্ধি খাটিয়ে সেই জোরকে নিষ্ক্রিয় করা যায়। পরের দুই ম্যাচে তাই করে সিরিজ জিতেছিল সফরকারীরা।

যদিও জেতা ম্যাচগুলোতেও যথেষ্টই আতঙ্ক ছড়িয়েছিলেন আন্দ্রে রাসেল। ফ্লোরিডায় সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটিতেও ২১ বলে এক বাউন্ডারি ও ৬ ছক্কায় তাঁর ৪৭ রানের ইনিংসে তো আরেকটু হলে সাকিবদের জয়ই ঝুলে যাচ্ছিল। সিরিজের প্রথম ম্যাচেও তিনটি করে বাউন্ডারি ও ছক্কায় রাসেলের ৩৫ রানের হার না মানা ইনিংসেই খুলেছিল ক্যারিবীয়দের সহজ জয়ের পথ। দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য জলদিই থামানো গিয়েছিল রাসেল ঝড় (১০ বলে এক বাউন্ডারি ও দুই ছক্কায় ১৭ রান)। সেই রাসেল এবার চোটের কারণে ফিরতি সফরে নেই; কিন্তু ক্যারিবীয় ব্যাটিংয়ের সেই আগুনে ঝাঁজ ঠিকই সিলেটের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দেখা গেছে। যেখানে ফাস্ট বোলার শেল্ডন কট্রেল এবং ওশান টমাসদের আগুনে গোলার জবাব আগুনে ব্যাটিংয়ে দিতে গিয়েই বিপদ ডেকে এনেছিলেন ব্যাটসম্যানরা। যে কারণে লড়াই জমিয়ে তোলার মতো পুঁজি হয়নি এবং ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ক্যারিবীয়রাও ছুটিয়েছে বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের বলগা হরিণ।

আগামীকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের আগে তাই স্বাগতিকদের সেই পুরনো রণকৌশলে ফিরে যাওয়াই জরুরি। যেটির প্রয়োগ গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সিরিজ জয়ের আনন্দ নিয়ে দেশে ফিরিয়েছিল সাকিবদের। ৫ আগস্ট ফ্লোরিডায় সিরিজ জেতার পর অধিনায়ক সাকিব ব্যাখ্যা করেছিলেন ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজ জেতার রহস্যও, ‘‘আমাদের তো সে রকম কোনো পাওয়ার হিটার নেই। আমাদের আন্দ্রে রাসেল কিংবা ডেভিড ওয়ার্নার নেই। তবে আমাদের যেটি আছে, সেটি আমাদের মাথা। এটি কাজে লাগাতে পারলে আমরা অনেক দলের শক্তি কিংবা জোরের চেয়েও বেশি কার্যকর হতে পারি। মাথা ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি না বলেই আমরা ব্যর্থ হই। পুরো টি-টোয়েন্টি সিরিজে সবাইকে একটি কথাই বলেছি, ‘ভাই, ওদের অনেক শক্তি আছে; কিন্তু আমাদের আছে মাথা।’ যার যেটা শক্তির দিক, সে সেটি কাজে লাগিয়েই কিন্তু জেতে।’’

সেবার সেন্ট কিটসে প্রথম ম্যাচ হারার পরই হওয়া টিম মিটিংয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল আত্মবিশ্বাসও। শেষ পর্যন্ত সিরিজ জয়ে সেটিরও যোগ দেখেছিলেন সাকিব, ‘প্রথম টি-টোয়েন্টি হারার পর আমরা সেন্ট কিটসে বসেই একটি মিটিং করেছিলাম। সেখানে সবাই একটি ব্যাপারে একমত হয়েছিলাম যে আমরা টি-টোয়েন্টিতে ওদের চেয়ে ভালো দল। প্রথম ম্যাচের আগে এতটা আত্মবিশ্বাস ছিল না মনে। তবে ওই ম্যাচ হারলেও আমরা বুঝে গিয়েছিলাম যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই দলটার চেয়ে আমরা ভালো দল। ওদের হারানো খুবই সম্ভব। সেই আত্মবিশ্বাসটা এখানে (যুক্তরাষ্ট্রে) এসে কাজে লেগেছে।’ নিশ্চিত যে সিলেটে হারের পর সে রকমই আরেকটি মিটিং করেছেন সাকিবরা। কাল দুপুরে ঢাকায় ফেরার সময়ও হারানো আত্মবিশ্বাস তাই ফিরে আসার কথা। কারণ মাস পাঁচেকের মধ্যে ক্যারিবীয় দলটিও নিশ্চিত আকাশ-পাতাল বদলে গিয়ে আরো শক্তিশালী হয়ে যায়নি। তাদের ব্যাটসম্যানদের গায়ে জোর ছিল, এখনো আছে। গায়ের জোরেই পাল্টা জবাব দিতে যাওয়ার বিপত্তিও টের পাওয়া হয়ে গেছে সিলেটে। কাজেই ফ্লোরিডার দুই টি-টোয়েন্টির মতো ঢাকায়ও শেষ দুই ম্যাচে জিততে হলে ফিরতে হবে এই ফরম্যাটের বাংলাদেশ ব্র্যান্ডেই।

যেটি আপাতত মাথা খাটিয়ে গায়ের জোরকে নিষ্ক্রিয় করার অব্যর্থ ফর্মুলাও।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com