শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ফারইস্ট লাইফের আত্মসাতকৃত টাকা উদ্ধার ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়ন, অর্থের চাপ মেটাতে কী ভাবছে সরকার আসছে চার দেশের বিশেষজ্ঞ টিম কার্গো ভিলেজের আগুনের ঘটনা তদন্তে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ শিকারে শরণখোলার জেলেরা গাজায় ক্ষুধা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে: ডব্লিউএইচও আগে থেকেই একসাথে বসবাস শুরু করছে যুক্তরাষ্ট্রের যুগলরা সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য আরও একটি লম্বা ছুটি আসছে নওগাঁসহ সারাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বী মঙ্গল কামনা ও ভাই-বোনের বন্ধনের উৎসব ভাইফোঁটা অনুষ্ঠিত কুড়িগ্রাম ফুলবাড়ীতে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আলোচনা সভা ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন

নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়ন, অর্থের চাপ মেটাতে কী ভাবছে সরকার

ভিশন বাংলা ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫

নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়নে আসবে বাড়তি অর্থের চাপ। নতুন কাঠামোতে শুধু যে সরকারের ব্যয় বাড়াবে তা নয়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ব্যয় করার মতো আয়ও আগের তুলনায় বাড়বে।

এতে সরকারের রাজস্ব আদায়ও বাড়বে। সম্প্রতি জাতীয় পে-কমিশনকে এমন মত দিয়েছে অর্থ বিভাগ। এর আগে, নতুন বেতন স্কেল বাস্তবায়ন এবং অর্থনৈতিক চাপ সামাল দেওয়ার বিষয়ে মত চেয়েছিল পে-কমিশন। ওই মতামতে অর্থ বিভাগ আরও বলেছে, ২০১৫ সালের পর বিগত এক দশকে বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়নি চাকরিজীবীদের।

ফলে বর্তমান বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাসের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য হয়ে পড়ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাড়তি অর্থের সংস্থান নিশ্চিত করতে কাজ করছে অর্থ বিভাগ। পে-কমিশন সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য। দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অর্থনীতিতে সংকটকালীন চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর জন্য পে-কমিশন গঠন করেছে সরকার।
যে কারণে অর্থের সংস্থান নিয়ে পে-কমিশনও কিছুটা উদ্বেগে আছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন মূল্যস্ফীতি, জীবনযাত্রার মানসহ সার্বিক বিষয় বিবেচনায় বেতন বাড়ানোর হার শতভাগ হতে পারে। কারণ ২০১৫ সালের পর থেকে আর কোনো কমিশন গঠন করা হয়নি।

যদিও প্রতিবছর চাকরিজীবীদের ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হতো। কিন্তু জীবনযাত্রার মান বেড়ে যাওয়ায় সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে সর্বনিম্ন বেতনধারীরা খুবই কষ্টে আছেন। তবে বেতন দ্বিগুণ হারে বাড়লে সরকারের ব্যয়ও বর্তমানের তুলনায় এ খাতে দ্বিগুণ হবে। এর চাপ এসে পড়বে সার্বিক অর্থনীতিতে।

বিষয়টি স্বীকার করে জাতীয় পে-কমিশনের সভাপতি সাবেক অর্থ সচিব জাকির আহমেদ খান বলেছেন, আমাদের হাতে সীমিত সম্পদ আছে। এর মধ্য থেকে সর্বোচ্চ বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব থাকবে। সম্প্রতি অর্থ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদের মধ্যেই গ্যাজেটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে, পরের রাজনৈতিক সরকার আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে না। আর সেটি বাস্তবায়নের জন্য অর্থের বরাদ্দ দেওয়া হবে চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে।

তিনি আরও বলেন, আগামী বছরের মার্চ বা এপ্রিলে নতুন পে-স্কেল যদি কার্যকর করতে হয়, তাহলে চলতি অর্থবছরের বাজেটেই সেজন্য অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। বাজেট সংশোধন শুরু হবে ডিসেম্বরে, সেখানে নতুন পে-স্কেল কার্যকর করার বিধান যুক্ত করা হবে।

নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ সংস্থানের ব্যাপারে অর্থ বিভাগ দুটি উৎসকে সামনে নিয়ে আসছে। প্রথমটি হচ্ছে চাকরিজীবীদের বাড়িভাড়া এবং দ্বিতীয় হচ্ছে তাদের আয়কর। বর্তমান বেতন কাঠামোতে সর্বনিম্ন স্কেল হচ্ছে ৮ হাজার ২৫০ টাকা। নতুন বেতন কাঠামোতে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল ১৬ হাজার টাকার বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তখন সর্বনিম্ন বেতন স্কেলের সবাই আয় করের আওতায় চলে আসবে। এতদিন তারা আয়করের আওতায় ছিলেন না।

অর্থ বিভাগ মনে করছে, সর্বনিম্ন বেতন সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের আয়কর পাবে সরকার। যা নতুন বেতন কাঠামোর বাড়তি অর্থ সংস্থানে জোগান দেবে।

দ্বিতীয় হচ্ছে চাকরিজীবীদের বাড়িভাড়া। চাকরিজীবীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সরকারি আবাসনে বসবাস করেন। বেতন কাঠামো সমন্বয়ের ফলে সরকারি বাসাবাড়ির ভাড়ার হার বাড়বে। ফলে ওই উৎস থেকেও সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে।

অর্থ বিভাগ মনে করছে, চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর প্রভাবে শুধু ব্যয় বাড়বে তা নয়, বরং রাজস্ব আদায়ের পরিধিও সম্প্রাসরণ করবে। যা সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিতে ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক হবে। অর্থ বিভাগের মতামতে আরও বলা হয়, বর্তমান চতুর্থ বিল্পবের অগ্রগতি, বৈশ্বিক অর্থনীতির পরিবর্তনের মুখোমুখি হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। এছাড়া ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ ঘটবে। এসব প্রেক্ষাপটে সরকারি প্রশাসনে দক্ষ ও মেধাবী মানবসম্পদ আকৃষ্ট করা প্রয়োজন।

এ লক্ষ্যে সরকারি চাকরিজীবীদের একটি প্রতিযোগিতামূলক ও সময়োপযোগী বেতন কাঠামো প্রবর্তন অপরিহার্য, যা জনসেবা কার্যক্রমে পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

জানা গেছে, সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একটি ন্যায়সঙ্গত ও কার্যকরী নতুন বেতনকাঠামোর সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত বেতন কমিশনের কাজ এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে অনলাইনে চারটি প্রশ্নমালায় প্রাপ্ত সর্বসাধারণের মতামত ও সুপারিশ যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনা করা হচ্ছে।বর্তমানে অ্যাসোসিয়েশন বা সমিতি কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের মতামত বা সুপারিশ প্রদান করেছে।

প্রাপ্ত সুপারিশ ও মতামত কমিশন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। কমিশন আশা করছে, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই বেতন কমিশনের সুপারিশ সরকারের কাছে পেশ করা সম্ভব হবে।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2011-2025 VisionBangla24.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com