শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বহুদিনের ‘বাম রাজত্বের’ অবসান ঘটিয়ে ‘রাম রাজত্বের’ সূচনা হয়েছে উত্তর পূর্ব ভারতের লালমাটির রাজ্য ত্রিপুরায়। নির্বাচনে হিন্দুত্ববাদী দল হিসেবে পরিচিত ভারতের ক্ষমতাসীন জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যে শুরু হয়েছে তাণ্ডব।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, নির্বাচনের পরপরই সহিংসতা মারাত্মক রূপ নিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ভারতের
কমিউনিস্ট পার্টি-মার্কসবাদী বা সিপিআই-এমের দলীয় কার্যালয় ও কর্মীদের বাড়িঘরে ভাংচুর চালিয়েছে বিজেপি কর্মীরা।
এদিকে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরপর গত রোববার বুলডোজার দিয়ে মার্কসবাদী আন্দোলনের নেতা ভ্লাদিমির লেলিনের একটি মূর্তি ভেঙে ফেলে। ত্রিপুরার বিলোনিয়ায় বিমানবন্দরের কাছে রাস্তার মোড়ে ছিল লেলিনের ওই মূর্তিটি।
স্থানীয় বিজেপি নেতাদের উপস্থিতিতে বুলডোজার এনে মূর্তিটি ভেঙে ফেলা হয় বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। স্থানীয় জনতার বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, মূর্তি ভাঙার তদারকিতে ছিল গেরুয়া পোশাক পরা বিজেপির একদল কর্মী।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক সিপিএম কর্মী সুরজিত কর্মকার জানান, মনে হচ্ছিল যেন ইরাকে সাদ্দাম হোসেনের মূর্তি ভাঙা হচ্ছে। উপস্থিত আরেক কর্মী অনুপম সিংহ জানান, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর যেভাবে বলশেভিক দেশগুলোতে লেলিনের মূর্তি ভাঙা হয়েছিল সেভাবেই আগরতলায় লেলিনের মূর্তি ভাঙা হয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার দক্ষিণ ত্রিপুরার বিলোনিয়া কলেজ মাঠে স্থাপিত আরেকটি মূর্তি ভেঙে ফেলারও অভিযোগ উঠেছে। এনডিটিভি এক খবরে জানিয়েছে, নির্বাচনের দিনও সিপিএম নেতা প্রকাশ কারাত লেলিনের প্রতিকৃতিটিতে ফুল দেন। এর পরপরই বহুদিনের পুরনো মূর্তিটি ভেঙে ফেলে বিজেপির কর্মীরা।
তবে লেলিনের মূর্তি ভাঙার অভিযোগটি পুরোপুরি অস্বীকার করেছে বিজেপি। ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি সুবল ভৌমিক অভিযোগ করেন, তাঁদের কর্মীরা অত্যন্ত সংযত আচরণ করেছে। গণতান্ত্রিক পরিবেশ রক্ষা করার জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করে চলেছেন। কিন্তু সিপিএম কর্মীরা তাদের উপর নানা ভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে।
গত শনিবার ভোটে জিতেই রাজ্যটির গত ২০ বছরের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে আক্রমণ করেছিল বিজেপি। দলটির আসাম রাজ্যের নেতা ও ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির অন্যতম সমন্বয়ক হেমন্ত বিশ্বশর্মা আজ শনিবার বিকেলে টাইমস অব ইন্ডিয়ার কাছে মন্তব্য করেছেন, এটা প্রমাণ হয়েছে, ত্রিপুরার মানুষ আর সিপিআই-এমকে চায় না। মানিক সরকার এখন বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে পারেন।