শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৩২ পূর্বাহ্ন
বিনোদন ডেস্কঃ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে এবারের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে দুই বাংলাদেশি অভিনেতার যোগদান চারদিকে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। একদিকে ফেরদৌস রায়গঞ্জে আসনে তৃণমূলের প্রার্থীর প্রচারে অংশ নেন, অপরদিকে গাজী আব্দুন নূর নামে আরেক অভিনেতা কলকাতার দমদম কেন্দ্রে শাসকদলের প্রার্থীর হয়ে প্রচার জমাতে গিয়ে বিরোধীদের রোষানলে পড়েন। ফেরদৌসকে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে অবিলম্বে দেশ ছাড়ার কথা বলা হয়, তাঁর ভিসাও বাতিল হয়।
তবে প্রক্রিয়াগত সমস্যা থেকেও যেটা বড়, তা হলো হিন্দুত্ববাদী বিজেপি এর মধ্যে বড় রাজনৈতিক রসদ খুঁজে পায়। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন প্রধান রাহুল সিনহা, যিনি এবারের নির্বাচন লড়ছেন কলকাতা উত্তর কেন্দ্র থেকে, তিনি প্রবল দাপটের সঙ্গে বিরোধিতা করে বলেন যে বাংলাদেশি অভিনেতাদের এই প্রচারে যোগদান আসলে ‘রাজনৈতিক অনুপ্রবেশ।’
তৃণমূল কংগ্রেসের কে বা কারা এই পরিকল্পনার পিছনে ছিলেন তা জানা নেই, কিন্তু কাজটি যে অত্যন্ত কাঁচা হয়ে গিয়েছে, তা বুঝতে অসুবিধে হয় না।
ফেরদৌস বা নূর-এর উদ্দেশ্য নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। এপার বাংলায় তাঁদের,বিশেষ করে ফেরদৌসের শিল্পীসুলভ জনপ্রিয়তার নিরিখে তাঁরা ভালো মনেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন প্রচারে সামিল হওয়ার জন্যে। কিন্তু বিজেপির রণনেতারা জানেন যে ভোটের রুক্ষ লড়াইয়ের ভূমিতে শিল্পী-শিল্পের সহজ ভাবানুভূতি বেশি কার্যকর নয়, বিশেষ করে এই সময়ে যখন এক আগ্রাসী হিন্দু জাতীয়তাবাদের মোড়কে রাজনীতি পরিবেশিত হচ্ছে।
রাহুল সিনহার ‘রাজনৈতিক অনুপ্রবেশ’ কথাটি খুব তাৎপর্যপূর্ণ।
যেহেতু বিজেপি নাগরিকপঞ্জী নিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে তুমুল লড়াই করছে আর সেই সুবাদে জাতীয় সুরক্ষা একটি বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীরা এই তর্কের কেন্দ্রে রয়েছেন, তাই ওই দেশ থেকে কয়েকজন অভিনেতা ভারতের নির্বাচনে পরোক্ষে জড়িয়ে পড়ার ঘটনাটি বিজেপির এজেন্ডাকেই চাঙ্গা করেছে।